মাওলানা জমির মাহমুদ । ।
ওস্তাদে মুহতারাম ড. জসিম উদ্দীন নাদভী র.।সহকারী পরিচালক, জামেয়া দারুল মা’রিফ, চট্টগ্রাম ।আমাদের অনেকের সরাসরি ওস্তাদ। গত রমজানে একসাথে ইফতার করেছি আমার বাসাতে। দেশ থেকে এসেই যথারীতি ফোন করলেন এবং নিজ থেকে জানালেন একদিন ইফতার করবেন।
কাতারে বছরে একাধিকবার আসতেন। বিদেশের মাটিতে একজন দেশীয় মুরুব্বীর অভাব পূরণ করতাম তাঁর আগমনে। প্রিয় প্রতিষ্ঠান জামেয়া দারুল মা’রিফ এর প্রাক্তন ছাত্রদের সংঘটন বিষয়ে আলোচনা করেন। কাতারে অবস্থানরত ছাত্রদের সম্পৃক্ত করা সংক্রান্ত আলোচনাও হয়।
হাসিমাখা মুখখানা বারবার চোখে ভেসে উঠছে। মহান আল্লাহর ডাকে চলে গেলেন। গত ৯ এপ্রিল পবিত্র মক্কাতে ওমরাহ এর সফর অবস্থায় ইন্তিকাল করেন। সকলকেই যেতে হবে। তাঁর চলে যাওয়ার শোককে শক্তিতে পরিণত করে, তাঁর মতই হতে হবে প্রেরণার বাতিঘর।
তাঁর অনন্য বৈশিষ্টগুলো ধারন করে সময়ের শূন্যস্হান পূরণ করা অপরিহার্য। জ্ঞান সাধনায় তিনি রেখে গেলেন অনুসরণীয় এক দৃষ্টান্ত।
দাওরায়ে হাদিস সমাপ্ত করে গেলেন নাদওয়াতুল ওলামা-লাখনৌ, অর্জন করলেন নাদভী খেতাব, তারপর মদিনা ইউনিভার্সিটি। জামেয়া দারুল মা’রিফ এ কর্মজীবন শুরুর পর কুষ্টিয়া ইসলামি ইউনিভার্সিটি থেকে ডক্টরেট করেন।
সীমাবদ্ধ লেখাপড়ার দেয়াল ভেঙে বুঝিয়ে দিলেন; জ্ঞান অর্জনের সমাপ্তি নেই। একটি ব্যতিক্রমী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে জামেয়া দারুল মা’রিফকে নিয়ে তিনি যে স্বপ্ন দেখতেন; কর্মদক্ষতায় সকলের কাছে তিনিই প্রেরণা ও স্বপ্ন হয়েছিলেন। তিনি ছিলেন উদার, ইতিবাচক, কর্মঠ ও অবিচল।
একাডেমিক সম্পর্কের বাইরেও তিনি তাঁর সম্পর্ককে সুবিশাল করেছিলেন। পরিপক্ষ ও অবিতর্কিত একটা ধারায় তিনি নিজেকে সমাদৃত রাখতে পেরেছিলেন।
তাঁর পরিমার্জিত ও সতর্ক কথাবার্তার কারণে কাছের কেউ কখনো দূরে সরে যায়নি। ছোট-বড় সকলকে আপন করে নিতেন।
একজন আমলদার আলেম হয়ে, নিজেকে যোগ্যতার শিখরে প্রতিষ্ঠিত করে, হাজারো ছাত্রের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবেন।
মহান আল্লাহ তাঁর বর্নাঢ্য জীবনকে আমাদের জন্য আলোকবর্তিকা হিসেবে গ্রহণ করুন। তাঁর প্রতি সাদাক্বাহ হিসেবে কবুল করুন।
লেখক: আলেম, খতিব ও সমাজচিন্তক
এমএম/