আওয়ার ইসলাম: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে এক শিক্ষার্থীকে ৩৮টি ভোট দিতে হবে। তার মধ্যে কেন্দ্রীয় সংসদে ২৫টি এবং হল সংসদে ১৩টি পদে ভোট দিতে হবে। কেন্দ্রীয় সংসদে ২২৯ প্রার্থীর মধ্যে ২৫ জনকে এবং হল সংসদে গড়ে ৩০ জনের মধ্যে ১৩ জনকে প্রতিনিধি হিসেবে বেছে নেবেন ভোটাররা।
আগামী সোমবার (১১ মার্চ) সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলবে। সেদিন সব ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ রাখা হয়েছে।
৬ ঘণ্টায় প্রায় সাড়ে ১৬ লাখ ভোট গ্রহণের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, ৪৩ হাজার শিক্ষার্থীর ভোট দেয়ার এ সময় যথেষ্ট নয়। ছাত্রলীগ ছাড়া প্রায় সব ছাত্র সংগঠনই বলছে, নির্ধারিত এ সময়ের মধ্যে এত ভোটারের ভোট গ্রহণের সক্ষমতা নেই বিশ্ববিদ্যালয়ের।
সেজন্য ভোট গ্রহণের সময় অন্তত ৪ ঘণ্টা বাড়ানোর দাবি তাদের। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, এখন আর ভোট গ্রহণের সময় বৃদ্ধির সুযোগ নেই।
চূড়ান্ত ভোটার তালিকা অনুযায়ী, ডাকসু ও হল সংসদের মোট ভোটার ৪৩ হাজার ২৫৬ জন। কেন্দ্রীয় ও হল সংসদ মিলিয়ে প্রার্থী রয়েছেন ৭৩৮ জন। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় সংসদে ২৫ পদের বিপরীতে ২২৯ জন এবং হল সংসদে ১৩টি করে ২৩৪ পদের বিপরীতে ৫০৯ জন।
এর মধ্যে কেন্দ্রীয় সংসদে ভিপি পদে ২১ জনের মধ্য থেকে একজন, জিএস পদে ১৪ জনের মধ্য থেকে একজন এবং এজিএস পদে ১৩ জন থেকে একজনকে প্রতিনিধি হিসেবে বেছে নেবেন শিক্ষার্থীরা।
এর বাইরে স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক পদে ১১, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে ৯, কমনরুম ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে ৯, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক পদে ১১, সাহিত্য সম্পাদক পদে ৮, সংস্কৃতি সম্পাদক পদে ১২, ক্রীড়া সম্পাদক পদে ১১, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক পদে ১০, সমাজসেবা সম্পাদক পদে ১৪ জন থেকে একজন করে এবং সদস্য পদে ৮৬ জন থেকে ১৩ জনকে বেছে নেবেন ভোটাররা।
১৮টি হল সংসদে ১৩টি করে মোট ২৩৪টি পদ রয়েছে। আর এই পদের বিপরীতে প্রার্থী রয়েছেন ৫০৯ জন। গড়ে প্রায় ২৯ প্রার্থী রয়েছেন একেকটি হলে। অর্থাৎ হল সংসদে প্রতিনিধি নির্বাচনের জন্য একজন শিক্ষার্থীকে ২৯ জনের মধ্য থেকে ১৩ জনকে বেছে নিতে হবে।
ফলে কেন্দ্রীয় ও হল সংসদ মিলিয়ে তাকে মোট ভোট দিতে হবে ৩৮টি। স্বল্প সময়ে এত বড়সংখ্যক ভোটারের ভোট গ্রহণ নিয়ে শঙ্কা ক্রমশই বাড়ছে। ফলে ২৮ বছর পর ১১ মার্চ অনুষ্ঠেয় ভোটের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ভাবিয়ে তুলেছে সংশ্লিষ্টদের।
এ বিষয়ে জানতে চেষ্টা করেও কথা বলা যায়নি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও ডাকসুর সভাপতি অধ্যাপক ড. মুহা. আখতারুজ্জামান ও ডাকসু নির্বাচনের প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক ড. এসএম মাহফুজুর রহমানের সঙ্গে। কথা বলতে রাজি হননি অন্য দুই রিটার্নিং কর্মকর্তাও।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী বলেন, এখন আর সময় বাড়ানোর সুযোগ নেই। তবে কেন্দ্রগুলোয় পর্যাপ্তসংখ্যক বুথ থাকবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কেন্দ্রে উপস্থিত হলে যতক্ষণ পর্যন্ত ভোটার শেষ না হবে, ততক্ষণ ভোট গ্রহণ চলবে। ছাত্রলীগকে সুবিধা দেয়ার জন্য নয়, বরং নির্বাচন প্রক্রিয়াকে একটি কাঠামোর মধ্যে আনতেই এমন সিদ্ধান্ত।
এএ