গত ৭ জানুয়ারি ময়মনসিংহ-৯ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আবেদিন খান তুহিন সংসদে নিজ বক্তব্যে প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কওমি শিক্ষার্থীদের ধর্ম শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন। এর পর থেকেই বিভিন্ন মহলে চলছে নানা জল্পনা।
এ নিয়ে ঢাকা তেজগাঁও রেলওয়ে মাদরাসার শাইখুল হাদিস ও ইসলামি ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক ড. মাওলানা মুশতাক আহমদ ও এম ই এস ওমরগণী কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সাংস্কৃতিক বিভাগের সাবেক অধ্যাপক, ড. মাওলানা আ ফ ম খালিদ হোসেন এর সাথে কথা বলেছেন আওয়ার ইসলামের সম্পাদক হুমায়ুন আইয়ুব।
ড. মাওলানা মুশতাক আহমদ বলেন, জাতীয় সংসদে দেশের প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কওমি শিক্ষার্থীদের ধর্ম শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আবেদিন খান তুহিন। আমি তাকে সাধুবাদ জানাই। সরকার এ দেশের জন্য অনেক কাজ করেছেন। তার পাশাপাশি যদি এ কাজটিও করেন তাহলে, এদেশের সাধারণ মানুষ, দেশ, জাতি ও কওমি মাদরাসার শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবে।
কারণ তাদের কাছে টাকা-পয়সা মূখ্য বিষয় নয়। তারা খুব অল্প বেতনে দিনরাত শিক্ষা দিয়ে আসছেন। তাছাড়া তাদের মধ্যে আখেরাতমুখিতা, পরকালকামিতা, মানবতাবোধ এবং শিক্ষার্থীদের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার মনোভাব রয়েছে। যাদের মধ্যে এ মনোভাব রয়েছে, তাদের যদি ধর্ম শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয় তাহলে এর সুফল দেশ, জাতি ভোগ করবে।
বর্তমানে স্কুলে যারা ধর্ম পড়ায়, তারা নিজেরাই ধর্মের ব্যাপারে উদাসিন মন্তব্য করে তিনি বলেন, বর্তমানের ধর্মশিক্ষকরা ঠিকভাবে আমল করে না, কুরআন তেলাওয়াত ক’জনের শুদ্ধ তা জানার বিষয়। কিন্তু কওমি মাদরাসার ছাত্ররা আমলের ব্যাপারে উদাসীন নয়, তাদের কুরআন সহিহ শুদ্ধ। কওমি মাদরাসায় তো তাদের সনদ দেয়া হয় না যাদের কওরআন তেলাওয়াত শুদ্ধ নেই। অবশ্য সরকারি মাদরাসার মধ্যে কিছু মাদরাসা আছে যারা শুদ্ধ কুরআন তেলাওয়াতের ওপর গুরুত্ব দিয়ে থাকেন।
কওমি মাদরাসার শিক্ষর্থীরা ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সবার প্রতি কল্যাণের মানসিকতা রাখে। তারা ইসলাম পড়াবে ঠিক কিন্তু অন্য ধর্মকে আঘাত করবে না। ইসলাম সর্বোচ্চ আদর্শ এটা শিশু মনে তুলে ধরবে।
ড. আ. ফ. ম. খালিদ হোসেন বলেন, আনোয়ারুল আবেদিন খান তুহিন সংসদে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কওমি শিক্ষার্থীদের ধর্ম শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের দাবি তুলেছেন। এটা ইতিবাচক প্রস্তাব। মাদরাসার অনেক শিক্ষার্থী রয়েছে তাদের মাধ্যমে ধর্ম শিক্ষা দেয়া হলে স্কুলের কোমলমতি শিশুদের সামাজিক ও নৈতিক উন্নয়নে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।
তিনি বলেন, যেহেতু কওমি শিক্ষার্থীরা আমল আখলাকে মজবুত। তাই তাদের মাধ্যমে পাঠদান করালে আগামী প্রজন্ম সুস্থ ও আদর্শ জাতি হিসেবে গড়ে উঠবে এবং তাদের মধ্যে সামাজিক মূল্যবোধ নৈতিকতা বৃদ্ধি পাবে বলে আশা তরা যায়।
শ্রুতি লিখন: আবদুল্লাহ আফফান