মুহাম্মদ ইশফাক কাসেমী
আলেম ও শিক্ষক
কওমি সনদের স্বীকৃতি বিষয়ে উলামায়ে কেরাম দেশ স্বাধীনের পূর্ব থেকে শুরু করলেও সরকারের সাথে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু হয় ১৯৯৬ সালে। শাইখুল হাদীস আল্লামা হাফেজ নূর উদ্দীন আহমদ গহরপুরী রহ. বেফাকের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর বেফাকের তৎকালীন মহাসচিব মাওলানা আব্দুল জব্বার জাহানাবাদীকে নিয়ে কওমি সনদের স্বীকৃতি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
অালোচনার মাধ্যমে তারা নিম্নোক্ত পরিকল্পনা তৈরি করেন-
১) কওমি সনদের স্বীকৃতির পক্ষে সকল উলামায়ে কেরামের ঐক্যমত তৈরি করা।
২) শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সরকারের দায়িত্বশীলের সাথে আলোচনা করা।
এ দু'টি বিষয়কে সামনে রেখে মাওলানা জাহানাবাদী কাজ শুরু করেন। উলামায়ে কেরামের ঐক্যমত তৈরিতে তিনি শাইখুল হাদীস আল্লামা আজিজুল হক রহ. এর ভূমিকা জরুরী মনে করেন।
শাইখুল হাদীস রহ.-কে কওমি সনদের স্বীকৃতির পক্ষে উলামায়ে কেরামের ঐক্যমত তৈরিতে ভূমিকা রাখার কথা বললে তিনি অনাগ্রহ প্রকাশ করেন। তখন মাওলানা আব্দুল জব্বার জাহানাবাদী রহ. ছুটে যান গহরপুরে তৎকালীন বেফাক সভাপতি শাইখুল হাদীস আল্লামা হাফেজ নূর উদ্দীন আহমদ গহরপুরী রহ. এর নিকট।
এ সফরে মহাসচিবের সাথে ছিলেন মাওলানা আব্দুল বারী ধর্মপুরী, শাইখুল হাদীস মাওলানা নেজাম উদ্দিন রহ. ও বেফাকের বর্তমান মহা-পরিচালক অধ্যাপক মাওলানা জুবায়ের আহমদ চৌধুরী।
কওমি মাদরাসা ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার – বিস্তারিত জানুন
মাওলানা আব্দুল জব্বার জাহানাবাদী; গহরপুরী হযরতকে শাইখুল হাদীস আল্লামা আজিজুল হক রহ. এর অনাগ্রহের কথা বললে গহরপুরী হযরত বললেন, “আমি শাইখুল হাদীস আল্লামা আজিজুল হক সাহেবকে পত্র লিখব, আপনি পত্রটি শাইখুল হাদীস সাহেবর নিকট নিয়ে যাবেন। আশা করি শাইখুল হাদীস সাহেব স্বীকৃতির পক্ষে গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন।”
গহরপুরী হযরতের পত্র পেয়ে শাইখুল হাদীস আল্লামা আজিজুল হক কওমি সনদের স্বীকৃতির পক্ষে কাজ শুরু করেন এবং পরবর্তিতে স্বীকৃতির দাবিতে মুক্তাঙ্গনে অবস্থানসহ যে সকল গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন তা জাতির কাছে চিরস্বরণীয় হয়ে থাকবে।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীকে গণসংবর্ধনা দেবে কওমি আলেমরা
উল্লেখ্য, ২০ জুলাই ১৯৯৬ সালে শাইখুল হাদীস আল্লামা হাফেজ নূর উদ্দীন আহমদ গহরপুরী রহ. বেফাক মহাসচিব মাওলানা আব্দুল জব্বার জাহানাবাদীকে নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত স্হায়ী কমিঠির সদস্য, বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদের সঙ্গেও কওমি সনদের স্বীকৃতি নিয়ে বৈঠক করেছিলেন।
সবশেষে, আমাদের আকাবির ও আসলাফের এই মেহনতে পরিপূর্ণতা লাভ করেছে বেফাকের সম্মানিত সভাপতি শাইখুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফি হাফিজাহুল্লাহর নেতৃত্বে।
শাইখুল হাদীস আল্লামা হাফেজ নূর উদ্দীন আহমদ গহরপুরী রহ. আজ আমাদের মধ্যে নেই কিন্তু তাঁর অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত হয়েছে। মহান রবের দরবারে হাজারো শুকরিয়া। আল্লাহ সকলের মেহনতকে কবুল করে জান্নাতের উসিলা বানান। আমীন।
লেখক: মুহাম্মদ ইশফাক কাসেমী, শিক্ষক জামিয়া গহরপুর সিলেট।
আরও পড়ুন: আল্লামা ইসহাক ফরিদী রহ: এক মৃত্যুঞ্জয়ী মহামানব
আপনার ব্যবসাকে সহজ করুন। – বিস্তারিত জানুন
আরএম/