মাওলানা উমর পালনপুরী রহ. ।।
আমাদের এই তাবলিগ জামাত এই যে বিভিন্ন দলে দলে পৃথিবীময় চষে বেড়াচ্ছে, এর একমাত্র উদ্দেশ্য হলো আমরা যেন আল্লাহ ও রাসুলুল্লাহ সা. বর্ণিত অঙ্গীকারগুলোর প্রতি পূর্ণ একিন রাখতে পারি। আমরা যেন নিজেদের সমগ্র মাখলুখ থেকে আলাদা করে মহান মালিক আল্লাহ তায়ালার সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে পারি।
হযরত সাবায়ে কেরামদের ভেতর আল্লাহ ও রাসুল সা. এর একিন ছিলো পূর্ণমাত্রায়। বিখ্যাত সাহাবী হযরত আবু দারদা রা. এর প্রতি লক্ষ্য করুন। তিনি একবার মসজিদে বসে ছিলেন। জনৈক ব্যক্তি এসে সংবাদ দিল, হজরত! মহল্লায় আগুন লেগেছে। আপনার ঘরও জ্বলে ছাই হয়ে গেছে!
হযরত আবু দারদা রা. প্রচণ্ড শক্তির সাথে বললেন, না! আমার ঘর জ্বলেনি। দ্বিতীয় আরেকজন এসে একই সংবাদ দিলেন। তিনি পূর্বের মতোই পূর্ণ শক্তির সাথে অস্বীকার করলেন। এভাবে কয়েকজন এসে যখন একই সংবাদ শুনালেন তখনও তিনি পূর্ণ অবিচল অবস্থায় মসজিদে স্থির বসে আছেন।
কিছুক্ষণ পরে এক ব্যক্তি এসে জানালো, মহল্লায় আগুনে লেগেছে ঠিকই, সকল বাড়ি-ঘরও পুড়েছে তবে আপনার ঘর সম্পূর্ণ অক্ষত অবস্থায় রয়েছে।
লোকজন তখন হজরত আবু দারদা রা. কে প্রশ্ন করলেন, আচ্ছা এই ভয়ঙ্কর সংবাদ শুনার পরও আপনি এতটুকু বিচলিত হলেন না কেন?
তিনি বলবেন, রাসুল সা. একটি দোয়া শিখিয়েছিলেন এবং সেই সাথে এও বলেছিলেন, যদি কোনো ব্যক্তি সকালে এই দোয়াটি পাঠ করে তাহলে বিকাল পর্যন্ত সব ধরনের আকস্মিক দূর্ঘটনা থেকে নিরাপদ থাকবে। আর যদি বিকেলে পাঠ করে তাহলে সকাল পর্যন্ত নিরাপদ থাকবে।
আমি আজ সকালে এই দোয়াটি পড়েছিলাম। তারপর তোমরা এসে বললে, আমার ঘরে আগুন লেগেছে অথচ আমার নবীর অঙ্গীকার বলছে, আমার ঘরে আগুন লাগেনি। আমি তোমাদের কথা বিশ্বাস করবো, নাকি আমার নবীর কথা?
সম্মানিত বন্ধুরা, আমাদের প্রথম কাজ হলো আল্লাহ তায়ালা ও হজরত রাসুল সা. এর প্রতিটি বাণী ও নির্দেশের প্রতি পূর্ণ একিন রাখা। এই একিনের দ্বারাই ঈমান শক্তিশালী এবং মজবুত হয়।
[‘তাবলীগ আমার জীবন’ গ্রন্থ থেকে সংগৃহীত ]
আরএম/