সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


'বেফাক' নিয়ে বিভ্রান্তিতে বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

রকিব মুহাম্মদ
আওয়ার ইসলাম

সম্প্রতি প্রতারণামূলকভাবে বেফাকের পরিদর্শক বা দাঈ হিসেবে ভুয়া পরিচয় দিয়ে মাদরাসা ইলহাক করা ও পরিদর্শনকারীদের থেকে দেশের সকল মাদরাসা কর্তৃপক্ষকে সাবধান থাকতে জরুরি সতর্কবার্তা জারি করেছে বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড ‘বেফাকুল মাদারিসিলি আরাবিয়া’।

গত ৩০ জুন বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ-এর মহাপরিচালক অধ্যক্ষ যুবায়ের আহমাদ চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এমনটা জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ কওমী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড (বেফাক)-এর মাদরাসাগুলোকে অবহিত করা যাচ্ছে যে, কতিপয় লোক প্রতারণামূলকভাবে বেফাকের পরিদর্শক/দাঈ হিসেবে ভুয়া পরিচয় দিয়ে মাদরাসা ইলহাক ও পরিদর্শন করন ইত্যাদি কাজ চালিয়ে যাচ্ছে যা ষড়যন্ত্রমূলক ও উদ্দেশ্যমূলক।

বিজ্ঞপ্তিতে বেফাকের নিজস্ব ওয়েবসাইট (www.wifaqbd.org) থেকে অথবা পরিদর্শক/দাঈবৃন্দের সঙ্গে থাকা পরিচয়পত্রের মাধ্যমে পরিচয় যাচাইপূর্বক নিশ্চিত হয়ে তাদের দ্বারা কার্যসম্পাদন করার ব্যাপারে অনুরোধ করা হয়। সাথেসাথে  যদি কোনও ব্যক্তির পরিচয় যাচাই করতে গিয়ে সন্দেহ হয়, তবে বেফাককে অবহিত করার অনুরোধ জানানো হয়।

এ ব্যাপারে বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ-এর মহাপরিচালক অধ্যক্ষ যুবায়ের আহমাদ চৌধুরী আওয়ার ইসলামকে বলেন, দেশে কওমি মাদরাসাভিত্তিক অনেকগুলো শিক্ষাবোর্ড রয়েছে। এর মধ্যে তিনটি বোর্ডের নামের শুরুতে ‘বেফাক’ শব্দটি রয়েছে। এ কারণেই মূলত বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়।

বিভ্রান্তির কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, এই তিনটি বোর্ডগুলোর মধ্যে একটি হলো মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসউদ পরিচালিত বেফাকুল মাদারিসিদ দীনিয়া । এই বোর্ডের কতিপয় কর্মী মূল বেফাকের নাম ভাঙিয়ে, প্রতারণামূলকভাবে নিজেদের বোর্ডে বিভিন্ন মাদরাসাকে অন্তর্ভুক্ত করছে। সহজ-সরল মুহতামিমদের বোকা বানাচ্ছে। মাদরাসা কর্তৃপক্ষ মনে করছে, আমরা মূল বেফাকের পরিদর্শকের সঙ্গেই কথা বলেছি।

দীর্ঘদিন ধরে বেফাককে কয়েকবার এমন বিভ্রান্তিরকর পরিস্তিতিতে পড়তে হয়েছে বলে অভিযোগ করেন মহাপরিচালক মাওলানা যুবায়ের আহমদ চৌধুরী।

তিনি বলেন, সম্প্রতি ময়মনসিংহ থেকে একটি মাদরাসা আমাদের কাছে অভিযোগ নিয়ে আসে যে মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসউদ পরিচালিত বোর্ডের কর্মীরা বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার পরিচয়ে তাদের মাদরাসা পরিদর্শন করে। পরে তারা জানতে পারে যে পরিদর্শকরা মূল বেফাক থেকে আসেনি। পরিদর্শকদের সঙ্গে এ ব্যাপারে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তারা বলে, আমরা তো বলেছিলাম বেফাক থেকে এসেছি। আমাদের বোর্ডের নামও তো বেফাকুল মাদারিসিদ দীনিয়া।”

“এ ব্যাপারে  আমরা দেশের অধিকাংশ কওমি মাদরাসাতে নোটিশ পাঠিয়ে সতর্ক করা জরুরি মনে করেছি। এতে করে সচেতনা তৈরি হবে বলে মনে করছি। ভবিষ্যতে এরকম পরিস্থিতি আসলে, আমরা মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসউদের সঙ্গে যোগাযোগ করব।” বললেন মাওলানা যুবায়ের আহমদ।

এদিকে, বেফাকুল মাদারিসিদ দীনিয়া নিয়ে এমন অভিযোগকে ভিত্তিহীন ও অবাস্তব বলে জানালেন বোর্ডের মহাসচিব মাওলানা মোহাম্মদ আলী। তিনি বলেন, আমরা এতটাই দূর্বল যে আমাদের বোর্ডের কোন পরিদর্শক নিয়োগ দিতে পারিনি। কোথাও যাওয়ার প্রয়োজন হলে আমি নিজে যাই। সুতরাং তাদের অভিযোগটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও অবাস্তব।

বেফাকুল মাদারাসিল আরাবিয়া ব্যাপারে পাল্টা অভিযোগ তুলে মাওলানা মোহাম্মদ আলী বলেন, শুরু থেকেই বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন অনিয়ম করে আসছে এবং আমাদের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ করছে।

“গত বছর কিশোরগঞ্জের শামসুদ্দিন ভুঁইয়া মাদরাসার মেশকাত জামাত পর্যন্ত পরীক্ষা তারা বেফাকের অধীনে নিয়েছে। অথচ, ওই মারাসা আমাদের বোর্ডের অধীনে রয়েছে। হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, এক বোর্ডের মাদরাসা অন্য বোর্ডে যেতে পারবে না এবং পরীক্ষা দিতে পারবে না। এরপরও তারা ক্ষমতার বলে এই গর্হিত কাজটি করেছে। ” বলেলেন মাওলানা মোহাম্মদ আলী।

আরএম/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ