সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


বৌদ্ধদের দেশ থাইল্যান্ডে কেমন কাটছে মুসলিমদের জীবন

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আবদুুল্লাহ তামিম ♦

বৌদ্ধদের দেশ থাইল্যান্ড। ৯০ শতাংশ জনগোষ্ঠী তেরাভাদা বৌদ্ধধর্মে বিশ্বাসী। ইসলাম এ দেশে বিকাশমান ধর্ম। সাত কোটি জন-অধ্যুষিত থাইল্যান্ডে মুসলমানের সংখ্যা ৪০ থেকে ৫০ লাখ। গোটা থাইল্যান্ডে মসজিদের সংখ্যা তিন হাজার ৪৯৪। শুধু ব্যাংককেই রয়েছে ১৭০টি মসজিদ।

নামাজির সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য। দাওয়াত ও তাবলিগের মেহনতও চলছে পুরোদমে। থাইল্যান্ডে সাংবিধানিকভাবে ধর্মচর্চা, ধর্মশিক্ষা ও ধর্মপ্রচারে কোনো বাধা নেই। রাজকীয়ভাবে পাঁচটি ধর্মকে সহযোগিতা করা হয়। এগুলো হলো বৌদ্ধ, ইসলাম, খ্রিস্টান, হিন্দু ও শিখ।

১৩৫০-১৭৬৭ সময়কালে আরব, ইরান, মালয় ও ইন্দোনেশিয়া থেকে মুসলমানরা থাইল্যান্ডে আসতে থাকে। পরবর্তী সময়ে পাকিস্তান, কম্বোডিয়া ও বাংলাদেশ থেকেও অনেক মুসলমান এখানে আসে।

অবশ্য দক্ষিণাংশে কিছুটা জাতিগত অস্থিরতার রেশ আছে। দক্ষিণের মালয়েশিয়া সীমান্তবর্তী সোংকা, পাতানি, ইয়ালা ও নারাথিওয়াট প্রদেশ মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ। বেশির ভাগ অধিবাসীর ভাষা মালয়। এখানে স্বাধীনতা আন্দোলন শুরু হয় ২০০৪ সালে।

দারিদ্র্য, অনগ্রসরতা ও অর্থনৈতিক বৈষম্য বিদ্রোহের অন্যতম কারণ। মাঝেমধ্যে স্থানীয় বৌদ্ধদের সঙ্গে মুসলমানদের সহিংস ঘটনা ঘটে। আন্দোলন দমনে পরিচালিত সেনা অভিযানে এ পর্যন্ত তিন হাজার ৩৮০ জনের মৃত্যু হয়। সরকারের সঙ্গে মুসলিম নেতাদের শান্তি আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।

সমুদ্রের তলদেশে আল্লাহর কুদরতের নিদর্শন। পৃথিবীর উপরিভাগে যা কিছু দৃশ্যমান, তা আমাদের চোখে ও উপলব্ধিতে ধরা পড়ে; কিন্তু মাটির অভ্যন্তরে বা সমুদ্রের অথই জলরাশির তলে কী আছে তার অনেকটা আমাদের জ্ঞান গবেষণার বাইরে।

থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের প্রাণকেন্দ্রে ‘সি লাইফ’ নামের বিশাল এক সংগ্রহশালা ও অ্যাকোয়ারিয়াম রয়েছে, যেখানে বিভিন্ন প্রজাতির জলজ প্রাণী ও তলদেশের নানা আকৃতির শৈবাল ও বর্ণিল বৃক্ষের সংগ্রহ রয়েছে। কিছু মাছ দেখা গেল, যাদের মুখ কুকুর, ভালুুক ও ঘোড়ার মতো।

নিচের অংশটি মত্স্যাকৃতির। রীতিমতো আশ্চর্য! এগুলো দেখলে আল্লাহ তাআলার অপার মহিমা ও কুদরতের কথা মনে পড়ে। পবিত্র কোরআনের ভাষায় ‘মা খালাকতা হাজা বাতিলা’প্রভু, তুমি নিরর্থক কিছু সৃষ্টি করোনি।

তিন দিকে পানি পরিবেষ্টিত কাচের শক্ত আবরণে আচ্ছাদিত বিশালায়তন অ্যাকোয়ারিয়ামের মাঝখানে হাঁটার সুপরিসর পথ আছে। অ্যাকোয়ারিয়ামের উপরিভাগে রয়েছে স্বচ্ছ কাচ, যার ওপর দিয়ে নির্বিঘ্নে হাঁটাচলা যায়।

হাঙর, কোরাল, সরীসৃপ, শ্বেত কচ্ছপ, ইল, পেঙ্গুইনসহ নানা সামুদ্রিক প্রাণী খোলা মনে সন্তরণ করে কখনো কখনো কাচের সঙ্গে মুখ লাগিয়ে খেলা করে। এসব দৃশ্য মনেপ্রাণে শিহরণ জাগায়। অভিজ্ঞতার ভাণ্ডার সমৃদ্ধ করে।

ইসলামী ব্যাংকিং জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। থাইল্যান্ডের মুসলিম জনগোষ্ঠীর মধ্যে সুদমুক্ত ইসলামী ব্যাংকিং জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ক্রমেই। ২০০২ সালের ২১ অক্টোবর ইসলামিক ব্যাংক অব থাইল্যান্ডের যাত্রা শুরু। রাজধানী ব্যাংককের সুকুমভিত বাণিজ্যিক এলাকায় এর সদর দপ্তর অবস্থিত।

এ ব্যাংকের নেট আয় ৯.৫ বিলিয়ন বাথ আর অ্যাসেটের পরিমাণ ১০৯.৭ বিলিয়ন বাথ। ইসলামিক ব্যাংক অব থাইল্যান্ডের ৪৮.৫৪ শতাংশ শেয়ারের মালিক থাই অর্থ মন্ত্রণালয়।

শরিয়াহ আইনের ভিত্তিতে ব্যাংকটি পরিচালিত হয়ে আসছে। গোটা থাইল্যান্ডে এর শাখা রয়েছে ১৩০টি। জাতি-ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে যেকোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের এই ব্যাংকে লেনদেন করতে কোনো বাধা নেই।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ