বাংলাদেশে প্রায় ৬৫ হাজার প্রাথমিক স্কুল রয়েছে। তাতে অধিকাংশ শিক্ষার্থী মুসলমান। অথচ তাদের ধর্ম শিক্ষা দিচ্ছেন স্কুলের সাধারণ শিক্ষক। কোনো কোনো ক্ষেত্রে অন্য ধর্মাবলম্বীরও ইসলাম পড়ানো ঘটনা রয়েছে।
সম্প্রতি ময়মনসিংহ-৯ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আবেদিন খান তুহিন কওমি মাদরাসার ছাত্রদের প্রাইমারি স্কুলের ধর্ম শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের কথা বলেছেন। দাবি জানিয়েছেন দেশের উলামায়ে কেরামগণও।
এ বিষয়ে শিক্ষাবিদ আলেম ও সাংবাদিক মাওলানা ওবায়দুর রহমান খান নদভীর সঙ্গে কথা বলেন আওয়ার ইসলামের সম্পাদক হুমায়ুন আইয়ুব।
তিনি বলেন, নান্দাইলের এমপি আনোয়ার আবেদিন খান তুহিন সংসদে কওমী মাদরাসার শিক্ষার্থীদের স্কুলের ধর্ম শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের কথা বলেছেন। এটা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের দাবী। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যখন প্রথম ১৯৯৬ তে ক্ষমতায় আসেন তখন এক সম্মেলনে বলেছিলেন, ৭০হাজার প্রাইমারি স্কুলে আলেম নিয়োগ দিবেন। এটা ওনার ওয়াদা।
বৃটিশ আমলে স্কুল-কলেজ বা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ধর্ম শিক্ষক ছিল। তাদের মৌলবি স্যার বলে ডাকা হত। এ মৌলবি স্যাররা ছেলেদের আমল-আখলাক, নামাজ, রোজা শিক্ষা দিত। তারপর সেটা চলে গেল। প্রধানমন্ত্রীর যে সমাজ গঠনের নীতি তা তার সহায়ক।
প্রতিটি জায়গায় নিজ নিজ ধর্মের শিক্ষা স্কুলে দেয়া হয়। শুধু মাত্র নাস্তিক্যবাদ ও পশ্চিমারা (ধর্ম) বলে, শিক্ষার্থীদের ধর্ম শিক্ষা দেয়া যাবে না। তারা বড় হয়ে ধর্ম বেছে নিবে, তাদের ওপর ধর্ম চাপিয়ে দেয়া যাবে না।
কিন্তু কেন? একজন ছেলেকে নীতি নৈতিকতা শিক্ষা দিলে, আদব-কায়দা, মানবতা, মূল্যবোধ শিক্ষা দিলে সমস্যা কোথায়।
এ শিক্ষা ব্যবস্থা বৃটিশ আমলে ছিল, পাকিস্তানি আমলে ছিল, বঙ্গবন্ধুর আমলেও ছিল। পরে কোনো সরকারের আমলে নাস্তিকমনা শিক্ষামন্ত্রী এসে এটা পরিবর্তন করেছে।
প্রধানমন্ত্রী সকল স্তরে ধর্মীয় নৈতিকতা শিক্ষা বাধ্যতামূলক করেছেন। তিনি ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি নৈতিকতা শিক্ষার কথা বলেছেন। কারণ, ধর্মীয় শিক্ষা হলে তখন শুধু কুরআন পড়ে, কিন্তু কুরআনের নৈতিক শিক্ষা অর্জন করে না।
আর ধর্মীয় ও নৈতিকতা শিক্ষা না করা বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বড় সমস্যা। আমাদের সমাজে অনেক শিক্ষিত লোক রয়েছে, তারপরেও বর্তমান সময়ে ঘুষ, দূর্নীতি, ধর্ষণের মত ঘটনা অহরহ ঘটছে।
ধর্মীয় শিক্ষা এটা আদর্শিক শিক্ষা, গুরুমুখি শিক্ষা। যারা ধর্ম পালন করেন না তাদের দ্বারা হয় না। এর জন্য আইকন লাগে। আমরা এমনও দেখেছি শিক্ষক না থাকার কারনে অমুসলিমরা ধর্ম শিক্ষা দিচ্ছে। এটা বাংলা, অংক না, যে কেউ এটা পড়াতে পারবে। যেটা ওজু করে পড়তে হয় সেটা অন্য ধর্মের লোক কিভাবে পড়ায়!
যদি কওমি মাদরাসার ছাত্ররা শিশুদের ইসলাম সম্পর্কে শিক্ষা দেয়, তাহলে তারা অন্যভাবে ইসলাম শিখে ইসলামের নামে নৈরাজ্য করতে পারবে না।
তুহিন তরুণ মানুষ, তিনি নানদাইলে তৃতীয়বারের মত এমপি হয়েছেন। আলেম ওলামার কাছকাছি থাকেন। তার এ দাবি অত্যন্ত সুচিন্তিত। এ চিন্তা সকল এমপি মন্ত্রীদের মধ্যে আসুক।
আরআর