আবদুল্লাহ তামিম
আওয়ার ইসলাম
এশিয়ার বৃহত্তম দীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দারুল উলুম দেওবন্দে হেলিপোর্ট নির্মাণের অভিযোগের জেরে শনিবার মাদরাসায় তল্লাশি চালিয়েছে স্থানীয় জেলা প্রশাসন। সরকারি অনুমতি না নেয়ার অযুহাতে লাইব্রেরির নির্মাণ কাজ বন্ধও করে দিতে পারে বলে ঘোষণা দিয়েছে প্রশাসন।
জেলা পুলিশ কর্মকর্তা অলোক পান্ডে, এসএসপি দীনেশ কুমার ও পুলিশ প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। অফিসাররা দারুল উলুম দেওবন্দের সীমানায় নির্মাণাধীন শাইখুল হিন্দ লাইব্রেরির উপরে হেলিপোর্ট নির্মাণের বিষয়ে অনুসন্ধান করেন।
ডিএম অলোক পান্ডে জানায়, আমরা তদন্ত করেছি। গ্রন্থাগারসহ হেলিপোর্ট নির্মাণের অনুমতি নেওয়া হয়নি দারুল উলুম দেওবন্দ থেকে। সুতরাং এসডিএম সহ পিডব্লিউডিকে এর প্রযুক্তিগত সক্ষমতাসহ ইত্যাদি যাচাইয়ের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রযুক্তিগত প্রতিবেদন পাওয়ার পরে এ ক্ষেত্রে কী ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
মুখ্যমন্ত্রী দপ্তরে অভিযোগ করা হয়েছিল, দারুল উলুম দেওবন্দ বিশাল লাইব্রেরির ছাদে হেলিপোর্ট তৈরির প্রস্তুতি চলছে। এ অভিযোগ তদন্ত করতে ডিএমসহ সমস্ত কর্মকর্তা দারুল উলূমে পৌঁছেন।
এর আগে দারুল উলুম দেওবন্দের সীমানায় নির্মাণাধীন শাইখুল হিন্দ লাইব্রেরি ভবনের তথ্য চেয়ে নোটিশ পাঠিয়েছে সাহারানপুরের ডি এম। এমন খবরে দারুল উলুম দেওবন্দ কতৃপক্ষ যারপরনাই বিস্মিত হয়েছেন এবং ভারতের সাধারণ মুসলিমরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
এ ব্যাপারে সাহারানপুরের ডি এম অলোক কুমার পান্ডে বলেছেন, জে আই দেওবন্দের মাধ্যমে আমি জানতে পারি, দারুল উলুম দেওবন্দের সীমানায় একটি বড় লাইব্রেরি ভবন নির্মিত হচ্ছে এবং এই ভবনের ওপরে হেলিকপ্টার অবতরনের জন্য হেলিপোর্ট নির্মিত হচ্ছে। তারপরে আমি দারুল উলুম দেওবন্দের মুহতামিম মুফতি আবুল কাসেম নোমানী কে এস ডি এম দেওবন্দের মাধ্যমে গত ২৬ শে জুন ২০১৯ ভবন নির্মানের অনুমতিপত্র, এনওস এবং হেলিপোর্ট নির্মান সম্পর্কিত যাততীয় তথ্য এক সপ্তাহের মধ্যে দেয়ার জন্য নোটিশ পাঠিয়েছিলাম।
“ তারই ধারাবাহিকতায় দেওবন্দের মুহতামিম মুফতি আবুল কাসেম নোমানী গত ৪ জুলাই ২০১৯ লিখিতভাবে শুধুমাত্র এতটুকু জবাব দিয়েছিলেন যে, লাইব্রেরি ভবনের উপরে কোন হেলিপোর্ট নির্মান হচ্ছে না। ” বলেন পান্ডে।
সাহারানপুরের ডিএম এর পক্ষ থেকে জানানো হয়, মুহতামিমের পক্ষ থেকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রাপ্ত চিঠিতে সমস্ত প্রশ্নের সন্তোষজনক উত্তর পাওয়া যায়নি। নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হওয়ার পরে গত ২০শে জুলাই ২০১৯ দ্বিতীয়বার মুহতামিম বরাবর নোটিশ জারি করে নির্মাণাধীন লাইব্রেরি ভবনের যাবতীয় তথ্যাদি চাওয়া হয়েছে।
সাহারানপুর ডিএম-ুর পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, নির্দিষ্ট সময়ের মাঝে প্রয়োজনীয় তথ্য না পাওয়া গেলে আর বি ও আইন ১৯৫৮ অনুযায়ী দারুল উলুম দেওবন্দের সীমানায় চলমান নির্মাণ কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হবে।
এ বিষয়ে দারুল উলুম দেওবন্দের মুহতামিম মুফতি আবুল কাসেম নোমানী বলেন, দারুল উলুম দেওবন্দের সমস্ত ভবন সরকারী নিয়মানুযায়ী নির্মিত হচ্ছেে। তবুও যদি সরকারের পক্ষ থেকে কেউ রিসার্চ করতে আসে, তাহলে আমরা তাকে স্বাগত জানাবো।
সাহারানপুরের ডি এম অলোক কুমার পান্ডে উপরোল্লিখিত সমস্ত বিষয়ের অনুসন্ধানের জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন।
এ তদন্ত টিমকে দারুল উলুম দেওবন্দ সাহায্য করবে বলে জানিয়েছেন মুহতামিম মুফতি আবুল কাসেম নোমানী। তিনি বলেন, দারুল উলুমের সমস্ত ভবন সরকারী রুলস অনুযায়ী নির্মান করা হচ্ছে। আর ডি এম কর্তৃক গঠনকৃত টিমকে যাবতীয় তথ্য দিয়ে আমারা সবরকমের সাহায্য করার জন্য প্রস্তুত।
উল্লেখ্য, গত কয়েকবছর ধরে কঠোর নির্মাণযজ্ঞের পর লাইব্রেরি ভবনের চমৎকার কাঠামো তৈরি হয়েছে। অনেকদিনের শ্রম ও পরিকল্পনার পর ‘শাইখুল হিন্দ লাইব্রেরি’র নির্মাণে হাত দেয়া হয়েছে। কিন্তু সরকারি তদন্তের জেরে বিঘ্নতা ঘটছে এখন।
https://www.facebook.com/ZarbeDeoband1/videos/1342561789239748/?t=7
সূত্র: বাসিরাত অনলাইন।
-এটি