আওয়ার ইসলাম: ফেনীর সোনাগাজী পরীক্ষা কেন্দ্রে দুর্বৃত্তদের দেয়া আগুনে দগ্ধ মাদরাসা ছাত্রী অধ্যক্ষের যৌন নীপিড়নের পর বান্ধবীদের উদ্দেশে একটি চিঠি লিখেন। ওই চিঠি মঙ্গলবার তার বাড়িতে পড়ার টেবিল থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
দুই পাতার ওই চিঠিটি তার দুই ঘনিষ্ট বান্ধবী তামান্না ও সাথীকে উদ্দেশ করে লেখা। চিঠিতে গত ২৭ মার্চ ঘটে যাওয়া ঘটনার বর্ণনাও দিয়েছেন ওই ছাত্রী।
চিঠিটি হুবহু তুলে ধরা হল-
‘তামান্না, সাথী। তোরা আমার বোনের মতো এবং বোনই। ওই দিন তামান্না আমায় বলেছিল, আমি নাকি নাটক করতেছি। তোর সামনেই বলল। আরো কি কি বলল, আর তুই নাকি নিশাতকে বলেছিস আমরা খারাপ মেয়ে।
বোন প্রেম করলে কি সে খারাপ? তোরা সিরাজ উদ দৌলা সম্পর্কে সব জানার পরও কিভাবে তার মুক্তি চাইতেছিস। তোরা জানিস না, ওই দিন রুমে কি হইছে? উনি আমার কোন জায়গায়....এবং আরও কোন জায়গায়... চেষ্টা করেছে, উনি আমায় বলতেছে- নুসরাত ডং করিস না।
তুই প্রেম করিস না। ছেলেদের সঙ্গে প্রেম করতে ভালো লাগে। ওরা তোরে কি দিতে পারবে? আমি তোকে পরীক্ষার সময় প্রশ্ন দেবো। আমি শুধু আমার শরীর দিতাম ওরে। বোন এই জবাবে উত্তর দিলাম। আমি একটা ছেলে না হাজারটা ছেলে...।
আমি লড়ব শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত। আমি প্রথমে যে ভুলটা করেছি আত্মহত্যা করতে গিয়ে। সেই ভুলটা দ্বিতীয়বার করব না। মরে যাওয়া মানে তো হেরে যাওয়া। আমি মরব না, আমি বাঁচব। আমি তাকে শাস্তি দেবো। যে আমায় কষ্ট দিয়েছে। আমি তাকে এমন শাস্তি দেবো যে তাকে দেখে অন্যরা শিক্ষা নেবে। আমি তাকে কঠিন থেকে কঠিনতম শাস্তি দেবো। ইনশা আল্লাহ।’
প্রসঙ্গত, গত শনিবার সকাল নয়টার দিকে আলিম পর্যায়ের আরবি প্রথমপত্র পরীক্ষা দিতে যায় রাফি। এরপর কৌশলে তাকে পাশের ভবনের ছাদে ডেকে নেওয়া হয়। সেখানে ৪/৫ জন বোরকা পরিহিত দৃর্বৃত্ত ওই ছাত্রীর শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুর ধরিয়ে দেয়। এতে তার শরীরের ৮০ শতাংশ পুড়ে যায়।
দগ্ধ ছাত্রীর চিত্কারে সহপাঠী ও শিক্ষকরা ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে সোনাগাজী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরে দুপুরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। চিকিত্করা জানিয়েছেন, তার শরীরের ৮০ ভাগ দগ্ধ হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এর আগে, ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মামলা করেন ওই ছাত্রীর মা।
এমএম/