আবু তালহা তারীফ
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উৎকর্ষের ফলে পৃথিবী এখন হাতের মুঠোয়। মসজিদের মিম্বারে জুমার আলোচনা, ওয়াজ মাহফিলের বক্তাদের কুরঅানের বাণী ভিডিও করে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রচার করা আজ আমাদের সুযোগ হয়েছে।
আমাদের স্মরণ রাখা উচিত, সব নবী-রাসুল তাদের সময়ের প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে মহান আল্লাহর বাণী মানুষের কাছে প্রচার করেছেন। হজরত মুসা আ. এর যুগে সময় জাদুর প্রভাব ছিল বেশি। মুসা আ. সে যুগের প্রেক্ষাপটে আল্লাহ মুজেজা ব্যবহার করে ফেরাউন ও তার সম্প্রদায়ের কাছে দ্বীনের দাওয়াত দিয়েছেন ফলে অসংখ্য জাদুকর আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছিল।
হজরত ঈসা আ. এর সময়ে চিকিৎসা বিদ্যার ব্যবহার ছিল বেশি তাই তিনি আল্লাহ প্রদত্ত চিকিৎসা বিদ্যার ব্যবহারের মাধ্যমে ইসলাম প্রচার করতেন। এমনকি আমাদের সর্বশেষ নবী হজরত মুহাম্মদ সা. তৎকালীন সময়ের উল্লেখযোগ্য মাধ্যমে আল্লাহর বাণী প্রচার করেছেন। তখন সেই সময়ে সাহিত্যের প্রভাব ছিল খুব বেশি। তিনি আরবি সাহিত্য ব্যবহার করে আল্লাহর সুমহান বাণী মানুষের কাছে প্রচার করেছেন।
আমাদের বুঝতে সমস্যা হওয়ায় বা নিজস্ব রোষানলে পড়ার ভয়ে আধুনিক মাধ্যমগুলোতে হক্কানি আলেমদের অংশগ্রহণ কম থাকায় এ সুবর্ণ ক্ষেত্রটি ব্যবহার করছে ভ্রান্ত গোষ্ঠিগুলো।
আমাদের বুঝতে হবে বিজ্ঞানের কল্যাণে গোটা বিশ্বই এখন একটি গ্রামে পরিণত হয়েছে।
বর্তমানে ডিজিটাল তথ্যপ্রযুক্তির যুগ, তথ্য প্রযুক্তির যুগে অন্য ধর্মালম্বীরা যেভাবে তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান সারা বিশ্বে মুহুর্তে ছড়িয়ে দিচ্ছে, তাদের তুলনায় আমরা এগিয়ে নেই।
মুসলমানদের বিরুদ্ধে প্রচারণা, মিথ্যা অপবাদ, ভুল তথ্য প্রচারের জন্য ইহুদিদের রয়েছে প্রায় সাড়ে আট লক্ষেরও বেশি ওয়েব সাইট। খ্রিস্টানদের রয়েছে প্রায় পাচ লক্ষের বেশি সাইট। তাছাড়া অনান্য অমুসলিমদের রয়েছে প্রায় চার লক্ষের বেশি ওয়েবসাইট।
তারা তাদের ওয়েব সাইট, ফেসবুক, টুইটার, ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্নভাবে মুসলমানদের কাছে তাদের ধর্ম প্রচার মুসলমানদের ধর্মান্তরিত কবছে। এনিয়ে আমাদের গভীরভাবে ভাবতে হবে।
আমাদের উচিত ওয়াজ-মাহফিলের পদ্ধতিকে আরো বেশি যুগোপযোগী এবং উন্নত করা। অন্য দিকে সমকালীন বাতিল শক্তির মোকাবেলা করার মত যোগ্যতা, দক্ষতা ও কৌশল প্রয়োগের সক্ষমতা অর্জন করা। তাই প্রয়োজন মিডিয়ার ব্যবহার।
মিডিয়ার কল্যাণে ওয়াজ মাহাফিল এখন হাতের মুঠোয় চলে এসেছে। মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে ওয়াজ-মাহফিল ও ইসলামি সংস্কৃতির ব্যাপক প্রসার করতে হবে। ইসলাম প্রচারে ওয়াজ মাহফিলে সীমাবদ্ধ রাখলে হবে না।
বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ মাদরাসা, স্কুল বন্ধ থাকাবস্থায় কিছু বন্ধু মিলে নিজ এলাকায় সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সরকারি-বেসরকারি উচ্চপদমর্যাদার কর্মকর্তাসহ এলাকার মেম্বার, চেয়ারম্যান, এমপি, মন্ত্রী, সবাইকে সাথে নিয়ে ছোট পরিসরে একজন আলেমকে দিয়ে ওয়াজ মাহফিলের ব্যবস্থা করালে বা দাওয়াতি আসর করতে পারলে আশা করা যায়, দাওয়াতের কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পাওয়া যাবে।
লেখক : শিক্ষার্থী, মাদরাসা-ই আলিয়া ঢাকা, ডিপার্টমেন্ট অব তাফসিরুল কুরআন
এএফএম