আওয়ার ইসলাম: ৬৪ বছর বয়সী ইন্দোনেশিয় নারী মারইয়ানি। গত ২ আগস্ট হজের জন্য তিনি ইন্দোনেশিয়া থেকে সৌদি আরবের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। ২৬ বছরের দীর্ঘ সাধনার পর বায়তুল্লাহ শরিফের জিয়ারত নসিব হবে তাঁর কপালে।
ইলমফিড ডটনেট-এর তথ্য অনুযায়ী, ২৬ বছর ধরে পুরাতন আসবাব ও আবর্জনা সংগ্রহের মাধ্যমে তা বিক্রয় করে হজের জন্য তিনি অর্থ জমা করে আসছিলেন।
মারইয়ানি জানান, ১৯৮০’র দিকে তার স্বামীর ইন্তেকালের পর তার হজের ইচ্ছা তীব্র হয়ে উঠে। চার সন্তানসহ বিধবা এই নারীর কাঁধে যখন সকলকে ভরণপোষণের দায়িত্ব, তিনি জানতেন না কিভাবে অর্থ সঞ্চয় করবেন। তখন থেকেই তিনি আবর্জনা সংগ্রহ করা শুরু করেন।
প্রতিদিন ভোর থেকে মারইয়ানি কাজ শুরু করতেন এবং প্লাস্টিক কাপ, বোতল ও রাস্তার ধারে পড়ে থাকা অন্যান্য বিক্রয়যোগ্য আবর্জনা তিনি সংগ্রহ করতেন। তীব্র বৃষ্টি হলে বিক্রয়ের জন্য মাটিও সংগ্রহ করতের তিনি।
২০১২ সালে ১৯ বছর চেষ্টার পর, তিনি দুই কোটি পঞ্চাশ লক্ষ ইন্দোনেশিয় রুপিয়া (১,৭৫০ মার্কিন ডলার) সঞ্চয় করেন যা তখন ইন্দোনেশিয়ায় হজের রেজিস্ট্রেশন করার জন্য নির্ধারিত ছিল। এই বছর পর্যন্ত তিনি তার সঞ্চয় অব্যাহত রাখেন, যার মাধ্যমে তিনি আরো এক কোটি রুপিয়া (৬৯৯.৮২ ডলার) সঞ্চয় করতে সক্ষম হন।
এর মধ্যে মারইয়ানির সন্তানরা বড় হয়ে অর্থ উপার্জন শুরু করে। কিন্তু তাদের ধারণাও ছিলনা তাদের মা হজের জন্য এত দীর্ঘ সময় ধরে অর্থ সঞ্চয় করছেন।
পার্কিং এটেনডেন্ট হিসেবে কাজ করা মারইয়ানির সন্তান ডেনি মুলইয়ানা বলেন, “আমার মাকে আমি সাহায্য করবো কি, আমি জানতামই না হজের জন্য তিনি অর্থ সঞ্চয় করছেন!”
গত এপ্রিলে হজের জন্য ধর্ম মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ছাড়পত্র পাওয়ার পরপরই তিনি তার সন্তানদের এ বছর হজে যাওয়ার কথা জানান।
মারইয়ানি স্বীকার করেন, ২৬ বছর দীর্ঘ এক সময়। কিন্তু এর জন্য তিনি কখনোই উদ্বিগ্ন হননি।
তিনি বলেন, “গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল আমি সঞ্চয় করেছি। কখনোই আমি হতাশ হইনি, সর্বদাই আশাবাদী ছিলাম এবং কখনোই ক্লান্তি অনুভব করিনি।”
আরএম/