সানাউল হক সানি
সাংবাদিক
ঘটনাটি শুনেছেন নিশ্চয়ই! জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্রাঙ্কের মধ্যে নবজাতকের সন্ধান মিলেছে। অনেক চেষ্টা করেও বাঁচানো যায়নি। সন্তানের মা হাসপাতালে ভর্তি হলেও জন্মদাতা পলাতক। দু'জনেই জাবির শিক্ষার্থী। প্রশ্ন উঠতেই পারে, এ মৃত্যুর দায় কার?
অবাক করা তথ্য হলেও প্রতিবছর দেশে ১৫ থেকে ২০ লাখ এবরশন করানো হয়। আর এমআর করা হয় ৫ থেকে ৬ লাখ। সবমিলিয়ে প্রতিবছর বাচ্চা নষ্টের পরিমাণ ২০ থেকে ২৫ লাখ। যেখানে দেশে মোট গর্ভের সংখ্যাই ৫০ থেকে ৫৫ লাখ।
রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৮ সালেই রাস্তাঘাটে, ডাস্টবিনে শতাধিক অজ্ঞাত নবজাতকের লাশ পাওয়া গিয়েছিল। আর কত লাশ যে রাতের আধারে শিয়াল/কুকুরের খাদ্য হয় তা হিসেবের বাইরে।
বিষয়টি উদ্বেগজনক হলেও সত্যি। রাজধানীতে লিভ টুগেদারের সংখ্যা যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে, ঠিক তেমনি বৃদ্ধি পাচ্ছে এবরশনের সংখ্যাও। কারো ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করছিনা।
সবচেয়ে চিন্তার দিক হল, এবরশন পরবর্তী জটিলতায় মাতৃমৃত্যুর হারও বাড়ছে। ঘটছে আত্নহত্যার ঘটনা। অবিবাহিত তরুণীরা লোকলজ্জার ভয়ে অসুস্থ হলেও চিকিৎসা করান না। পরে হতাশা জেকে বসলে সমাধান খোঁজেন আত্নহত্যায়।
যে দেশে তরুণ-তরুণীরা ১৪/১৫ বছরে সেক্সুয়াল ম্যাচুরড হয়, সেখানে বিয়ের বয়স সরকারীভাবে ১৮/২১ বছর। আর স্বাবলম্বী হয়ে বিয়ে করতে ৩০/৩২ বছরও পার হয়ে যায়। হাস্যকরও বটে। এ নিয়ে কোনও প্রচারণা হয়না। এই এবরশন আর এমআর ঠেকানোর জন্য কোনও বহুজাতিক কোম্পানিকে এগিয়ে আসতে দেখিনা।
উল্টো কাছে আসার সাহসী গল্পের চিত্রনাট্য হয়। কাড়ি কাড়ি টাকা ঢালে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো। তরুণ-তরুণীদের পৃষ্ঠপোষকতা করে অনেক কাছে আসতে। কিন্তু এই কাছে আসার গল্পের পিছনের গল্প কেউ তুলে ধরেনা। তুলে ধরে না ধর্ষণ, এবরশনের গল্পগুলোও।
পৃথিবীতে আগমনের বছর না পেরোতেই ধর্ষণের শিকার হওয়া শিশু, ছয়তলা বিল্ডিংয়ের ছাদ থেকে ফেলে দেওয়া নবজাতক, শিয়াল-কুকুরেরর খাদ্য হতে যাওয়া ডাষ্টবিনে পরে থাকা নিস্পাপ মুখগুলোর গল্প দিয়ে কেউ চিত্রনাট্য লিখবেনা।
এখানে সস্তা প্রচার নেই। নেই বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর কোটি টাকার বিজনেস পলিসি। কাছে আসার সাহসী গল্পগুলো সাহসীই হয়...তবে একটি সাহসী গল্পের আড়ালে অনেকগুলো গল্প থাকে যা কখনোই কোথাও প্রকাশিত হয়না।
যারা বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে বিশ্বাসী তাদের সঙ্গে কোনও ডিবেট নেই।
লেখক: স্টাফ রিপোর্টার, দৈনিক আমাদের সময়।
(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)
আরএম/