প্রফেসর ডা. আলতাফ সরকার: বর্তমানে আমাদের বিভিন্ন বদ অভ্যাসের কারণে বেশির ভাগ সময় ব্যথায় ভুগে থাকি। শুধু ব্যথা নয় বদ অভ্যাসের কারণে শ্বাসকষ্ট, বদহজম, সারকুলেটরি সিস্টেম সর্বোপরি শারীরিক সমস্যা দেখা দিচ্ছে।
গবেষকরা বলছেন- প্রতি দুই জন পূর্ণ বয়স্ক লোকের মধ্যে একজন মাস্কুলোস্কেলিটাল অসুস্থতায় ভুগছেন। গবেষণায় দেখা গেছে, সারা বিশ্বে ডিজএ্যাবিলিটি তৈরিতে মাস্কুলোস্কেলিটাল অসুস্থতার অবস্থান সর্বোচ্চ দ্বিতীয় স্থানে।
আসুন জেনে নিই এমন ৫টি বদ অভ্যাস সম্পর্কে যা আমাদের কোমরের ব্যথার কারণ:
১. পেছনের হিপ পকেটে মানিব্যাগ ব্যবহার করা: পেছনের পকেটে মানি ব্যাগ ব্যবহার করলে আমাদের পেলভিস টুইস্ট হয়। পাইরিফরমিস মাসেলের উপর চাপ পড়ে ফলে সায়াটিকা, পায়রিফরমিস সিনড্রম এবং কোমর ব্যথা হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
২. কাঁধে ভারী ব্যাগ বহন করা : বর্তমানে আমরা প্রায় সবাই কাঁধে ভারী ব্যাগ বহন করে থাকি। ব্যাগের মধ্যে থাকে যেমন- ওয়ালেট, মোবাইল ফোন, নোট বুক, আইপ্যাড, মেকআপ বক্স, ল্যাপটপ ইত্যাদি। এছাড়া আজকাল দেখা যায় বাচ্চারা কাঁধের ব্যথায়, পিঠের ব্যথায় ভুগছে শুধু বেশি ওজনের ব্যাগ বহন করার জন্য। গবেষকরা বলছেন- বাচ্চারা তার ওজনের ১৫% এর বেশি ওজন কাঁধে বহন করবে না। বেশি ওজন বহন করায় টেনশন হেডেক, কাঁধে ব্যথা, ফরোয়ার্ড হেড পোশ্চার ইত্যাদি হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
৩. ভুল জুতার ব্যবহার: আমরা অনেকেই আরামদায়ক বা অয়েল ফিটেড জুতা ব্যবহার করি না। বিশেষ করে নারীরা বর্তমানে অনেক উঁচু হিল পরে । উচুঁ হিল পরার ফলে ওয়াকিং গেট অর্থাৎ হাঁটার ভঙ্গি পরিবর্তন হয়। এছাড়া উঁচু জুতার ব্যবহারে কোমর, হিপ, হাঁটু এবং পায়ের গোড়ালির উপর বাড়তি চাপ পড়ে । ফলে কোমর ব্যথা, হাঁটু ব্যথা, পায়ের গোড়ালি ব্যথা তৈরি হয় ।
৪. দীর্ঘ সময় বসে থাকা: গবেষণায় দেখা গেছে, আমরা প্রতিদিন গড়ে ১০ ঘণ্টা বসে থাকি। আরেকটি গবেষণায় বলা হয়েছে একজন প্রাপ্তবয়স্ক লোক তার জীবনের ৫০-৭০ ভাগ সময় বসে কাটায়। দীর্ঘসময় বসার ফলে কোমরের অর্থাৎ লামবারের লোরডোটিক কার্ভ কমে যায়, মেরুদণ্ডে সেন্টার অব গ্রাভেটি পরিবর্তন ফলে স্পাইনে ও ডিক্সে চাপ পড়ে এবং কোমর ব্যথা হয় ।
৫. ভুল উপায়ে শারীরিক ব্যায়াম: ব্যায়ামের সঠিক নিয়ম না জেনেই অনেক সময় আমরা প্রয়োজন অতিরিক্ত ব্যায়াম করি। আমরা জানি না কোন ব্যায়াম আমাদের জন্য সঠিক আর কোনটি ক্ষতিকর। অবশ্যই যেকোনও শারীরিক ব্যায়ামের পূর্বে একজন ফিজিওথেরাপি চিকিৎকের পরামর্শ নিতে হবে ।
লেখক : মাস্কুলোস্কেলিটাল ডিজঅর্ডারস বিশেষজ্ঞ
আরএম/