আওয়ার ইসলাম: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্বদ্যালয়ের (জাবি) অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলামের অপসারণ দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো সর্বাত্মক ধর্মঘট কর্মসূচী পালন করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল প্রশাসনিক কার্যক্রমসহ ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) সকাল ৮টা থেকে নতুন ও পুরাতন উভয় প্রশাসনিক ভবন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন একাডেমিক ভবনের প্রধান ফটক আটকে রেখে অবস্থান নেয় ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
এ সময় অবরোধের কারণে উপাচার্যসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কেউই অফিসে প্রবেশ করতে পারেননি। অধিকাংশ বিভাগেই অনুষ্ঠিত হয়নি পূর্বনির্ধারিত ক্লাস পরীক্ষা।
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মহিবুর রউফ শৈবালের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, জাবি সংসদের সভাপতি নজির আমিন চৌধুরী জয় ও অপর এক নারী শিক্ষার্থীকে মারধর ও লাঞ্ছনার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় পূর্বঘোষিত কর্মসূচী ‘সর্বাত্মক ধর্মঘট’ পালনকালে পুরাতন কলা ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
শিক্ষক কর্তৃক শিক্ষার্থীকে মারধরের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি পুরাতন কলা ভবন থেকে শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, প্রশাসনিক ভবন ও অনুষদ ভবন প্রদক্ষিণ করে পুরাতন রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে এসে শেষ হয়।
জানা যায়, পুরাতন কলা ভবনের সামনে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় সহকারী প্রক্টর মহিবুর রউফ শৈবালের সঙ্গে। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তিনি হাত ধরে টান দিয়ে নজির আমিন জয়কে মাটিতে ফেলে দেন। এতে নজির আমিন জয় হাতে আঘাতপ্রাপ্ত হন এবং পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারে চিকিৎসা গ্রহণ করেন।
আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, মহিবুর রউফ শৈবাল যে কাজটি করেছেন তা পুরোপুরি অশিক্ষকসুলভ আচরণ। যৌক্তিক দাবি নিয়ে আন্দোলন করা একজন শিক্ষার্থীর যেমন অধিকার রয়েছে তেমনি একজন শিক্ষকের ক্লাস-পরীক্ষা নেয়ার অধিকার রয়েছে। তাই বলে কোন শিক্ষার্থীকে তিনি টানাহেঁচড়া করতে পারেন না।
এ বিষয়ে সহকারী প্রক্টর মহিবুর রউফ শৈবাল বলেন, আমি তাদের (আন্দোলনকারীদের) ভবনের প্রধান ফটক খুলে দেয়ার জন্য বলি। তাদের সঙ্গে কথা বলার এক পর্যায়ে এক আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী আমার তলপেটে লাথি মারে। একাধিক লাথির কারণে আমি প্রচণ্ডভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছি।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) থেকে উপাচার্যের অপসারণ দাবিতে অবরোধ কর্মসূচি পালন করে আসছেন আন্দোলনকারীরা। গত সোমবার (২৮ অক্টোবর) থেকে অবরোধ কর্মসূচি ছাড়াও ধর্মঘটের ডাক দেন তারা। ফলে কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম।
-এএ