শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
কাল যাত্রাবাড়ী মাদরাসায় মজলিসে দাওয়াতুল হকের ইজতেমা শেখ হাসিনা ভারতে বসে দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছেন: মজলিস মহাসচিব ডেঙ্গুতে এক সপ্তাহে ৩১ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ৬২৩০ মসজিদে নববীর আদলে হবে আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ: ধর্ম উপদেষ্টা খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত নতুন নির্বাচন কমিশনকে বিগত কমিশন থেকে শিক্ষা নিতে হবে: মুফতী ফয়জুল করীম লালপুরে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে জমি দখল ও বাড়ি ভাংচুরের অভিযোগ জনতার চেয়ারম্যান সৈয়দ তালহাকে সুনামগঞ্জ ৩ আসনে জমিয়তের প্রার্থী ঘোষণা কুরআন-হাদিসের ভিত্তিতেই হতে হবে সংস্কার: বায়তুল মোকাররমের খতিব ইসলামী সঙ্গীত সম্রাট আইনুদ্দীন আল আজাদ রহ.-এর বাবার ইন্তেকাল

বৃক্ষ নিধনই পরিবেশ দূষণের মূল

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

তারেক সাঈদ

পৃথিবী আল্লাহর এক অকৃত্রিম সৃষ্টি। মানুষ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জীব। আল্লাহ তায়ালা মানুষের সুস্থ ও সাচ্ছন্দপূর্ণ জীবনযাপন এবং পরিবেশ সুরক্ষার জন্য পৃথিবীতে অসংখ্য গাছগাছালি, পাহাড়-উপত্যকা, বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী ও পাখি সৃষ্টি করেছেন।

কুরআনে আছে, তিনি পৃথিবীকে স্থাপন করেছেন সৃষ্টজীবের জন্যে। এতে আছে ফলমূল এবং বহিরাবরণবিশিষ্ট খর্জুর বৃক্ষ। আর আছে খোসাবিশিষ্ট শস্য ও সুগন্ধি ফুল। সূরা আর রাহমান, আয়াত ১০-১২।

আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে বৃক্ষের অবদান অনস্বীকার্য। বিজ্ঞান দ্বারা প্রমাণিত- বৃক্ষ আমাদের অক্সিজেন দেয় আর কার্বন ডাই-অক্সাইড নেয়। বৃক্ষ আমাদের খাদ্য দেয়, কাঠ দেয়, মাটির ক্ষয়রোধ করে। সর্বোপরি বৃক্ষ আমাদের পরিবেশকে সজীব ও সতেজ রাখে। পৃথিবীকে বাসযোগ্য করেছে এই বৃক্ষ।

বৃক্ষ নিধনে পরিবেশ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একটি সুস্থ পরিবেশের জন্য যেখানে মোট ভূখন্ডের ২৫% বনভূমি থাকা প্রয়োজন সেটি পৃথিবীর অনেক দেশেই নেই। ক্রমবর্ধমান মানুষের চাহিদা মেটাতে ব্যাপক পরিমানে বৃক্ষ নিধন চলছে।

বাংলাদেশের জনসংখ্যা ক্রমউন্নতির ফলে বনজ সম্পদের ওপর ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশে ১৯৮০ এর দশকে বন ধ্বংসের পরিমান ছিলো বার্ষিক ৮,০০০ হেক্টর। সম্প্রতি এক জরিপে দেখা গেছে এ হার ৩৭,০০০ হেক্টরে দাঁড়িয়েছে।

এ পক্রিয়া অব্যাহত থাকলে দেশের এক বিরাট অংশ মরুভূমিতে পরিণত হবে। সূত্র: ইসলামিক ফাউন্ডেশন পত্রিকা ৪১ বর্ষ, ৪র্থ সংখ্যা, এপ্রিল জুন ২০০২

এর ফলে পরিবেশ তার ভারসাম্য হারাচ্ছে। কখনো অতিবৃষ্টি কখনো অনাবৃষ্টি। বন্যা প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এভাবে হাজার হাজর প্রাণী ও উদ্ভিদ ধ্বংস হচ্ছে।

গাছগাছালি কেটে বনভূমি উজার করে ফলে পরিবেশের বিপর্যয় ঘটে। এ জন্য রাসূল সাঃ গাছগাছালি লাগানোর ব্যপারে উৎসাহিত করেছেন।

তিনি বলেন, যে ব্যক্তি মৃত ভূমিকে জীবিত করে অর্থাৎ পতিত জমিকে আবাদযোগ্য করে তুলে এতে তার জন্য পুরস্কার রয়েছে। (মাউসুআতুল হাদিস, মাকতাতুস সালাম, হাদিস নং ৩৬)

রাসূল সা. আরো বলেন, যে কোনো মুসলমান ফল বাগান রোপন করে বা ফসল চাষাবাদ করে আর তা থেকে পাখি কিংবা মানুষ বা জীবজন্তু খায় সেটি তার পক্ষ থেকে সাদকা বলে গন্য হবে। (সহীহুল বুখারী, হাদিস নং ২১৫২)।

রাসূল সা. গাছগাছালি কাটার ব্যাপারে সতর্কবানী ও উচ্চারণ করেছেন। বলেন, যে ব্যক্তি ফুল বা ফল দানকারী কোন গাছ কাটবে আল্লাহ তায়ালা তাকে উপুর করে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন। ( আবু দাউদ, হাদিস নং ৫২৩৯)

রাসূল সা. আরো বলেন, যদি নিশ্চিতভাবে জানে যে কিয়ামত এসে গেছে তখন যদি হাতের কাছে কোন চারা থাকে আর লাগানো সম্ভব হয় তাহলে তা লাগাবে। (মুসনাদে আহমদ)

সুন্দর জীবনের জন্য চাই সুন্দর পরিবেশ। পরিবেশ উন্নত হলে আমরা বিভিন্ন প্রকার জীবাণু ও দূষণমুক্ত হব। পরিবার, সমাজ ও দেশ উন্নতি লাভ করবে। সুতরাং আসুন আমরা সবাই বেশি বেশি বৃক্ষ রোপণ করে পরিবেশকে দূষণমুক্ত করি।

পরিবেশের ভারসাম্য ফিরিয়ে আনি। অক্সিজেনের মাত্রা বৃদ্ধি করি। আল্লাহ আমাদের সে তৌফিক দান করুন। আমিন।


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ