সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
চিকিৎসকরা বছরে দুইবারের বেশি বিদেশ যেতে পারবেন না ঢাকা থেকে ভাঙ্গা হয়ে খুলনায় গেলো পরীক্ষামূলক ট্রেন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবেন প্রধান উপদেষ্টা: প্রেস উইং ধর্মীয় মূল্যবোধ ও সাম্যের ভিত্তিতে সংবিধান রচনার আহ্বান নেপালে ফের কুরআন প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে সৌদি আগামীকাল সংবিধান সংস্কার কমিশনে প্রস্তাবনা পেশ করবে ইসলামী আন্দোলন ‘আল্লামা আতহার আলী রহ. জীবন, কর্ম, অবদান’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন আগামীকাল হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজিরে মক্কী রহ. : কে এই মহান ব্যক্তি হাজিদের স্বার্থ রক্ষায় সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ : ধর্ম উপদেষ্টা মহানবীকে সা. নিয়ে কটূক্তি করলে সংবিধানে শাস্তির বিধান রাখার প্রস্তাব পার্থের

ইসলামি রাজনীতি; ঐক্য ও স্বার্থ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুফতি হাবিবুর রহমান মিছবাহ
প্রিন্সিপাল, মারকাজুত তাকওয়া ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার ঢাকা

এদেশে ইসলামি রাজনীতির প্রবর্তক হলেন মোহাম্মাদুল্লাহ হাফেজ্জী হুজুর রহমাতুল্লাহি আলাইহি। এর আগে সাধারণ মানুষ জামাতের রাজনীতিকে ইসলামি রাজনীতি হিসেব জানলেও আকিদাগত কারণে কওমি ওলামায়ে কেরাম ছিলেন জামাতবিরোধী।

হাফেজ্জী হুজুর রহমাতুল্লাহি আলাইহি তওবার ডাক দিলে বাংলাদেশে ইসলামি রাজনীতিতে একটা বিপ্লব ঘটে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বটগাছ প্রতীকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোট পান তিনি। কিন্তু পরবর্তীতে সে ধারা ধরে রাখতে পারেননি ওলামায়ে কেরাম। এমনকি তার আওলাদরাও খেলাফত আন্দোলন নিয়ে ব্যর্থ।

কালের পরিক্রমায় দেশে পুঁজিবাদী কুফরি গণতন্ত্র, নাস্তিক্য দৌরাত্ম্য, ধর্রনিরপেক্ষতাবাদ ও মৌলবাদবিরোধীরা জেঁকে বসে আমাদের ওপর। ‘সিয়াসাত মে কামিয়াবী নেহী, দাওয়াত মে কামিয়াবী হেয়’র প্রভাবে ওলামায়ে কেরাম এবং মাদরাসা লেভেলে ইসলামি রাজনীতির ব্যাপক চর্চা না থাকায় ইসলামের ভূমিকা ও আবেদন থেকে দূরে সরতে থাকে গণমানুষ। যেটা একসময় বিরাট আকার ধারণ করে।

উম্মাহ'র সে ক্রান্তিলগ্নে আল্লামা শায়খুল হাদীস রহমাতুল্লাহি আলাইহি, শায়খ ফজলুল করীম রহমাতুল্লাহি আলাইহি, খতীব ওবায়দুল হক রহমাতুল্লাহি আলাইহি ও মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীসহ তৎকালীন শীর্ষ ওলামা-বুজুর্গরা জেগে ওঠেন বাতিল ও ইসলামবিরোধী অপশক্তির মোকাবেলায়।

দুঃখজনক হলেও সত্য, আন্দোলন সংগ্রামের শুরুর আগেই কেটে পড়েন সাঈদী সাহেব! পরবর্তিতে কওমি ওলামাদের মাঝে সামান্য মতবিরোধ থাকলেও ঐক্যবদ্ধ প্লাটফর্মে বাতিলবিরোধী আন্দোলন চালিয়ে যান।

‘আমরা ঢাকাবাসী’ থেকে শুরু করে ‘ইসলামী আইন বাস্তবায়ন কমিটি’, ‘অনৈসলামিক কার্যকলাপ প্রতিরোধ কমিটি’, বহু ব্যানারে হয়েছে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন। ৯৬ তে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর শুরু নতুন যুদ্ধ। ফতোয়াবিরোধী রায়ে উত্তাল হয়ে ওঠে সারাদেশ।

ঐক্যজোট হয় ইসলামি দলগুলির। শায়খুল হাদিস রহমাতুল্লাহি আলাইহি ও মুফতি আমিনী রহমাতুল্লাহি আলাইহি জেলে যান। তাদের মুক্তি ও রায় বাতিলের দাবিতে কাফনের কাপড় মাথায় আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন শায়খ ফজলুল করীম রহমাতুল্লাহি আলাইহি।

২০০১ এ সারাদেশ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে চলে যায় এবং তা ইসলামবিরোধিতার কারণেই। চরমোনাইর বার্ষিক মাহফিল থেকে পীর সাহেব চরমোনাই রহমাতুল্লাহি আলাইহি ঘোষণা দিলেন ‘আওয়ামী লীগ ঠেকাও!’ তখন সুযোগ ছিলো সমস্ত ওলামায়ে কেরাম একপ্লাটফর্মে গিয়ে বাংলাদেশে ইসলামি রাজনীতির একটা অবস্থান গড়ে তোলার। কিন্তু হলো না!

ঐক্যজোট ভেঙ্গে ‘আহওয়ানুল বালিয়াতাইন’র ফতোয়া দাঁড় করিয়ে বিএনপির সঙ্গে জোট করেন ওলামায়ে কেরামের একটা অংশ। কিন্তু পীর সাহেব চরমোনাই রহমাতুল্লাহি আলাইহি ৮দফা পেশ করে ইতিহাস রচনা করেন।

বিএনপি মানেনি ৮দফা। ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন বিএনপিতে গেলো না। তখন থেকেই বাংলাদেশে শুরু হয় ভাঙ্গা-গড়ার খেলা। ফলাফল, আজ কওমি ঘরনার ইসলামি দলগুলি অস্তিত্ব সংকটে ভোগছে। কিন্তু নীতির ওপর অটল থাকায় ইসলামী আন্দোলন এগিয়ে গেছে দূর থেকে বহুদূর।

ব্যবসার হিসাব নিয়ে জটিলতা আর নয় (কল- 01771 403 470) ক্লিক করুন

এ সময়ে গঠিত হচ্ছে নতুন নতুন জোট, ভাঙ্গন ও দল। পদলোভের নমুনা হিসেবে নতুন দলের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। তেমনি বাড়ছে ভাঙ্গনও। আশ্চার্যের ব্যাপার হলো, সবার মুখেই ঐক্যের স্লোগান শোনা যায়! যারা নিজেদের মধ্যে এক থাকতে পারে না, নাম সর্বস্ব দল হওয়া সত্বেও টুকরা হচ্ছে একাধিক, নিজ দলের নেতাকর্মীদের মাঝে ঐক্য যেখানে প্রশ্নবিদ্ধ, সে তারা যদি ঐক্যের স্লোগান নিয়ে মাঠে নামে, সেটা হাস্যকর ব্যতিত অন্য কিছু বলার সুযোগ নেই।

যারা দলীয় ফোরামে বসে অন্যদলের বিরুদ্ধে গীবত করে এবং প্রতিহিংসার অট্টহাসিতে তৃপ্তির ঢেঁকুর তোলে, তাদের দ্বারা ঐক্য তো দূরের কথা, ইসলামি রাজনীতির আদর্শলিপিও পাঠদান সম্ভব নয়। বরং তাদের দ্বারা নিজেদের ঘর গোছানোটাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। মূলত একেকটা ঐক্যের মঞ্চ হয়ে উঠছে ঐক্য বিনষ্ট, পরনিন্দা ও দ্বন্দ্বের মূলকেন্দ্র।

এদিকে এরশাদের জাতীয় পার্টির সঙ্গে খেলাফত মজলিস (শায়খুল হাদীস) নির্বাচনী জোট করেছে। অনেকে সমালোচনাও করছেন। কিন্তু আমি মনে করি বিএনপির চেয়ে এ জোট অনেকগুণ ভালো হয়েছে। আপনাদের সেদিকটায়ও নজর দেয়া উচিত।

তবে আফসোস থেকেই যায়! জাতীয় পার্টির সঙ্গে কী হিসেবে জোট করেছেন তারা?

আওয়ামী লীগের গৃহপালিত বিরোধীদল বলে? নাকি জাতীয় পার্টিতে জোট মানে সরকারি সুবিধা পাওয়া যাবে তাই? নাকি জনসমর্থন বেশি বলে? নাকি ইসলামের কোনো স্বার্থ আছে?

কিন্তু জাতীয় পার্টির থেকে তো বর্তমানে ইসলামী আন্দোলন শক্তিশালী। জনসমর্থনও বেশি। সরাসরি খাঁটি একটা ইসলামি দল। তাহলে জোটটা কি তাদের সঙ্গে হওয়াটাই যুক্তিযুক্ত ছিলো না?

লীগ, বিএনপি প্রয়োজনে জাসদ-বাসদে যাবো, তবুও চরমোনাইর সঙ্গে ঐক্য নয় নীতিতে চলছে ইসলামী রাজনীতির মহারথি (!) রা।

ভোটের আগে জোটের খেলায় ইসলামপন্থীরাও!

ইসলামি দলগুলোর শীর্ষ নেতৃত্ব সমীপে কিছু কথা

-আরআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ