আওয়ার ইসলাম: চলমান এসএসসির গণিত পরীক্ষায় ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে না দেয়ার প্রতিবাদে শিবচরে দুই কেন্দ্রে বিক্ষোভ ও ভাংচুর করেছে বিক্ষুব্ধ পরীক্ষার্থীরা। এ সময় প্রায় ১০ জন আহত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দুই কেন্দ্রে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত এসএসসি গণিত পরীক্ষায় ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে না দেয়ায় আজ বুধবার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি পরীক্ষা শেষে পরীক্ষার্থীরা প্রথমে শিবচর নন্দ কুমার মডেল ইনস্টিটিউশন কেন্দ্রে বিক্ষোভ ও ভাঙচুর করে।
এ খবর দ্রুত শেখ ফজিলাতুন্নেছা সরকারি পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পৌঁছালে সেখানেও ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধ পরীক্ষার্থীরা। দুই কেন্দ্রের ভবনের দরজা, জানালা, চেয়ার-টেবিল ও আসবাবপত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ সময় বিদ্যালয় বিভিন্ন কক্ষের সিসি ক্যামেরা ভেঙে ফেলে বিক্ষুব্ধ পরীক্ষার্থীরা। পরে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
পরীক্ষার্থীরা জানায়, এসএসসি পরীক্ষায় সাধারণ সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর পরীক্ষায় ব্যবহারের নিয়ম থাকলেও মঙ্গলবার গণিত পরীক্ষায় শিবচর নন্দকুমার কেন্দ্রে ক্যালকুলেটর নিয়ে প্রবেশ করতে বাধা দেয়া হয়। যে কারণে আমাদের গণিত পরীক্ষা খারাপ হয়। অপর দিকে শেখ ফজিলাতুন্নেছা সরকারি পাইলট বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রের বেশ কয়েকটি কক্ষ থেকে কেন্দ্র সচিবের নির্দেশে পরীক্ষার্থীদের ক্যালকুলেটর নিয়ে নেয়া হয়।
অভিভাবকরা জানান, শেখ ফজিলাতুন্নেছা বিদ্যালয় ও নন্দকুমার ইনস্টিটিউশনের দুই প্রধান শিক্ষক প্রায় প্রতিবছরই অবৈধ সুযোগ নিয়ে তাদের পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষায় ভালো ফলাফল দেখানোর জন্য অসুস্থ প্রতিযোগিতা করেন। শিক্ষকদের পারস্পারিক দাম্ভিকতার প্রতিযোগিতার জাঁতাকলে পরীক্ষার্থীরা কেন পিষ্ট হবে? ওই দুই শিক্ষকের স্নায়ুযুদ্ধের কারণে পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষার হলে ক্যালকুলেটর ব্যাবহার করতে না পেরে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্যালকুলেটর ছাড়া পরীক্ষার হলে ঢুকে অনেক পরীক্ষার্থী কান্নাকাটি করেছে।
এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র সচিব মুহা. রফিকুল ইসলাম জানান, গতকাল (মঙ্গলবার) নন্দকুমার ইনস্টিটিউশন কেন্দ্রে ক্যালকুলেটর নিয়ে প্রবেশে বাধা দেয়া হয়। এরপর প্রতিবাদে আজ বুধবার প্রথম নন্দকুমার কেন্দ্রে বিক্ষুব্ধ পরীক্ষার্থীরা বিক্ষোভ ও ভাংচুর চালায়। পরে দ্রুত বিক্ষুব্ধ পরীক্ষার্থীরা শেখ ফজিলাতুন্নেছা বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রও ভাংচুর চালায়। আজ শেখ ফজিলাতুন্নেছা পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ে ১ হাজার ১ শত দুই জন পরীক্ষার্থী ও নন্দকুমার কেন্দ্রে ৯ শত ৮০ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়।
মাদারীপুরের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার জানান, বিদ্যালয়ে হামলার ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় শিবচর উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, মেয়রসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের নিয়ে সমাধানের চেষ্টা চলছে।
-এএ