আওয়ার ইসলাম: রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষকে পুকুরের পানিতে ফেলে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় চার শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারসহ ১৬ ছাত্রের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে তাদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করাসহ ১৬ ছাত্রের বিরুদ্ধেই নেয়া হচ্ছে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা। দোষীসাব্যস্ত এই ১৬ জনই রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট শাখার ছাত্রলীগের নেতাকর্মী।
শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী ফরিদ উদ্দিন সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। গত ৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাডেমিক কাম প্রশাসনিক পরিষদের সভায় তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব মুস্তাফিজুর রহমান তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এই কমিটির দাখিল করা প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে ওই সভায় দোষীসাব্যস্ত হওয়া শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণসহ বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এছাড়া ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে রাজশাহী পলিটেকনিকে রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তও হয়েছে। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ও পুলিশ প্রশাসনের সহায়তা চেয়েছে ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ। ছাত্রলীগের টর্চারসেল হিসেবে পরিচিত ইনস্টিটিউটের ১১১৯ নম্বর কক্ষটি ভেঙে ফেলে সেখানে কমনরুম বাড়ানোরও সুপারিশ করা হয়েছে। এরই মধ্যে সিদ্ধান্তগুলো দ্রুত কার্যকর করার জন্য বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ডে চিঠি দিয়েছে রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, চার শিক্ষার্থীকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার, পাঁচ শিক্ষার্থীর মূল সনদ তিন বছর আটকে রাখার এবং সাত শিক্ষার্থীকে টিসি (ট্রান্সফার সার্টিফিকেট) দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এরই মধ্যে এ সিদ্ধান্ত কার্যকরের জন্য কারিগরি শিক্ষা বোর্ডসহ সরকারের উচ্চ পর্যায়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
ছাত্রত্ব বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে- ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন ওরফে সৌরভ (কম্পিউটার বিভাগ ৮ম পর্ব), রায়হানুল ইসলাম (ইলেকট্র মেডিক্যাল বিভাগ ৭ম পর্ব), মুরাদ হোসেন (ইলেকট্রনিক্স বিভাগ ৫ম পর্ব) ও সাজিব হোসেন (মেকানিক্যাল বিভাগ ৩য় পর্ব)।
এ ঘটনায় সরাসরি জড়িতের প্রমাণ মেলায় প্রতিষ্ঠান থেকে পাস করা পাঁচ শিক্ষার্থীর মূল সনদসহ অন্য কাগজপত্র আগামী তিন বছরের জন্য স্থগিত করার সুপারিশ করা হয়েছে। তারা হলেন- ইনস্টিটিউটের ২০১৫-২০১৬ সেশনের ইলেকট্রিক্যাল বিভাগের ছাত্র কৌশিক জামান ওরফে বনি, ইলেকট্রো-মেডিক্যাল বিভাগের সালমান রহমান ওরফে টনি, পাওয়ার বিভাগের সাব্বির অহম্মেদ, মেকাট্রনিক্স বিভাগের হাসিবুল হাসান ও কম্পিউটার বিভাগের মারুফ হোসেন।
তদন্ত প্রতিবেদনে ঘটনার সঙ্গে পরোক্ষভাবে জড়িত থাকায় সাত শিক্ষার্থীকে বদলির সুপারিশ করা হয়েছে। তারা হলেন- ২০১৫-২০১৬ সেশনের পাওয়ার বিভাগের ৬ষ্ঠ পর্বের (অকৃতকার্য) নাঈম ইসলাম, ২০১৬-২০১৭ সেশনের ইলেক্ট্রনিক্স বিভাগের ৭ম পর্বের প্লাবন কুমার কুন্ডু, মেকাট্রনিক্স ৭ম পর্বের মেহেদী মাহমুদ, মেকানিক্যাল বিভাগের ৭ম পর্বের মেহেদি হাসান, ২০১৭-১৮ সেশনের ইলেকট্রনিক্স বিভাগের ৫ম পর্বের ওমর আজিজ, ২০১৮-২০১৯ সেশনের ৩য় পর্বের কম্পিউটার বিভাগের মাহবুবুর রহমান ও পাওয়ার ৩য় পর্বের মাসুদ রানা মীম।
-এএ