সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
ঢাকা থেকে ভাঙ্গা হয়ে খুলনায় গেলো পরীক্ষামূলক ট্রেন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবেন প্রধান উপদেষ্টা: প্রেস উইং ধর্মীয় মূল্যবোধ ও সাম্যের ভিত্তিতে সংবিধান রচনার আহ্বান নেপালে ফের কুরআন প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে সৌদি আগামীকাল সংবিধান সংস্কার কমিশনে প্রস্তাবনা পেশ করবে ইসলামী আন্দোলন ‘আল্লামা আতহার আলী রহ. জীবন, কর্ম, অবদান’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন আগামীকাল হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজিরে মক্কী রহ. : কে এই মহান ব্যক্তি হাজিদের স্বার্থ রক্ষায় সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ : ধর্ম উপদেষ্টা মহানবীকে সা. নিয়ে কটূক্তি করলে সংবিধানে শাস্তির বিধান রাখার প্রস্তাব পার্থের নতুন নির্বাচন কমিশন প্রত্যাখ্যান জাতীয় নাগরিক কমিটির

আল্লাহ আল্লাহ ধ্বনিতে মুখরিত হয় যাত্রাবাড়ি মাদরাসা প্রাঙ্গণ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

রকিব মুহাম্মদ ।।

আত্মশুদ্ধি, নিজ নিজ গুনাহ মাফ, সব বালা-মুসিবত থেকে হেফাজত ও রহমত প্রার্থনায় আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সন্তুষ্টি লাভের আশায় হাজারো মুসল্লির আকুতিতে বিশেষ মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হয়েছে মজলিসে দাওয়াতুল হকের কেন্দ্রীয় ইজতেমা।

শনিবার রাত ১০ টার দিকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়া মাদরাসার মাঠে অনুষ্ঠিত ২৫ তম কেন্দ্রীয় ইজতেমা সকালে শুরু হয়ে বাদ এশা মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হয়। প্রায় আধঘণ্টা সময় মোনাজাত চলে।

ইজতেমায় বিশেষ বয়ান ও মোনাজাত পরিচালনা করেন মজলিসে দাওয়াতুল হক বাংলাদেশের আমির, গুলশান সেন্ট্রাল মসজিদের খতিব ও যাত্রাবাড়ী মাদরাসার মুহতামিম মুহিউস সুন্নাহ আল্লামা মাহমুদুল হাসান।

বিশেষ এ মোনাজাতে দেশের কল্যাণ, মুসলিম উম্মাহর সুদৃঢ় ঐক্য, আখেরাত ও দুনিয়ার শান্তি কামনা করা হয়। এ সময় দুই হাত তুলে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দরবারে ফরিয়াদ জানায় হাজার হাজার মুসল্লি। আল্লাহর কাছে আকুতি-মিনতি করে চোঁখের পানিতে বুক ভাসান ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা।

আমিন, আল্লাহুম্মা আমিন ধ্বনিতে রাতের আকাশ-বাতাস মুখরিত করে মহামহিম ও দয়াময় আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সন্তুষ্টি লাভের আশায় লাখ লাখ মুসল্লি আকুতি জানান।

মোনাজাতের আগেই যাত্রাবাড়ি মাদরাসা ময়দান কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। পরে মুসল্লিরা ময়দানের আশপাশের অলিগলি, রাস্তা, পার্শ্ববর্তী বাসাবাড়ি ও সড়কে অবস্থান নিয়ে মোনাজাতে অংশ নেন।

দেশের শীর্ষস্থানীয় উলামায়ে কেরাম, বাংলাদেশের দেশবরেণ্য হারদুয়ী হজরতের খুলাফাগণ, বিভিন্ন জেলার আমীর, নায়েবে আমীর, কর্মীসহ দেশের আলেম-ওলামা, ছাত্র শিক্ষকরাসহ বিভিন্ন বয়সের বিভিন্ন পেশার মানুষ মোনাজাতে অংশ নেন।

মোনাজাতে আগে বিশেষ বয়ানে আল্লামা মাহমুদুল হাসান বলেন, আজকাল ফেসবুক সারাদেশের মানুষকে ধংস করে দিয়েছে। এমনকি মাদরাসা ছাত্র, ইমাম-খতিব, নারী-পুরুষ সকলকে ধংস করে দিচ্ছে। আল্লাহ আমাদের সবাইকে এ ধংসাত্মক মরণব্যাধী ফেসবুক থেকে হেফাজত করুন। শয়তান এটার মাধ্যমে আমাদেরকে নেক সুরুতে ধোকা দিচ্ছে।

তিনি বলেন, যদি তোমরা আল্লাহকে সাহয্য কর আল্লাহ তোমাকে সাহয্য করবেন। তোমাদের পাকে মজবুত করে দিবেন। তুমি যদি সমাজপতি হও, রাষ্ট্রপতি হও যেই হও, তুমি দীনকে সাহায্য করলে তোমাকে আল্লাহ সাহায্য করবেন। দীনকে সাহায্য করার অর্থ হলো আল্লাহকে সাহায্য করা।

এর আগে বাদ মাগরিব ইজতেমায় অংশ নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি বলেন, দাওয়াতুল হকের ইজতেমায় অংশ নিয়ে আমার জীবনের নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে। এত আলেমকে একসঙ্গে পাওয়া যায় না।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, শান্তি ও মানবতার দূত হজরত মুহাম্মদ সা.। মহানবীর সুন্নতকে মানলে সমাজে শান্তি শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। প্রকৃত নবীপ্রেমীরা কখনও জঙ্গিবাদ সন্ত্রাস করতে পারে না। কওমি মাদরাসায় মহানবীর সঠিক আদর্শ শিক্ষা দেওয়া হয়। কওমি মাদরাসা থেকে কখনও জঙ্গি তৈরি হয় না। বরং বিশেষ একটি মহল যখনই দেশে জঙ্গি উত্থানের অপচেষ্টা করেছে আলেমদের সঙ্গে নিয়ে আমরা তা প্রতিহত করতে সক্ষম হয়েছি।

শনিবার বাদ ফজর আল্লামা মাহমুদুল হাসানের বয়ানের মাধ্যমে শুরু হয়েছিল এ ইজতেমা। সকাল থেকে শুরু হওয়া ইজতেমা পরিচালনা করেন শিবচর জামিয়াতুস সুন্নাহের প্রিন্সিপাল মাওলানা নেয়ামতুল্লাহ আল ফরিদী।

দিনব্যাপী মজলিসে দাওয়াতুল হকের তত্বাবধায়নে মহানবী সা. এর জীবন, আদর্শ ও সুন্নত চর্চার পাঠ দেওয়া হয় মুসল্লিদের। আজান, ইকামত, নামাজ, ওজু, জানাজাসহ সুন্নতের ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। আমলি মশক, দেশ-বিদেশের আলেমদের গুরুত্বপূর্ণ বয়ান, জিকির এবং দোয়া-মোনাজাতসহ নানা কর্মসূচি পালন করা হয়।

ইজতেমায় বক্তব্য রাখেন, পীরে কামেল প্রফেসর হামিদুর রহমান, মুফতি মনসুরুল হক, বসুন্ধরা ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক মাওলানা আরশাদ রাহমানি, মুফতি নূরুল আমিন খুলনা, প্রিন্সিপাল মিজানুর রহমান চৌধুরী, মুফতি ওবায়দুল্লাহ, মুফতি জাফর আহমা, শায়খ যাকারিয়া ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক মুফতি মিযানুর রহমান সাঈদ, মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী, মাওলানা হাবিবুর রহমান মিছবাহ প্রমুখ।

মজলিসে দাওয়াতুল হক মূলত হাকিমুল উম্মত শাহ আশরাফ আলী থানভি রহ.এর সুন্নত প্রতিষ্ঠার একটি বিপ্লবী আন্দোলন। পাক-ভারত উপমহাদেশসহ বিশ্বের নানা প্রান্তে দাওয়াতুল হকের কার্যক্রম চলছে। বর্তমানে দাওয়াতুল হককে হক্কানি ওলামায়ে কেরামের সর্ববৃহৎ দাওয়াতি কাফেলা হিসেবে গণ্য করা হয়।

আরএম/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ