আওয়ার ইসলাম: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) লোক প্রশাসন বিভাগের সভাপতিসহ তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে গবেষণায় জালিয়াতি করে লেখা চুরির অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগটি করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগেরই আরেক শিক্ষক।
লোক প্রশাসন বিভাগের সভাপতি ড. জেবউননেছা, একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হালিমা হক ও মনির উদ্দিন শিকদারের বিভিন্ন লেখায় জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে অভিযোগ করেছেন ওই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ছায়েদুর রহমান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম বরাবরর ইতিমধ্যেই ছায়েদুর রহমান লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগে বলা হয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগ ও সমাজ বিজ্ঞান অনুষদ থেকে প্রকাশিত দুটি জার্নাল Jahangirnagar Journal of Administrative Studies এবং The Jahangirnagar Review এর বিভিন্ন সংখ্যা টার্নিটিন সফটওয়্যার দ্বারা পরীক্ষার পর ‘Jahangirnagar Journal of Administrative Studies’ এর চতুর্থ সংখ্যাতে ড. জেবউননেছার দুটি লেখায় যথাক্রমে ৯৯ ও ৯৮ শতাংশ, পঞ্চম সংখ্যার দুটি লেখায় যথাক্রমে ৫৯ ও ৫১ শতাংশ, সপ্তম সংখ্যায় ২৩ শতাংশ, অষ্টম সংখ্যায় ৪৮ শতাংশ, নবম সংখ্যায় ৩৫% এবং দশম সংখ্যায় ৫৮% চৌর্যবৃত্তির প্রমাণ পাওয়া যায়।
অন্যদিকে ‘The Jahangirnagar Review’ এর দুটি সংখ্যায় যথাক্রমে ৩৩ ও ৬১ শতাংশ চৌর্যবৃত্তি পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ড. জেবউননেছা তার এমফিল থিসিসের শতকরা ৮৫ ভাগই টিআইবির বিভিন্ন রিপোর্ট এবং বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে নেন বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়।
ড. জেবউননেছা তার লেখাগুলোতে সাইটেসনের (তথ্যসূত্র স্বীকার) কোনো নিয়মকানুন অনুসরণ করেননি এবং কোথাও কোথাও ইংরেজি বই থেকে কোনো প্রকার রেফারেন্স ছাড়াই কিছুকিছু বিষয় অনুবাদ করে বাংলায় লিখেছেন।
অন্যদিকে, সহকারী অধ্যাপক হালিমা হক ও মনির উদ্দিন শিকদারের লেখায়ও যথাক্রমে ৫২% ও ৬৪% চৌর্যবৃত্তির প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
জানা যায়, গবেষণাপত্র প্রকাশের ক্ষেত্রে আরেকজন গবেষকের লেখা ধার করার বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনো নিয়ম না থাকলেও আর্ন্তজাতিক জার্নালগুলো সর্বোচ্চ শতকরা ২০ভাগ লেখা ধার করার ক্ষেত্রে অনুমোদন দেয়। কিন্তু অভিযুক্ত শিক্ষকরা অনেক বেশি লেখা ধার করেছেন এবং অনেক ক্ষেত্রে কোনো ধরনের রেফারেন্সও উল্লেখ করেননি।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ড. জেবউননেছা বলেন, ‘এর আগে অভিযোগকারী শিক্ষকের নামে আরেকজন শিক্ষক গবেষণা জালিয়াতির অভিযোগ করেন। সেই ঘটনার কারণে আমার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ দেওয়া হয়েছে, যা মানহানিকর।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি তদন্ত করা হবে।’
আরএম/