মুফতি আবদুল্লাহ তামিম ♦
মানুষকে আল্লাহ তায়ালা ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছেন। আর ইবাদত কিভাবে করবে সেসব শিখিয়েছেন রহমাতুললিল আলামিন, সরকারে দু আলম হজরত মুহাম্মদ মোস্তফা সা.। তিনি সকাল সন্ধ্যা অনেক আমল করতেন। দোয়া দরূদ ও বিভিন্ন নফল আমলের মাধ্যমে অনেকে মহান আল্লাহর ওলি পর্যায়ের মর্যাদা অর্জন করতে সক্ষম হোন। এসব আমলের বিনিময়ে জাহান্নাম থেকে মুক্তি, বিপদ আপদ থেকে রক্ষা ও অভাব অনটনও দূর হয়ে যায়। পরকালেও তাদের জন্য রয়েছে বিশেষ মর্যাদা।
সকাল-সন্ধ্যার আমল সম্পর্কে পবিত্র কোআনুল কারিমে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন,
وَسَبِّحُوهُ بُكْرَةً وَأَصِيلا ,يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اذْكُرُوا اللَّهَ ذِكْرًا كَثِيراً
‘হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে অধিকমাত্রায় স্মরণ করো এবং সকাল ও সন্ধ্যায় তার পবিত্রতা বর্ণনা করো।’ (সূরা: আহযাব, আয়াত ৪১-৪২)
মহান আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন, وَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ بِالْعَشِيِّ وَالْإِبْكَارِ
‘প্রশংসাসহ সকাল ও সন্ধ্যায় তোমার রবের পবিত্রতা বর্ণনা করো।’ (সূরা: মুমিন, আয়াত: ৫৫)
মহান আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন, وَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ قَبْلَ طُلُوعِ الشَّمْسِ وَقَبْلَ الْغُرُوبِ
‘সূর্যোদয়ের পূর্বে ও সূর্যাস্তের পূর্বে প্রশংসাসহ তোমার রবের পবিত্রতা বর্ণনা করো।’ (সূরা: কাফ, আয়াত ৩৯)
সকাল সন্ধ্যার আমল সম্পর্কে হাদিসে- কেয়ামদের দিন উত্তম পাথেয়:
মুসলিম শরিফে বর্ণিত হয়েছে, হজরত আবু হুরাইরা (রা.) নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন, যে ব্যক্তি সকাল ও সন্ধ্যায় ‘সুবহানাল্লাহি ওয়াবিহামদিহি’ পড়বে কিয়ামতের দিন তার চেয়ে উত্তম পাথেয় নিয়ে আর কেউ আসবে না।
একমাত্র সেই ব্যক্তি ছাড়া যে এ দোয়াটি তার সমপরিমাণ বা তার চেয়ে বেশি পড়েছে। নাসায়ী, তিরমিযী, মুসনাদে আহমাদ ইবনে হাম্বল ও আবু দাউদ ‘সুবহানাল্লাহিল আজিম ওয়াবিহামদিহি’ কথাটিসহ এ দুআটি বর্ণনা করেছেন। সেখানে এ কথাটিও বর্ণনা করা হয়েছে যে, সমুদ্রের বুদবুদের সমান গুনাহ হলেও তার সব গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে।
প্রিয়নবি রাসূলুল্লাহর (সা.) এর দোয়া:
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেছেন, সন্ধ্যা হলেই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পড়তেন,
أَمْسَيْنَا وَأَمْسَى الْمُلْكُ لِلَّهِ، وَالْحَمْدُ لِلَّهِ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ، وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُو عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ، رَبِّ أَسْأَلُكَ خَيْرَ مَا فِي هَذِهِ اللَّيْلَةِ وَخَيْرَ مَا بَعْدَهَا، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا فِي هَذِهِ اللَّيْلَةِ وَشَرِّ مَا بَعْدَهَا، رَبِّ أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْكَسَلِ وَسُوءِ الْكِبَرِ، رَبِّ أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابٍ فِي النَّارِ وَعَذَابٍ فِي الْقَبْرِ
‘আমরা ও গোটা দেশ আল্লাহর হুকুমে সন্ধ্যা করলাম। আল্লাহর জন্যই সমস্ত প্রশংসা। আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই। তিনি এক ও লা শরীক। চূড়ান্ত ক্ষমতা ও বাদশাহী তারই। তারই জন্য সব প্রশংসা। তিনি সবকিছু করতে সক্ষম। হে আমার রব, এই রাতের মধ্যে যা আছে এবং এরপর যা হবে আমি তোমার কাছে তার কল্যাণকর দিক প্রার্থনা করছি।
আর এই রাতের মধ্যকার অকল্যাণ ও তারপর আগমনকারী অকল্যাণ থেকে তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। হে আমার রব, আমি অলসতা ও ক্ষতিকর বৃদ্ধাবস্থা থেকে তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। হে রব, আমি দোযখ ও কবরের আযাব থেকেও তোমার কাছে আশ্রয় চাচ্ছি।’ (সূত্র: মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিযী।)
সব বিপদ থেকে রক্ষা করবে
সুনানে তিরমিযিতে আব্দুল্লাহ ইবনে হাবী বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, পড়ো! আমি বললাম হে আল্লাহর রাসূল! কী পড়বো? তিনি বললেন, ‘কুলহুয়াল্লাহু’ শেষ পর্যন্ত এবং মুয়াওয়াযাতাইনে (অর্থাৎ কুল আউযু বিরাব্বিল ফালাক ও কুল আউযু বিরাব্বিন নাস) সকাল সন্ধ্যা তিনবার করে পড়ো। এগুলো সবকিছু থেকে তোমাকে রক্ষার জন্য যথেষ্ট হবে। (সূত্র: তিরমিযী শরীফ)
তিরমিযীর আরেকটি হাদীসে হজরত আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণনা করেছেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবাদের বলতেন, সকাল হলে তোমরা এ দোয়াটি পড়বে,
اللَّهُمَّ بِكَ أَصْبَحْنَا، وَبِكَ أَمْسَيْنَا، وَبِكَ نَحْيَا، وَبِكَ نَمُوتُ، وَإِلَيْكَ الْمَصِيرُ
‘হে আল্লাহ! তোমার সাহায্যেই আমরা সকাল করেছি এবং তোমার সাহায্যেই সন্ধা করেছি। তোমার করুণায় আমরা বেঁচে আছি, তোমার নির্দেশেই মরবো এবং তোমার দিকেই ফিরে যেতে হবে।’
আর যখন সন্ধ্যা হবে তখন এই দোয়া পড়বে,
اللَّهُمَّ بِكَ أَمْسَيْنَا، وَبِكَ أَصْبَحْنَا، وَبِكَ نَحْيَا، وَبِكَ نَمُوتُ، وَإِلَيْكَ النُّشُورُ
‘হে আল্লাহ!, আমরা তোমার সাহায্যে সন্ধ্যা করেছি, তোমার সাহায্যে সকাল করেছি, তোমার দয়ায় বেঁচে আছি, তোমার আদেশে মৃত্যুবরণ করবো এবং সবশেষে তোমার কাছে হাজির হতে হবে।’ (সূত্র: সুনানে আরবাআ, আহমদ ইবনে হাম্বল, ইবনে হিব্বান।)
‘সাইয়েদুল ইসতিগফার’
সহীহ বুখারিতে শাদ্দাদ ইবনে আওস নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: ‘সাইয়েদুল ইসতিগফার’ বা সর্বাধিক ব্যাপক অর্থপূর্ণ দোয়া হচ্ছে এটি,
اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ وَأَبُوءُ لَكَ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ
‘হে আল্লাহ! তুমিই আমার প্রতিপালক। তুমি ছাড়া কেউ ইলাহ নেই। তুমি আমাকে সৃষ্টি করেছো। আমি তোমার বান্দা। আমি যথাসাধ্য তোমার সাথে কৃত প্রতিশ্রুতির ওপর প্রতিষ্ঠিত আছি। আর আমি যা কিছু করেছি তার অকল্যাণ থেকে তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করছি। তুমি আমাকে যেসব নিয়ামত দান করেছো আমি তার মূল্য দেই। নিজের গুনাসমূহ স্বীকার করি। তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও। কারণ তুমি ছাড়া আর কেউ ক্ষমা করতে পারে না।’
যে ব্যক্তি সন্ধ্যাকালে এ দোয়াটি পড়লো এবং সেই রাতেই মৃত্যুবরণ করলো। কিংবা সকালে পড়লো এবং সেদিনই মৃত্যুবরণ করলো সে জান্নাতে প্রবেশ করলো।
সকাল-সন্ধ্যা ও শয্যা গ্রহণের সময় আমল:
তিরমিযীর বর্ণনা মতে, হজরত আবু হুরাইরা (রা.) বলেন, আবু বকর সিদ্দিক (রা.) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললেন, আমাকে এমন একটি দোয়া বলে দিন যা আমি সকাল ও সন্ধ্যায় পড়বো। নবী (সা.) বললেন, সকালে ও সন্ধায় এবং শয্যা গ্রহণের সময় এ দোয়াটি পড়বে’
اللَّهُمَّ عَالِمَ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ، فَاطِرَ السَّمَوَاتِ وَالْأَرْضِ، رَبَّ كُلِّ شَيْءٍ وَمَلِيكَهُ، أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ، أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ نَفْسِي، وَشَرِّ الشَّيْطَانِ وَشِرْكِهِ و أن أقترف على نفسي إثما ، أو أجره إلى مسلم
‘হে আল্লাহ দৃশ্য ও অদৃশ্য সবকিছু জ্ঞানের অধিকারী, পৃথিবী ও আকাশ মণ্ডলের সৃষ্টিকর্তা, প্রতিটি বস্তুর মালিক ও প্রতিপালক, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, তুমি ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। আমি আমার প্রবৃত্তির অকল্যাণ, শয়তানের অকল্যাণ এবং তার ষড়যন্ত্রসমূহ থেকে তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আর আমি কোনো মন্দ কাজে জড়িয়ে পড়া কিংবা অন্য কোনো মুসলমানের জন্য গোনাহের কারণ হওয়া থেকেও আশ্রয় প্রার্থনা করছি।’ (সূত্র: আবু দাউদ, তিরমিযি ও নাসাঈ)
কোনো কিছুই ক্ষতি সাধন করতে পারবে না:
হজরত ওসমান ইবনে আফফান (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহর যে বান্দাই প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যায় নিম্মোক্ত দোয়াটি তিনবার পড়ে, কোনো কিছুই তার ক্ষতিসাধন করতে পারে না।
بِسْمِ اللَّهِ الَّذِي لَا يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَيْءٌ فِي الْأَرْضِ وَلَا فِي السَّمَاءِ وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ
‘আল্লাহর নামে শুরু করছি, যার নামের সঙ্গে পৃথিবী ও আকাশমণ্ডলীর কোনো জিনিস ক্ষতিসাধন করতে পারে না। তিনি মহাশ্রবণকারী ও মহাজ্ঞানী। (সূত্র: আবু দাউদ, তিরমিযী ও নাসাঈ।)
মহান আল্লাহকে যাকে সন্তুষ্ট করবেন:
সাওবান (রা.) (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিশেষ খাদেম) এবং আরো কিছু সাহাবা থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি নিম্মবর্ণিত বিষয়বস্তু স্বীকার করবে কিয়ামতের দিন তাকে সন্তুষ্ট করা আল্লাহ তায়ালা নিজের জন্য কর্তব্য করে নেবেন।
رَضِيتُ بِاللهِ رَبًّا، وَبِالإسْلاَمِ دِيناً، وَبِمُحَمَّدٍ -صلَّى الله عليه وسلَّم- نَبِيًّا
‘আমি আল্লাহকে রব, ইসলামকে দ্বীন এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নবী হিসেবে মেনে নিয়েছি।’ (সূত্র: তাবারানী ‘মুজামুল আওসাত’ গ্রন্থে এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।)
জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি:
তিরমিযীতে বর্ণিত হয়েছে, হজরত আনাস বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রতিদিন সকাল এবং সন্ধ্যায় নিম্নলিখিত দোয়াটি একবার পড়বে আল্লাহ তাকে দোযখের আগুন থেকে এক চতুর্থাংশ মুক্ত করবেন। দুইবার পড়লে অর্ধেক মুক্তি দান করবেন। তিনবার পড়লে তিন চতুর্থাংশ অব্যাহতি দান করবেন এবং চারবার পড়লে আল্লাহ তায়ালা তাকে দোযখের আগুন থেকে সম্পূর্ণরূপে মুক্তি দান করবেন।
اللَّهُمَّ إِنِّي أَصْبَحْتُ أُشْهِدُكَ وَأُشْهِدُ حَمَلَةَ عَرْشِكَ وَمَلَائِكَتَكَ، وَجَمِيعَ خَلْقِكَ أَنَّكَ أَنْتَ اللَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُكَ وَرَسُولُكَ
‘হে আল্লাহ আমার সকাল হলো। এখন আমি তোমাকে তোমার আরশ বহনকারীদের, সমস্ত ফেরেশতাদের এবং সমস্ত সৃষ্টিকে এ বিষয়ে সাক্ষী বানাচ্ছি যে, তুমি ছাড়া আর কোনো ইলাহ নেই আর মুহাম্মদ তোমার বান্দা ও রাসূল।’ (তিরমিযী)
শুকরিয়া আদায়ের দোয়া:
সুনানে আবু দাউদগ্রন্থে আব্দুল্লাহ ইবনে গানাম থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি সকাল বেলা এ দোয়া পড়লো সে সারাদিনের শুকরিয়া আদায় করলো এবং যে সন্ধ্যাকালে এ দোয়া পড়লো সে সারারাতের শুকরিয়া আদায় করলো।
اللهُمَّ مَا أَصْبَحَ بِي مِنْ نِعْمَةٍ أَوْ بِأَحَدٍ مِنْ خَلْقِكَ، فَمِنْكَ وَحْدَكَ لَا شَرِيكَ لَكَ، فَلَكَ الْحَمْدُ وَلَكَ الشُّكْرُ
‘হে আল্লাহ! আমি এবং তোমার সৃষ্টিকুলের মধ্যে যে-ই যে নিয়ামত লাভ করেছে তা কেবল তোমার নিকট থেকেই লাভ করেছে। তুমি এক, একক ও লা-শরীক। সমস্ত প্রশংসা ও কৃতজ্ঞা তোমারই জন্য।’ (সূত্র: আবুদ দাউ, নাসায়ী।)
ভূমিধসের আযাব থেকে রক্ষা:
সুনানে তিরমিযী ও সহীহ হাকিমে উল্লেখ করা হয়েছে যে, হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমার (রা.) বর্ণনা করেছেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকাল-সন্ধ্যায় কখনো নিচের দোয়াটি পাঠ করা পরিত্যাগ করতেন না।
للَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ الْعَافِيَةَ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ، اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ الْعَفْوَ وَالْعَافِيَةَ فِي دِينِي وَدُنْيَايَ وَأَهْلِي وَمَالِي، اللَّهُمَّ اسْتُرْ عَوْرَاتِي وَآمِنْ رَوْعَاتِي، اللَّهُمَّ احْفَظْنِي مِنْ بَيْنِ يَدَيَّ وَمِنْ خَلْفِي وَعَنْ يَمِينِي وَعَنْ شِمَالِي وَمِنْ فَوْقِي وَأَعُوذُ بِعَظَمَتِكَ مِنْ أَنْ أُغْتَالَ مِنْ تحتي
‘হে আল্লাহ! আমি দুনিয়া ও আখেরাতে উভয় স্থানে তোমার ক্ষমতার মুখাপেক্ষী। হে আল্লাহ! আমি আমার পরিবার পরিজন ও সম্পদের জন্য তোমার ক্ষমা ও নিরাপত্তা প্রার্থী। হে আল্লাহ! আমার গোপনীয় বিষয়সমূহ গোপন করো এবং অস্বস্তিকে স্বস্তিতে রূপান্তরিত করো। হে আল্লাহ! আমাকে সম্মুখ, পেছন, ডান, বাঁ এবং ওপর থেকে হিফাজত করো।
আর অকষ্মাৎ আমাকে নিচে থেকেও যেনো ধ্বংস না করা হয় সেজন্যেও তোমার বিশাল ক্ষমতার আশ্রয় প্রার্থনা করছি। (অর্থাৎ ভূমিধসে যেনো নিচে তলিয়ে না যাই।)’ ওয়াকি বলেন, নবী (সা.) শেষ বাক্যটি দ্বারা বুঝাতে চেয়েছেন, মহান আল্লাহ তায়ালা যেনো ভূমিধসের আযাব থেকে রক্ষা করেন। (সূত্র: আবু দাউদ, তিরমিযী, নাসায়ী ও ইবনে মাজা।)
-এটি