শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
কাল যাত্রাবাড়ী মাদরাসায় মজলিসে দাওয়াতুল হকের ইজতেমা শেখ হাসিনা ভারতে বসে দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছেন: মজলিস মহাসচিব ডেঙ্গুতে এক সপ্তাহে ৩১ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ৬২৩০ মসজিদে নববীর আদলে হবে আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ: ধর্ম উপদেষ্টা খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত নতুন নির্বাচন কমিশনকে বিগত কমিশন থেকে শিক্ষা নিতে হবে: মুফতী ফয়জুল করীম লালপুরে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে জমি দখল ও বাড়ি ভাংচুরের অভিযোগ জনতার চেয়ারম্যান সৈয়দ তালহাকে সুনামগঞ্জ ৩ আসনে জমিয়তের প্রার্থী ঘোষণা কুরআন-হাদিসের ভিত্তিতেই হতে হবে সংস্কার: বায়তুল মোকাররমের খতিব ইসলামী সঙ্গীত সম্রাট আইনুদ্দীন আল আজাদ রহ.-এর বাবার ইন্তেকাল

সালাম আমাদের অভ্যাসে পরিণত হোক

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

ফাতিমা যাহরাহ : আমি তখন খুব ছোট। খুব ভালোভাবে সবকিছু মনে নেই। তবে এতটুুকু মনে আছে, তখন বানান করা ছাড়াই রিডিং পড়তে শুরু করেছি। কীভাবে যেনো একটা বই পেয়েছিলাম। ময়লা আর ছেঁড়া বই। কেউ হয়তো ফেলে দিয়েছিলো। ছবিসহ লেখা। সালাম সম্পর্কে।

ঘুম থেকে উঠে মা-বাবা,ছোট ভাইবোনকে সালাম দেয়া। সুন্দর উচ্চারণে। তারপর আবার স্কুলে যাওয়ার আগে সালাম দিয়ে যাওয়া। স্কুল থেকে ফিরে সালাম দেয়া। খেলতে যাওয়ার আগে সালাম দিয়ে বের হওয়া। সন্ধ্যায় ফিরে এসে সালাম দেয়া। ঘুমাতে যাওয়ার আগে সালাম দিয়ে ঘুমানো। তারপর আবার পরদিন একই পুনরাবৃত্তি।

বইটি আমার মনে খুব দাগ কেটেছিলো। ঠিক করলাম, আমিও এখন থেকে এই নিয়মে চলবো। কিন্তু কেনো যেনো খুব লজ্জা পেতাম। অনেকদিন পর দেখা হলে সালাম দেয়াটা মানায়। কিন্তু আম্মুর সাথে তো সবসময় কথাই হচ্ছে! তার ওপর আবার ছোট ভাইবোনকে সালাম দিবো? কেমন যেনো একটা লজ্জা জড়িয়ে ধরতো। উঁহু, পারবো না।

আব্বুর একটা অভ্যাস ছিলো যখনই বাইরে থেকে আসতেন, সালাম দিয়ে বাসায় ঢুকতেন (পাঁচ/ছয়দিন পর পর আব্বু বাসায় আসতেন। কারণ গাড়ি নিয়ে তাকে অধিকাংশ সময়ই ঢাকা, চট্টগ্রাম যেতে হতো। আর কয়েকদিন পর পরর দেখা হতো দেখেই সংকোচটা তখন আসতো না।)

আর আমরাও ছুটে গিয়ে সালামের জবাব দিয়ে কোলে উঠে যেতাম। আব্বু বাসায় থাকাবস্থায় সবসময় চেষ্টা করতেন আগে সালাম দেয়ার। আর আমরাও প্রতিযোগিতায় লেগে থাকতাম, কখন আব্বুকে হারাতে পারবো। (এটা শুধু আব্বুর ক্ষেত্রেই হতো,আম্মুর ক্ষেত্রে না।)কিন্তু আমরা হেরে যেতাম।

একদিন হঠাৎ করেই, খুব লজ্জা নিয়ে, চোখ বন্ধ করে স্কুলে যাওয়ার সময় আস্তে করে সালাম দিয়ে ছুটে বের হয়ে গিয়েছিলাম। পেছন থেকে আম্মুর সালামের জবাব শুনে এত্তো খুশী লাগছিলো!

আব্বু এই ঘটনা শুনে আম্মুকে বললেন, স্কুলে যাওয়ার সময়, আসার পর যেনো আম্মু আগে সালাম দেয়, তাহলে আমরাও শিখে ফেলবো। আর লজ্জা পাবো না। তারপর থেকে এমনটাই হতে লাগলো।

আম্মু অতোবড় মানুষটা আমাদের ছোটদের সালাম দেয়! এসব ভেবে ভেবে লজ্জা ভেঙে গেলো। আমরাও স্বতঃস্ফূর্তভাবে সালাম দেই। ঘুম থেকে উঠে, স্কুলে যাওয়ার সময়, স্কুল থেকে ফিরে, বিকালে খেলতে যাওয়ার সময়, খেলা থেকে ফিরে!

শুধু ঘুমানোর আগে সালাম দেয়া হতো না। এখনো মাঝে মাঝে হয় না। কারণ কে যে কোন সময় ঘুমায় তার ঠিক নেই।

সেই ছোটবেলার অভ্যাস, আলহামদুলিল্লাহ এখনো বাদ যায়নি। এখন তো ছোট ভাইবোনগুলো অনায়াসে একজন আরেকজনকে সালাম দেয়। সবচেয়ে বড় উপকার হয়েছিলো যে কোন মানুষকে আমরা সালাম দিতাম। আর এতে সংকোচ কাজ করতো না। বরং সবাই খুব প্রশংশা করতো। বলতো, কত ছোট বাচ্চা দেখো, কী সুন্দর সালাম দেয়!

সালামের অর্থ সেই ছোট্টবেলায় পড়া বইটাতেই শিখেছিলাম। খুব ভালো লাগতো এটা ভেবে যে আমি সালামের মাধ্যমে সবার জন্য দু'আ করছি। আর আমার দু'আতেই সবাই নিরাপদ আছে।(কথাটা আম্মু বলেছিলো। সেটা আর ভুলিনি।)

চাইলেই আমরা এই ছোট ছোট অভ্যাসগুলো গড়ে তুলতে পারি। ছোট আমল কিন্তু ফাজলতপূর্ণ। আল্লাহ সাহায্য করুন। সালামের ফজিলত নিয়ে এখানে কিছু বললাম না। আমরা সবাই-ই আলহামদুলিল্লাহ জানি।

শুধু মাথা নাড়ালেই সালামের জওয়াব আদায় হবে কি?

আরএম/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ