শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫ ।। ৫ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ২০ শাওয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
মুফতি ফয়জুল করীমকে মেয়র ঘোষণার দাবি বরিশালবাসীর এবার খুলনায় ‘মার্চ ফর গাজা’ শ্রমিক মজলিসের সভাপতি আবদুল করিম, সাধারণ সম্পাদক এরশাদ ‘নষ্ট রাজনৈতিক সংস্কৃতি দিয়ে দেশ ও মানুষের কল্যাণ সম্ভব নয়’ ৫ বছর আগের এই দিনে কী হয়েছিল মাওলানা আনসারীর জানাজায়? হজযাত্রীর জন্য চালু হচ্ছে হজ ম্যানেজমেন্ট সেন্টার, থাকবে অ্যাপ কুয়েট শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি মেনে নিন- ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ  আইন করে ভারতে মুসলিমদের অধিকার হরণ করা যাবে না: জমিয়ত করাচি-চট্টগ্রাম রুটে নৌযান চলাচলকে স্বাগত জানিয়েছে দুই পক্ষ: পাকিস্তান ২৬ এপ্রিল জমিয়তের কাউন্সিল, প্রাধান্য পেতে পারে তরুণ নেতৃত্ব

ত্যাগ চাই মর্সিয়া ক্রন্দন চাহি না...

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মোল্লা মোহাম্মদ


প্রতি বছর ১০ মহররম আশুরা পালিত হয়ে থাকে। আর এদিনেই ইরাকের তৎকালীন রাজধানী কুফার ২৫ মাইল উত্তরে কারবালা প্রান্তরে হজরত ইমাম হোসাইন রা. নরপিশাচ সিমারের হাতে শাহাদাতবরণ করেন।

হজরত ইমাম হোসাইন রা. শাহাদাতবরণের হৃদয়বিদারক এই ঘটনার পাশাপাশি ইসলামের ইতিহাসে ১০ মহররমের অসংখ্য তাৎপর্যময় ঘটনা উজ্জ্বল হয়ে আছে। সর্বোপরি এই পৃথিবীর মহাপ্রলয় বা কিয়ামত ১০ মহররমে ঘটবে বলে বিভিন্ন গ্রন্থে উল্লেখ রয়েছে।

হজরত ইমাম হোসাইন রা. শাহাদাদের ঘটনা মুসলিমদের জন্য গৌরবের। শুধু মহান বীর হোসাইনের রা. শাহাদাতই নয়, দীনের জন্য জীবন বাজি রাখা প্রতিটি মুসলিমদের জন্য আমরা গর্ববোধ করি। শহীদদের জন্য কান্না করি না, দোয়া করি। রহমত ও শান্তির দোয়া করি।

কিন্তু উম্মতের জন্য বড়ই আফসোসের একটি বিষয় হলো আমরা হোসাইন রা.-এর সেই গৌরবজনক অধ্যায় ভুলে গেছে। ত্যাগ, নিষ্ঠা ও কুরবানির শিক্ষা হারিয়ে নানা রকম শরিয়ত গর্হিত রসম-রেওয়াজে জড়িয়ে পড়েছি।আমরা মূলত দীনের প্রকৃত শিক্ষা থেকে বহু দূরে অবস্থান করছি।

আশুরাকে কেন্দ্র করে কিছু কিছু মানুষ এই দিন সম্পর্কে শিরকি কিছু আকিদা বিশ্বাস করেন। হযরত হুসাইন ও হযরত হাসান রা. শাহাদাতকে কেন্দ্র করে তারা অন্তরে ভ্রান্ত আকিদা পোষণ করেন।

কেউ এ মাস শুরু হওয়ার পর থেকে কোন তরকারি খান না। জুতা পরেন না। গীতি গান। ঢোল-তবলা বাজান। কেউ কেউ বুকে পিঠে ধারালো অশ্র দিয়ে আঘাত করেন। শরীর থেকে রক্ত ঝরান। এ সমস্ত করে কেউ মারা গেলে তাকে শহিদ ভাবেন। অথচ তা আত্মহত্যার সমান।

এদিকে, তাজিয়া মিছিল, শোকগাঁথা পাঠ, শোক পালন, মিছিল ও র‌্যালি বের করা, শোক প্রকাশার্থে শরীরকে রক্তাক্ত সহ অনেক শরিয়তসিদ্ধ নয় এমন কাজ করা হয়। এটা শুধু বাংলাদেশেরই চিত্র নয়। পাকিস্তান, আফগানিস্থান, ইরাক, ইরান, ভারত , মরক্কোসহ বিশ্বের অনেক দেশেই এ ভ্রান্ত আকিদা ছড়িয়ে পড়েছে।

আমাদের দেশে প্রতি বছর আশুরার আগে তাজিয়া শোক মিছিলে পাইক (‘হায় হোসেন’ মাতম তুলে যারা দা, ছোরা, কাঁচি, বর্শা, বল্লম, তরবারি নিয়ে নিজেদের শরীর রক্তাক্ত করেন) সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন পুলিশ প্রসাশন। তবুও এক দল অবুঝ মুসলিম এদিন বেশ আড়ম্বরের সঙ্গে আশুরা উৎসব পালন করে থাকে।

আমি মনে করি, উম্মতের বড় বড় আলেম ও রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে শরিয়ত বহির্ভূত এসব কাজ বন্ধে সামাজিকভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।  সকলকে এ কথা বোঝাতে হবে, মাতম ও তাজিয়া মিছিলের মাধ্যমে কোন পূণ্য হাসিল হয় না।

কাজী নজরুল বলেছেন,

ফিরে এলো আজ মুহররম মাহিনা
ত্যাগ চাই মর্সিয়া ক্রন্দন চাহি না।

কবি নজরুল ইসলাম এখানে মর্সিয়া গান ছেড়ে ত্যাগ স্বীকারের জন্য বলেন। এই দিনটি আমাদের ত্যাগ শিক্ষা দেয়। কিন্তু আমরা এই দিনে উৎসবে মেতে উঠি। গীত গাই। নিজের গায়ে আঘাত করি। যা অবশ্যই বর্জনীয়।

লেখক: প্রাবন্ধিক ও সাংবাদিক

আরএম/


সম্পর্কিত খবর



সর্বশেষ সংবাদ