আবদুল্লাহ
শিক্ষার্থী
বাঙালির বাংলা বোঝার যোগ্যতার ওপর মাতম করতেই হয়। ছোটখাট ভুঁইফোঁড় নিউজ পোর্টালগুলো যখন এই নিউজ শেয়ার করে তখন এটা মেনে নাওয়াই যায়। কারণ view count এর ওপর ভিত্তি করে তারা advertisement revenue পায়।
লাইক ক্লিক যত হবে ততই ওদের ব্যবসা। তাই পেট চালানোর জন্য তিলকে তাল করেই ওদের সংবাদগুলো সাজাতে হবে। আমি এটা ভালো মন্দ নিয়ে মন্তব্য করতে যাব না এখন।
কিন্তু অবাক লাগে যখন দেখি প্রতিষ্ঠিত নিউজ এজেন্সি, টিভি চ্যানেল, নিউজ পোর্টালগুলো যখন এই নিউজটা পাব্লিশ করছে…! তাদের দায়িত্ববোধ নিয়েও শুধুশুধু প্রশ্ন তুলব না। কারণ ওটা নিয়ে চিন্তিত নন বলেই তারা এ দেশের সাংবাদিক।
কিন্তু তারা কি বাংলাও পড়তে পারেন না…?! কী লাভ তাহলে জার্নালিজমের থেকে অনার্স পাশ করা রিক্রুট রেখে?
সবাই গণহারে একই নিউজ কপি করছে… অথচ কেউ একটা বার পড়ে দেখছে না কি কথা বলা আছে নিউজে। হেডলাইনে যা দিয়েছে, সেটা সমর্থন করার মত একটা শব্দও যে নিউজে নেই এই ছোট্ট বিষয়টা বুঝার মত মেধা যাদের নেই, তাদের কাছ থেকে সমাজনীতি, রাজনীতি, অর্থনীতি নিয়ে বড়বড় বুলি শুনতে কেমন লাগে সেটা সচেতন মাত্রই অবহিত।
গুজবকে কীভাবে খবর বানাতে হয়, তার একটা প্রকৃষ্ট নমুনা হতে পারে গতকালের ইজতেমা স্থগিতের নিউজটি।
মূল খবরটা কি? একটু পড়ে দেখুন। বৈঠকে উপস্থিত অপর একটি সূত্র জানিয়েছেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের কথা বিবেচনা করে ইজতেমার তারিখ চূড়ান্ত না করার আহবান জানিয়েছেন মন্ত্রী মহোদয়।
তিনি বলেছেন, নির্বাচন যথা সময়ে হলে ইজতেমা করা যাবে। না হলে হয়তো ইজতেমা পেছানো লাগতে পারে। নির্বাচনের তারিখ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন নির্বাচন কমিশন তাই ইজতেমার তারিখ চূড়ান্ত বলে ঘোষণা না করাই ভালো।
আর কি ছড়াচ্ছে?!
আপনারা ফেবু বা গুগলে ‘বিশ্ব ইজতেমা স্থগিত’ লেখে সার্চ দিয়ে দেখুন। খুব সম্ভবত হাজার হাজার লিঙ্ক হয়ে গিয়েছে এতক্ষণে।
বিদেশেও খবরটা এভাবে যাবে। বিদেশী সাথীরাও চিন্তায় পড়ে যাবে ইজতেমা হবে কি হবে না।
একটা মিথ্যা বারবার বললে তা সত্যের মতই শোনায়।
ঢাকার মুহাম্মাদপুরে ২৮ জুলাই, ২০১৮ তে এত বড় গণজমায়েতের নিউজ কভার করার জন্য যেখানে একটা ক্যামেরাও হাজির হয় না, সেখানে কোথায় কেরানীগঞ্জের এক ফুটবল মাঠ সমান যায়গায় '৫ লক্ষ' লোকের 'ঢাকা ইজতেমা' কভার করতে 'চ্যানেল আই' গিয়ে হাজির হয়। আর সেটা নিয়ে আড়াই মিনিটের নিউজও করে…!
কিছু কথা বলতে হয় না। আলামত দেখলেই অনুধাবন করা যায়। ইজতেমা না হলে কার লাভ, কাদের লাভ এটা আর অপ্রকাশ্য নেই।
এতদিন ধরে ওয়াজাহাতি জোড়ের কারণে যেই ফিতনার দম বের করে ফেলার সময় এসেছে, সেটাকেই somehow লাইফ সাপোর্ট দিয়ে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।
[পুনশ্চঃ কেমন জানি একটা 'news crusade' শুরু হয়েছে। সবচেয়ে দুঃখ লাগে যখন দেখি ইসলামি নিউজ পোর্টালগুলোও এই নিউজ প্রচার করছে বিন্দুমাত্র তাহকিক ছাড়া। ইয়া আল্লাহ… সমস্ত অভিযোগ আপনার দরবারে।]
পেছাতে পারে বিশ্ব ইজতেমা; দেওবন্দ যাচ্ছেন প্রতিনিধি দল