মুহাম্মদ আমিমুল ইহসান
প্রধান সম্পাদক
গত এক সপ্তাহে বাংলাদেশ বিমান ও সৌদি এয়ারলাইন্সের একাধিক হজ ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। সাংবাদিক বন্ধুরা ইলেকট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়ায় অতিব গুরুত্ব সহকারে বিষয়টি প্রচার করেছেন। লিড সংবাদ স্বরূপ উপস্থাপন করতেও কেউ দ্বিধা করেন নি।
কিন্তু কেন এ শিডিউল বিপর্যয় তা নিয়ে কেউ অনুসন্ধানী রিপোর্ট করেন না। সবার ইশারা থাকে -ট্রাভেলস মালিক ও আয়োজকদের প্রতি। অথচ এমন শিডিউল বিপর্যয়ের জন্য সর্বপ্রথম দায়ী বাংলাদেশের হজ ব্যবস্থাপনা ও দু’টি এয়ারলাইন্সে ফ্লাইট সীমাবদ্ধ করা।
কেননা আমাদের সকলের জানা রয়েছে মক্কা-মদিনায় হাজিদের সুবিধার্থে হিজরি সন অনুযায়ী তিন ভাগে ঘর/হোটেল ভাড়া হয়।
প্রথমভাগ : জিলকদ মাসের ১ তারিখ হতে ২৫ জিলকদ। দ্বিতীয়ভাগ : ২৫ জিলকদ হতে ১৪/১৫ জিলহজ। তৃতীয়ভাগ : ১৫ জিলহজ হতে ১০ মুহাররাম।
ট্রাভেলস মালিকগণ এই তিন সময় অনুসরণ করে ফিতরা/নন ফিতরা হিসেবে ও ভিসা প্রাপ্তি সাপেক্ষে ফ্লাইট ঠিক করেন।
সে হিসেবে ২০ জিলকদের পর হতে মক্কা অবস্থানকারী যাত্রীগণ মদিনায় যাবেন এবং মদিনার যাত্রীগণ মক্কায় গিয়ে হোটেল কিংবা বাড়িতে অবস্থান করবেন। এমতাবস্থায় মক্কা কিংবা মদিনায় নির্ধারিত তারিখের আগে-কিংবা পরে হাজি পৌঁছালে তাদের অবস্থানের কোন স্থান থাকবে না।
তাছাড়া যারা ২৫ জিলকদ হতে হোটেল ভাড়া করেছেন তারা এখন মক্কা কিংবা মদিনায় হাজি নিয়ে কোথায় রাখবেন।
অন্য দিকে ২৫/২৭ জিলকদের পর জেদ্দা হতে কোন হাজিকে মদিনায় প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয় না। কেননা মদিনায় মসজিদে নববিতে তাকবিরে উলার সাথে ৪০ ওয়াক্ত নামায আদায়ের একটি প্রচলন রয়েছে।
২০ জিলকদের পর হতে মদিনায় গমনকারী হাজিগণ ৪/৫ জিলহজ হতে মক্কায় ফিরবেন। মদিনায় আদিল্লা অফিস ৫/৬ জিলহজের পর কাউকে মদিনায় অবস্থা করতে দেন না। কেননা ৭ জিলহজ রাতে মিনায় রাওয়ানা হতে হয়।
৮ জিলহজ হতে হজের কার্যক্রম শুরু হয়। বাড়ি ও হোটেল ব্যবস্থার জটিলতায় ২০ জিলকদ হতে ২৫ জিলকদ পর্যন্ত কেউ মক্কা-মদিনায় হাজি পাঠাতে পারেন না। আর সে কারণে নির্ধারিত ফ্লাইটে যাত্রী না থাকায় ফ্লাইট বাতিল হয়।
সব মিলিয়ে হজের আবাসন ব্যবস্থা খুবই জটিল। এ জন্য এ সময়ে হজ ফ্লাইট বিড়ম্বনায় পড়তে হয় হজ মন্ত্রণালয়, ট্রাভেলস মালিক ও হজ সংশ্লিষ্টদের। কিন্তু আমরা সমস্যার দিকগুলো সমাধান না করে ট্রাভেলস কর্তৃপক্ষকে এক তরফা দায় দিয়ে ক্ষান্ত হই।
এ বছর সৌদি/বিমান কর্তৃপক্ষ ৫০/৫২ দিনের কমে কোন টিকেট ইস্যু করে নি। এমতাবস্থায় উক্ত বিপর্যয় ও বিড়ম্বনা এড়াতে হলে হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী অন্যান্য এয়ারলাইন্সকেও হজযাত্রী বহনের অনুমতি দিতে হবে।
সেক্ষেত্রে হজযাত্রীগণ স্বল্প সময়ে হজ সম্পন্ন করে আত্মীয়-স্বজনদের কাছে ফিরে আসতে পারবেন। এতে ফ্লাইট বাতিলের বিড়ম্বনাও হ্রাস পাবে। আশা করি বিষয়টি হজ মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ভালোভাবে দেখবেন।
ব্যবসায় হিসাবের ঝামেলা আর না- ক্লিক বিসফটি
-আরআর