মুহাম্মদ ওবায়দুল ইসলাম শোয়াইব
মানুষের দুই ধরনের আবেগ আছে, একটি আনন্দ, অন্যটি দুঃখ। যখন আমরা এ পৃথিবীতে অসাধারণ কিছু অর্জন করি, তখন আমরা খুব খুশি হই; যখন গুরুত্বপূর্ণ কিছু হারাই, তখন দুঃখিত হই।
খুব খুশি হওয়া বা খুব দুঃখিত হওয়া, উভয় ক্ষতিকারক। কখনও কখনও সুখ মানুষকে অহংকারী করে তোলে। বিষণ্ণতা মানুষকে হতাশ করে তোলে। আল্লাহ অহংকারী বা হতাশ হতে নিষেধ করে দিয়েছেন।
কারণ মানুষ যা কিছু অর্জন করেছে বা ধারণ করে তার সবকিছুই মহান স্রষ্টা আল্লাহর দয়া। আল্লাহর দয়ার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ না করে অহংকারী হওয়া অকৃতজ্ঞতারই প্রকাশ। যে কারণে আল্লাহ দাম্ভিক, অহংকারীকে পছন্দ করেন না। এটি আল কোরআনে দেওয়া মহান আল্লাহর সুস্পষ্ট ঘোষণা। সুরো লোকমানে আল্লাহ তায়ালা বিষয়টি সুন্দর করে বুঝিয়েছেন।
আবার আল্লাহ তায়ালা মানুষকে হাতাশ হতেও নিষেধ করেছেন, কারণ ইমানদার ব্যাক্তির সফলতা নির্ভর করে তার নিয়্যত ও কৃতকর্মের উপর। মহান আল্লাহ তায়ালা মুমিন বান্দাদের উদ্দেশ্য করে বলেন, (হে ঈমানদারগণ!) তোমরা মন ভাংগা হয়োনা, দুশ্চিন্তা করোনা। যদি তোমরা মুমিন হও, তাহলে অবশ্যই তোমরা বিজয়ী থাকবে। (সুরা আল ইমরান-১৩৯)
আল্লাহ তায়ালা অন্য আয়াতে তার বান্দাদের হতাশ হতে নিষেধ করে ঘোষণা করেন, তোমরা আল্লাহর রহমত হতে নিরাশ হয়োনা।
এটা সত্য যে, আবেগ আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কিন্তু আমাদের নিজেদের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। যখন একজন মানুষ রাগান্বিত হয়, তখন তিনি অগ্নিতরঙ্গ হয়ে ওঠেন, অন্যদের হুমকি দেন, আত্মনিয়ন্ত্রণ হারান এবং বিচার ও ভারসাম্যের সীমানা অতিক্রম করেন। অপরদিকে, যদি তিনি সুখী হন, আনন্দের নেশায় তিনি নিজেকে ভুলে যান এবং নম্রতার সীমানা অতিক্রম করেন।
এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হল কিভাবে আমরা আমাদের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারি? আনন্দ এবং ব্যথা উভয়ই আল্লাহর কাছ থেকে আসে। যখন আমাদের জীবনে সুখ আসে, তখন আমাদের অহংকার করা উচিত নয়, বরং শুধুমাত্র আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা উচিত।
যখন আমাদের জীবনে দুঃখ আসে, তখন আমরা হতাশ হব না, বরং কেবল আল্লাহর উপর নির্ভর করব। যখন আমরা আমাদের আনন্দদায়ক, দুঃখজনক আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করি, তখন আমরা সুখ,শান্তি, সান্ত্বনা ও জয় লাভের স্বাদ অর্জন করতে পারি। একজন নিখুঁত মানুষ হতে আনন্দ ও দুঃখ উভয় সময় মধ্যম পথ অনুসরণ করে আমাদের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা উচিত।
লেখক: ইংরেজি বিভাগ,বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়
-এটি