মাওলানা ইয়াহইয়া ইউসুফ নদভী
আলেম ও লেখক
বিনয়ের সাথে কয়েকটি কথা বলি : মাওলানা সাদ সাহেবের আজ বিজয় হয় নি, পতন হয়েছে। নিরীহ মাদরাসা ছাত্র আর উলামায়ে কেরামের গায়ে তারা হাত তুলেছে। লাঠিসোটা ও রড দিয়ে পিটিয়েছে। রক্তাক্ত করেছে। হিংস্রতার এক ভয়াল রূপ নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছে।
ওদের মুখে সন্ত্রাসীর ভাষা। ওদের লেখায় হিংস্রতার লাভা।
একটি ভিডিওতে দেখলাম, তুরাগের পানিকে আশ্রয়করে কোনোভাবে একদল ছাত্র পালিয়ে বাঁচার চেষ্টা করছে। আঘাতে আঘাতে জর্জরিত কিছু ছাত্রকে এ অবস্থায় দেখে সাধারণ মানুষের মুখে হাহাকার ফুটে উঠেছে।
এক সাদপন্থী গর্ব করে বলছিলো, সামনে আসছে সিফ্ফিন! আস্তাগফিরুল্লাহ! এসব কিসের তাবলিগ? ...
দুই. আজকের ভিডিওগুলো রেখে দিন। কে দোষী আর কে নির্দোষ, তার প্রমাণ হিসেবে।
তিন. উলামায়ে কেরাম এবং ছাত্রদের উপরই ছিলো এদের মূল আক্রোশ। বিপজ্জনক! ওরা কি ভুলে গেছে- লুহূমুল উলামা মাসমূমাহ?
চার. ময়দানের মাদরাসাটির উপরে এ কারণেই নেমে এসেছে ওদের রোষায়িত আঘাত! একজন জানিয়েছেন, মাদরাসার আসবাবপত্র ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে!
পাঁচ. পুলিশ কি ইচ্ছে করলে আজকের পরিস্থিতি সামাল দিতে পারতো না? এখানে ঝুলে আছে অনেক প্রশ্নবোধক চিহ্ন!
ছয়. যারা আহত হয়েছে, রক্ত ঝরিয়েছে, তাদের জন্যে সমবেদনা! আপনাদের রক্ত বৃথা যাবে না!
সাত. এক ভিডিওতে একজনকে বলতে শোনা গেছে- অনেকে শহীদ হয়েছেন! সত্যতা অবশ্যই যাচাই হবে! আশা করি এ ব্যাপারে সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ ও ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
আট. এভাবে মাঠ দখল করে কি সমাধানে পৌঁছা যাবে? লাঠিসোটা আর রড দিয়ে পিটিয়ে কাহাঁতক তাবলিগ করা যাবে?
যা সত্য তা ভাস্বর হবেই! সত্যকে আল্লাহই উপরে উঠিয়ে দেবেন!
নয়. সাদপন্থীদের এতো ক্ষোভ কেনো—আলেম-উলামা ও তালিবুল ইলমদের ওপর? কেনো এই আলেম-বিদ্বেষ? তোলাবা-বিদ্বেষ? মাদরাসা-বিদ্বেষ?
আজ কেনো তাঁদের রক্তে এরা হাত লাল করলো? এদের আগামী প্রজন্ম কি তাহলে মাদরাসায় আর পড়বে না? নাকি এরা আলাদা মাদরাসা কায়েম করবে? ... চিন্তার বিষয়!
আজ এরা কথায় কথায় বলছে— ‘হেফাজতি’! বেন্দা দেখিয়ে বলছে— ‘উলামায়ে কেরাম পেটাবো’!
এরা কার সূতোয় নড়ছে? কার ইশারায় এই বিপজ্জনক ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে? ...
দশ. আমি জমহুর উলামায়ে কেরামের সাথে আছি! না, সাদ সাহেবের তাবলিগ আমি মানি না! তার অনুসারীরা কেউ আমার বন্ধু থাকলে আমি লজ্জাবোধ করবো!
এগারো. মুহতারাম উলামায়ে কেরামের শীর্ষ মুরব্বীরা বসে গভীরভাবে আজকের ঘটনা বিশ্লেষণ করুন! সময় থাকতে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করুন! নইলে আজকের ঘটনার আরও সহিংস পুনরাবৃত্তি হতে থাকবে! এটা কখনোই কাম্য হতে পারে না!
‘একসঙ্গে রক্তাক্ত জখমের এত রোগী টঙ্গী হাসপাতালে কখনো আসেনি’
আরআর