আওয়ার ইসলাম: বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড নাইকি সেল্ফ-লেইসিং বা ফিতা বাঁধা ট্রেইনার জুতা বাজারে আনতে যাচ্ছে, যা গ্রাহকদের পায়ের আকৃতি অনুযায়ী সহজেই ফিট হয়ে যাবে। মানে, এই জুতো স্মার্টফোনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে, যাকে বলা হয়ে থাকে ফিউচারিস্টিক ফুটওয়্যার সংস্করণ।
এই জুতো তৈরির ধারণা পাওয়া যায় ১৯৮৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ব্যাক টু দ্য ফিউচার পার্ট টু’ সিনেমায়। পরে নাইকি বিস্তর গবেষণার পর ২০১৬ সালে সেই জুতোর একটি বাস্তব রূপ দিতে সক্ষম হয়। জুতোটি এই ফেব্রুয়ারিতে বাজারে ছাড়ার কথা রয়েছে।
জুতোটি কিভাবে কাজ করে?
এই জুতোর প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো ব্যবহারকারীরা চাইলেই এর ফিটিংসে নিজের মতো পরিবর্তন আনতে পারবেন। জুতোর মাপ ইচ্ছামত কাস্টমাইজড করতে পারবেন। আর এই পুরো কাজটাই করা যাবে স্মার্টফোন অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে। সেখানে এই উপযুক্ত মাপগুলো সংরক্ষণ রাখা যায়।
জুতোর ফিতাকে অ্যাক্টিভেট করার জন্য এর মধ্যে আলাদা করে কোনও বাটন বা বোতামের প্রয়োজন হয় না। জুতোটির সর্বশেষ এই সংস্করণের নাম দেওয়া হয়েছে ‘নাইকি অ্যাডাপ্ট’ এবং এর দাম ধরা হয়েছে ৩৫০ মার্কিন ডলার। লাইভ স্ট্রিমিং অ্যাপ ‘টুইচ’-এ এই জুতাটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হয়।
কাদের জন্য জুতো?
জুতোটি মূলত খেলোয়াড়দের কথা ভেবে তৈরি করা হয়েছে। বিশেষ করে বাস্কেটবল খেলায় এর প্রয়োজনীয়তা সবচেয়ে বেশি।
এ বিষয়ে নাইকির ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর এরিক অ্যাভার বলেন, ‘নাইকি অ্যাডাপ্টের পরীক্ষামূলক ব্যবহারে আমরা আন্তর্জাতিকভাবে বাস্কেটবল খেলাটিকে প্রথমে বেছে নিয়েছি। কেননা, এই খেলার অ্যাথলেটদের এ ধরনেরর জুতোর প্রয়োজনীয়তা সবচেয়ে বেশি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাস্কেটবল খেলার সময় খেলোয়াড়দের পায়ের মোশন দ্রুত পরিবর্তিত হয়। কখনো তাদের পায়ে রক্তের প্রবাহ বাড়াতে জুতোটি শিথিল থাকা প্রয়োজন আবার কখনও বা আঁটোসাঁট হওয়া প্রয়োজন।’
জুতোর ফিটিংস আপনাআপনি পরিবর্তন করতে নাইকি এই বিশেষায়িত জুতোটি বাজারে আনছে, যা অ্যাথলেটদের খেলার অভিজ্ঞতাকে উন্নত করতে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন মিস্টার অ্যাভার।
ব্যবহারকারীরা সেখানে তাদের বিভিন্ন মুহূর্তে পায়ের বিভিন্ন মাপ সেট করে রাখতে পারবেন।
জুতোটি কিভাবে কাজ করে?
যখন ব্যবহারকারী তার পা জুতোয় ঢোকাবেন, তখনই জুতোয় থাকা কাস্টম মোটর এবং গিয়ার তার পায়ের স্নায়ু-চাপ বুঝে প্রয়োজন অনুযায়ী ফিটিংস অ্যাডজাস্ট করে নেবে। অ্যাপ্লিকেশনে তথ্যগুলো সংরক্ষিত থাকায় অ্যাথলেটরা চাইলে সেটা নাইকির সঙ্গে শেয়ারও করতে পারবেন।
‘ওয়েরেবল’ নামে একটি প্রযুক্তি বিষয়ক ওয়েবসাইটের সম্পাদক মাইকেল সাওহ বলেন, ‘স্পষ্টতই এটি ব্যাক-টু-ফিউচারের সেল্ফ লেইসিং জুতোর কথা আমাদের মনে করিয়ে দেয়। সেই সিনেমার প্রপস এখন বাস্তব হয়ে হয়ে পড়েছে।’
গত বছর যখন নাইকি এই জুতো নিয়ে আলোচনা করছিল তখন তাদের নিয়ে নানা কথাবার্তা হয়। তবে তাদের আশা, অনেক নাইকি স্নিকার-প্রেমী তাদের সংগ্রহে এই জুতোটি রাখতে চাইবে।
নাইকি বলছে, তারা এই প্রযুক্তি তাদের এই রেঞ্জের অন্য জুতোগুলোতে যোগ করবে। এতে তারা যেমন মানুষের নজর কাড়তে পারবে তেমনি জুতোগুলো সবার কাজেও আসবে।
তবে জুতোর মধ্যে নতুন এই প্রযুক্তি ভোক্তাদের তথ্য কিভাবে ব্যবহার করবে সে নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অনেকেই। অন্যান্য স্মার্ট ডিভাইসগুলোর তুলনায় নাইকি যেসব তথ্য ধারণ করে সেগুলো নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই। কারণ এটি শুধু ব্যবহারকারীর পায়ের ফিটিংসের বিষয়টিকেই গুরুত্ব দেয়। হার্টরেট বা স্বাস্থ্যের সার্বিক পরিস্থিতি নয়।
কেপি