আওয়ার ইসলাম: বায়ু দূষণের কারণে প্রতিনিয়ত নিঃশ্বাসের সঙ্গে মানব শরীরে ঢুকছে বিষ। যার ফলে মানবদেহে দেখা দিচ্ছে বিভিন্ন ধরনের রোগ জীবাণু। মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ফুসফুসসহ শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ। তবে এবার এক গবেষণায় ওঠে এসেছে, শুধু শরীর নয় বায়ু দূষণের ফলে মনেও ছড়িয়ে যায় বিষ; এতে সৃষ্টি হয় বিষণ্নতার।
সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সমীক্ষার ফলাফলে দেখা গেছে, বায়ু দূষণের সঙ্গে মানসিক সমস্যার প্রত্যক্ষ সম্পর্ক রয়েছে। ইংরেজিতে যাকে বলে ‘নিউরোসাইকিয়াট্রিক ডিসঅর্ডার’। বিষয়টি নিয়ে একটি প্রতিবেদনও প্রকাশ করা হয় ‘পিএলওএস বায়োলজি’ নামের এক জার্নালে।
বায়ু দূষণের সঙ্গে মানুষের মানসিক সমস্যার সম্পর্ক রয়েছে উল্লেখ করে ওই প্রতিবেদনের লেখক আতিফ খান জানান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ডেনমার্কের যে সব জায়গায় বায়ু সবচেয়ে বেশি দূষিত, সে সব অঞ্চলে বসবাসকারীদের মানসিক সমস্যা তুলনামূলকভাবে বেশি। গবেষণার মধ্য দিয়ে ওঠে এসেছে এই তথ্য। বিশেষত যাদের শৈশব ওই দূষিত অঞ্চলগুলোতে কেটেছে, তারাই সবচেয়ে বেশি মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত।
তিনি আরও জানান, নিউরোসাইকিয়াট্রিক ডিসঅর্ডার রোগ বা সমস্যার বীজ বাতাসের ধূলিকণার মধ্যে লুকিয়ে থাকে। মানুষের মন কতটা সুস্থ বা অসুস্থ থাকবে তা অনেকটা নির্ভর করে বাতাসের গুণগত মান কিংবা দূষণের ওপর। গবেষকরা দীর্ঘ ১১ বছর ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ডেনমার্কের প্রায় দেড় কোটি মানুষের ওপর সমীক্ষা চালিয়ে এই সীদ্ধান্তে পৌঁছেছেন।
সেই সমীক্ষায় আরও দেখানো হয়েছে যে, বাতাসের গুণগত মান খারাপ হওয়ায় বাইপোলার ডিসঅর্ডারের ঝুঁকি বেড়েছে ২৭ শতাংশ। অবসাদের ঝুঁকি বেড়েছে ৬ শতাংশ। আর এর সবচেয়ে বেশি খারাপ প্রভাব পড়েছে শিশুদের মনে। বায়ু দূষণের ফলে শিশুদের শৈশবে অবসাদ, স্কিৎজোফ্রেনিয়া এবং পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা যথাক্রমে ৫০ শতাংশ, ১৪৮ শতাংশ এবং ১৬২ শতাংশ বেড়ে গেছে বলে জানা যায় ওই সমীক্ষায়।
-ওএএফ