আবদুল্লাহ তামিম।।
ঐতিহাসিক একটি মসজিদ ‘উকবা মসজিদ’। এই মসজিদ তিউনিশিয়ার কাইরুয়ান নগরীতে অবস্থিত। এ কারণে বিশ্বের কাছে মসজিদটি কাইরুয়ান জামে মসজিদ নামেও বহুল পরিচিত।
৬৭০ সালে আরব সেনানায়ক উকবা ইবনে নাফি কাইরুয়ান নগরীতে এটি নির্মাণ করেন। পরে বহুবার এর সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করা হয়। এর বিস্তৃতি প্রায় ৯ হাজার বর্গমিটার। মসজিদে পাঁচটি গম্বুজ ও নয়টি প্রবেশদ্বার রয়েছে। মসজিদের প্রাচীর নির্মাণ করা হয়েছে ইট ও পাথর দিয়ে। পরবর্তীকালে এটি মাগরেবে অবস্থিত অন্যান্য মসজিদের মডেল হিসেবে গণ্য হয়।
প্রাচীনতম এই মসজিদটি বিশ্বের খ্যাতিমান কয়েকটি মসজিদের মধ্যে অন্যতম। উকবা মসজিদ উত্তর আফ্রিকার চিত্তাকর্ষক ও বৃহৎ স্থাপনার একটি। সমসাময়িক প-িতরা এই মসজিদকে ইসলামিক চিন্তাধারা এবং বিজ্ঞান শিক্ষার কেন্দ্র হিসেবে বিবেচনা করতেন।
উকবা মসজিদ উত্তর আফ্রিকার ইসলামিক চিত্তাকর্ষক ও বড় পুরাকীর্তিগুলোর একটি। এটি তৎকালীন পশ্চিম ইসলামিক দুনিয়ার প্রথম মসজিদ হিসেবে বিবেচিত। পরবর্তীকালে মাগরিবে স্থাপিত অন্যান্য মসজিদের মডেল ছিল এটি। আরবরা মরক্কো, আলজেরিয়া ও তিউনিসিয়াকে বলে মাগরিব, যার অর্থ পশ্চিম বা সূর্যাস্তের দিক।
উকবা মসজিদ কায়রোয়ানের বড় মসজিদ নামেও পরিচিত। সারা বিশ্বে এটি সুন্দর স্থাপত্য ও ইসলামিক শিল্পকর্মের অপূর্ব এক নিদর্শন হিসেবে বিবেচিত। এর অবস্থান তিউনিসিয়ার কায়রোয়ান নগরে।
উকবা মসজিদ প্রতিষ্ঠিত হয় ৬৭০ সালে; প্রায় ১৩৪৯ বছর আগে। তবে এর বর্তমানে টিকে থাকা স্থাপনা নির্মাণ করা হয় নবম শতকে। আঘলাবীয় রাজবংশের সময়ে। এ রাজবংশের রাজত্বকাল ৮০০-৯১২ খ্রিষ্টাব্দ। মসজিদের স্থাপনায় কিছু অংশ পরে যোগ করা হয়েছে।
উমাইয়া যুগে মসজিদটি নির্মাণ করেন জেনারেল উকবা ইবন নাফি। তিনি মুয়াবিয়া রা: ও এজিদের সময় আরব জাহানের একজন সেনাপতি ছিলেন।
উকবা মসজিদের বহিঃপরিসীমা প্রায় ৪১৫ মিটার। এর অভ্যন্তরে রয়েছে মসিজদের মূল স্থাপনা বা নামাজ আদায়ের স্থান। এ মসজিদের রয়েছে একটি বিশাল আঙিনা, যা মার্বেল পাথরে পাকা করা। মসজিদের মিনার খুবই আকর্ষণীয় এবং বিশাল।
উকবা মসজিদের নির্মাণশৈলীতে দুর্গসদৃশ মজবুত দেয়াল লক্ষণীয়। পাথরনির্মিত এ দেয়াল ১ দশমিক ৯ মিটার পুরু। এর চার পাশেই রয়েছে বাঁধ বা দেয়াল। এগুলোতে বুরুজ রয়েছে। সেই যুগের বিবেচনায় প্রতিরক্ষার কারণেই হয়তো এমন ব্যবস্থা।
-এটি