মুনিফ আম্মার
সাংবাদিক
পল্লীকবির বাড়ি গিয়েছিলাম। ফরিদপুরে। সৈয়দ রিয়াদ আমাকে নিয়ে গিয়েছিলো৷ সুজন বাদিয়ার ঘাটের পাশেই কবির বাড়ি। বাড়িটি এখন আর বাড়ি নেই। মিউজিয়াম। ২০ টাকা টিকেট লাগে ঢুকতে। আমাদের অবশ্য একটাকাও লাগেনি।
দলে দলে মানুষ আসে। তবে কবিপ্রেমী মানুষ আর কবিকে জানতে আসা মানুষের আনাগোনা কম বলেই শুনেছি৷ অসীম দা বলেছেন। আফসোসও করেছেন একটু। আজকাল নাকি প্রেম করতে ছেলেমেয়েরা জোড়া বেঁধে ওই বাড়িতে যায়। রুম ভাড়া করে ডেটিং করে৷ এ কথার প্রমাণ আমার কাছে নেই।
অসীমদা'র কথা যদি সত্যি হয়, তাহলে ভীষণ আফসোস। কারণ ঐসব ডেটিং ফেটিংয়ে প্রেম নেই, ভোগ আছে। লালসা আর প্রলোভনের এইসব ভোগে দূর্গন্ধ ছড়ায়। কবির বাড়িকে এমন দূর্গন্ধযুক্ত করে রাখা দুঃখজনক।
বাড়ির সামনের দিকেই কবির সমাধী। আশে পাশে পরিবারের অন্য সদস্যরাও ঠাঁই নিয়েছেন। বাড়ির উঠোনজুড়ে চারটি ঘর। একটি ইট পাথরে ছাড়া বাকিগুলো টিনের। কোনোটাতে বাবা মা, আর কোনোটাতে কবির ভাই থাকতেন।
পেছন দিকে রান্না আর ঢেঁকিঘর আছে। ঘরগুলোর দেয়ালে দেয়ালে এখনও কবির উপস্থিতি। তার লেখা কবিতা, উক্তিতে ভরপুর। ভতরে ব্যবহৃত আসবাবপত্র থরে থরে সাজানো। এখানে সেখানে কবির ছবিও ঝুলতে দেখা গেছে।
বাড়ির সামনে দিয়ে বয়ে গেছে কুমার নদ। পাশেই জসীম মঞ্চ। এখানে মেলা হয় বছরে একবার। সেখানেও নাকি কবি চর্চার চাইতে ঢোল বাদ্যি দিয়ে আনন্দটাই বেশি হয়৷ মুড়ি মুড়কি আর হরেকরকম জিনিস কেনাবেচা হয়। বেচাকেনা ভালো৷ তবে কবিকে নিয়ে, কবির নামে হওয়া মেলায় তার চর্চার চাইতে অন্য কিছু বেশি হওয়া কাম্য নয়।
অল্প সময়ে ভালোমতো মিউজিয়াম দেখা শেষ হয় না। বাড়িতে ঘুরে আসা যায়। আমরা কবি বাড়িতে ঘুরে এসেছি। কিছু ভালোলাগা নিয়ে এসেছি, কিছু খারাপ লাগাও। এমনটাই তো হয়...।
আরআর