আওয়ার ইসলাম: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানবিকী অনুষদে মাদরাসা-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে করা ভর্তি বৈষম্য দূর করতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
সোমবার এক রায়ে হাইকোর্ট এ প্রক্রিয়াকে বৈষম্যমূলক বলে আখ্যায়িত করেছে এবং মাদরাসার শিক্ষার্থীদেরকে তাদের সংশ্লিষ্ট বিভাগের (মানবিক, বিজ্ঞান, বাণিজ্য যেটাই হোক) সাথে পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ প্রদান করতে বলেছেন।
গতকাল বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার (আইন) মাহতাব-উজ-জাহিদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ বলেন, ‘হাইকোর্টের এ রকম একটি আদেশের কথা শুনেছি। লিখিত কপি হাতে এলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
প্রসঙ্গত, কলা ও মানবিক অনুষদে ভর্তির ক্ষেত্রে বৈষম্য করা হচ্ছে দাবি করে গত বছরের ২০ অক্টোবর উকিল নোটিশ প্রদান করে তিন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী (সাজ্জাদুল ইসলাম, মো. নওসাজ্জামান ও রাকিব হোসেন)। উকিল নোটিশের জবাব না দেয়ায় ২৫ অক্টোবর হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। পরে ৪ নভেম্বর এ বিষয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: জাবিতে মাদরাসা শিক্ষার্থীদের প্রতি বৈষম্য দূর হবে কবে?
এদিকে বাদী পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার ইমরান সিদ্দিকী বলেছেন, ‘রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি এখানো হাইকোর্ট প্রকাশ করেনি। তা এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে প্রকাশ করা হবে। তবে মৌখিক আদেশে বলা হয়েছে, ভর্তির ক্ষেত্রে কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি ক্যাটাগরিতে বিভক্ত করা বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ পরিপন্থী।
এ বিষয়টি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ২৭নং ধারা “আইনের দৃষ্টিতে সমতা” এর পরিপন্থি। এ ছাড়া মাদরাসা-শিক্ষার্থীদের থেকে খারাপ ফলাফলধারী কলেজ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হচ্ছে। ফলে মেধার অবমূল্যায়নও হচ্ছে।’
উল্লেখ্য, অভিযোগ আছে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ছয় ধরনের কোটায় ছাত্রছাত্রী ভর্তি করা হয়। তার মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় প্রতি বিভাগে চারটি আসন রয়েছে। এ ছাড়া খেলোয়াড় কোটা, সংস্কৃতি কোটা, প্রতিবন্ধী কোটার প্রতিটিতে ১০টি করে আসন রয়েছে।
এ বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে ব্যতিক্রমী একটি কোটা। আর তা হলো উপাচার্য কোটা। প্রতিবছর উপাচার্য তার নিজ ক্ষমতাবলে ২০টি আসনে পছন্দের শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে পারেন। জানা গেছে, এ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিটি কোটায় ভর্তিতে ভর্তি পরীক্ষায় নির্ধারিত পাস (৪০ শতাংশ) নম্বর পেতে হয়।
নানাম কোটা ফিলাপের পর এই অল্পসংখ্যক সিটের জন্য লড়াই করতে হয়ে সব শিক্ষার্থীর। এ নিয়ে চলে ভর্তিযুদ্ধ। তবে এই ভর্তিযুদ্ধে কলেজের শিক্ষার্থীদের সাথে সমান সুযোগ পান না আলিয়া মাদরাসা শিক্ষার্থীরা।
জাবি প্রশাসন আলিয়া মাদরাসা, কারিগরি শিক্ষা ও ইত্যাদি বিষয়কে একত্রিত করে তাদের জন্য অল্পকিছু সিট রাখা হয়েছে। যা মাদরাসা শিক্ষার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত নয়।
আরএম/