আব্দুল্লাহ আফফান ।।
নির্বাচন, মাহফিল, সেবা সংস্থা বা কোনো কোম্পানির প্রচারণা জন্য পোস্টার বা লিফলেট বানানো হয়। এসব লিফলেটের শুরুতে আরবি বা বাংলা লেখা থাকে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
স্কুল, কলেজ, মাদরাসা কিংবা কোচিংয়ে ভর্তি বিজ্ঞপ্তিতেও দেখা যায় বিষয়টি।
কোনো লেখার শুরুতে বিসমিল্লাহ লেখা বা কোনো কাজের শুরুতে বিমিল্লাহ পড়া হয় বরকত লাভের জন্য। কিন্তু পোস্টার লিফলেটে বরকত লাভের জন্য বিমসিল্লাহ লেখে বরং অনেক সময় অবরকত হাসিল করি আমরা।
আমরা যে লিফলেট মানুষকে দিই, তা পড়ে ফেলে দেয় অধিকাংশ জনই। ছোট ছোট বাচ্চারা মনের আনন্দে লিফলেট সংগ্রহ করে। তারপর তারা এটি দিয়ে খেলনা বানায়। যেগুলো পরবর্তীতে মানুষের পায়ে পড়ে। পড়ে থাকে অপরিচ্ছন্ন জায়গায়ও।
এতে আল্লাহ তায়ালার নামের অসম্মান হয়। আমরা ভালো উদ্দেশ্যে লিফলেটে বিসমিল্লাহ ব্যবহার করি। অথচ না জানার কারণে বা বেখেয়ালে এর মাধ্যমে বিসমিল্লাহর অসম্মানই করা হয়।
এ বিষয়ে কথা হয় শায়েখ জাকারিয়া ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের পরিাচালক মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ-এর সঙ্গে।
তিনি বলেন, যখন কোনো মানুষ ভালো কাজ শুরু করে, তখন বিসমিল্লাহ বলা সুন্নত। এটা একাধিক হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। তবে বিসমিল্লাহ পূর্ণ লেখা, মনে মনে বলা বা মুখে উচ্চারণ করে বলতে হবে এমন কোনো শর্ত নেই। হাদিসে বিসমিল্লাহ পড়ার কথা আছে।
তিনি বলেন, যেহেতু পোস্টার, লিফলেট মানুষ সংরক্ষণ করে না। তা বিলি করার পর মানুষের পায়ে পড়ে, এমন স্থানে পরে যার দ্বারা আল্লাহ নামের অসম্মান হয়, তাই পোস্টার বা লিফলেটে বিসমিল্লাহ না লেখা উত্তম।
তবে কেউ যদি বিসমিল্লাহ দ্বারা পোস্টার বা লিফলেট শুরু করতে চায়। তাহলে মুখে বিসমিল্লাহ বলবে তারপরে লিফলেট বা পোস্টারের কাজ শুরু করবে।
তাছাড়া কেউ যদি বিসমিল্লাহ লিখতে চায় তাহলে বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম না লিখে লিখবে বিসমিহি তায়ালা। এখানে যেহেতু আল্লাহর নাম নেই, রহমান, রহিমও নেই তাই এর দ্বারা আল্লাহর নামের সম্মান ক্ষুন্ন হবে না এবং এর দ্বারা বিসমিল্লাহর সুন্নত আদায় হয়ে যাবে।
এ বিষয়ে আরো কথা হয় মাওলানা মুফতি জাবের হুসাইন-এর সাথে। তিনি জামিয়া কারিমীয়া আরাবিয়া রামপুরা ঢাকার শাইখুল হাদিস।
তিনি বলেন, যেসব জিনিস মানুষ সংরক্ষণ করে না বা সংরক্ষণে থাকে না, সেটা পোস্টার, লিফলেট, ব্যানার, ফেস্টুন, চিঠিপত্রই হোক না কেন সেসব জায়গায় আল্লাহর নাম, কুরআনের আয়াত লেখা উচিত নয়।
এটা লেখার কারণে কুরআনের আয়াতের, আল্লাহর নামের অসম্মানের কারণে যে গুনাহ হবে তার বড় অংশের গুনাহ তাদের আমল নামায় লেখা হবে। তবে কেউ যদি বিসমিল্লাহ লিখতে চায় তাহলে বিসমিহি তায়ালা বা বিসমিহি সুবহানাহু তায়ালা লিখবে।
তিনি বলেন, বর্তমানে বিসমিল্লাহর বদলে সংখ্যা যেমন ৭৮৬ লেখা হয়। এর দ্বারা বিসমিল্লাহর বরকত লাভ হবে না। এসব ভুল মানুষের মাঝে কালের পরিক্রমায় প্রচলন হয়ে গেছে।
আমাদের দৈনন্দিন কাজে এমন অনেক প্রশিদ্ধ ভুল রয়েছে। এসব জানার জন্য তিনি মাওলানা আবদুল মালেক লেখিত ‘প্রচলিত ভুল’ নামে একটি বই পড়ার কথাও বলেন মুফতি জাবের হুসাইন।
আরআর