আওয়ার ইসলাম: শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফি হত্যাকাণ্ডে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় সোনাগাজী মডেল থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন করেছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, বুধবার (২৯ মে) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ওসির পক্ষে অ্যাড. সালমা সুলতানা আবেদনটি করেন।
রাফি হত্যাকাণ্ডে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পর গত সোমবার (২৭ মে) ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। এরপর থেকেই তিনি লাপাত্তা, পরিবার ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কেউই তার কোনও খোঁজ জানে না।
নুসরাত জাহান রাফি হত্যাকাণ্ডে প্রত্যাহার হওয়া ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে সব অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
রোববার (২৬ মে) সাইবার আদালতে এ সংশ্লিষ্ট মামলার তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দাখিল করেন পিবিআই সদর দপ্তরের সিনিয়র এএসপি রিমা সুলতানা।
গত ১৫ এপ্রিল ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। ব্যারিস্টার সুমনের মামলাটি প্রথমে অভিযোগ আকারে ছিল। পরে পিটিশন মামলা হিসেবে গ্রহণ করে তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন আদালত।
ওসির বিরুদ্ধে থানায় নুসরাতের বক্তব্য ভিডিও করে ফেসবুকে ছেড়ে দেওয়াসহ প্রত্যেকটি অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। তদন্তে প্রমাণিত সব তথ্য-উপাত্তসহ প্রতিবেদন আদালতকে দেওয়া হয়।
গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার ছাত্রী রাফিকে মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা শ্রেণিকক্ষে নিয়ে যৌন নিপীড়ন করেন। এ অভিযোগে দুজনকে থানায় নিয়ে যান ওসি মোয়াজ্জেম। ওসি নিয়ম ভেঙে জেরা করতে নুসরাতের বক্তব্য ভিডিও করেন।
মৌখিক অভিযোগ নেওয়ার সময় দুই পুরুষের কণ্ঠ শোনা গেলেও সেখানে রাফি ছাড়া অন্য কোনও নারী বা তার আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না। ভিডিওটি প্রকাশ হলে অধ্যক্ষ ও তার সহযোগীদের সঙ্গে ওসির সখ্যতার ব্যাপারটি স্পষ্ট হয়ে যায়।
ভিডিওতে দেখা যায়, ওসির সামনে অঝোরে কাঁদছেন রাফি। সেই কান্নার ভিডিও করেন থানার ওসি। রাফি তার মুখ দুই হাতে ঢেকে রেখেছেন। তাতেও ওসির আপত্তি। বারবার ‘মুখ থেকে হাত সরাও, কান্না থামাও’ বলার পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘এমন কিছু হয়নি যে এখনও তোমাকে কাঁদতে হবে।’
-এটি