জহির উদ্দিন বাবর
সাংবাদিক ও কলামিস্ট
বাংলাদেশে বড় আলেমের সংখ্যাটা খুব কম না। তবে তাদের মধ্যে দুজন আলেমের প্রতি আমার দুর্বলতা ছোটবেলা থেকেই একটু বেশি। তাদেরই একজন মাওলানা আতাউর রহমান খান রহ.।
কিশোরগঞ্জের মিঠামইনের ঘাগড়া মাদরাসায় যখন পড়ি সম্ভবত তখনই আতাউর রহমান খানের নাম শুনি। তখন তিনি কিশোরগঞ্জ সদরের এমপি। কিন্তু কখনও তাঁকে দেখা হয়ে উঠেনি।
সম্ভবত ১৯৯৫ সালে তাঁকে প্রথম দেখি ইটনার একটি জনসভায়। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী হিসেবে এসেছেন। এই ইটনা থানারই একটি বনেদি পরিবারে তাঁর জন্ম। সেই জনসভায় সংক্ষিপ্ত কিছু কথা বলেছিলেন খান সাহেব রহ.।
সেই কথাগুলো কী ছিল তা আজ আর মনে নেই। তবে সেই বক্তব্যে ছিল যাদু। মন্ত্রমুগ্ধের মতো তা গিলেছিলাম। এরপরই কেন যেন তাঁর প্রতি মুগ্ধতা অনেক বেড়ে যায়।
তিনি যে গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছেন সেখান থেকে আমাদের বাড়ির দূরত্বও খুব বেশি না। আর সেই হাতকবিলা গ্রামে আমাদের নতুন-পুরোনো অনেক আত্মীয়-স্বজন থাকায় খান সাহেব এবং তাঁর পরিবার সম্পর্কে নানা গল্প ছোটবেলা থেকেই শুনে এসেছি।
২০০১ সাল। ভর্তি হই স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান জামিয়া ইমদাদিয়া কিশোরগঞ্জে। এই সেই জামিয়া ইমদাদিয়া যার প্রতিটি ইট-পাথরে লেগে আছে মাওলানা আতাউর রহমান খান ও তাঁর বাবা আহমদ আলী খান রহ.-এর নাম।
জামিয়ায় ভর্তির অন্যতম উদ্দেশ্য হলো আতাউর রহমান খানের মতো স্বপ্নের মানুষদের সান্নিধ্য। তিনি জামিয়ার ভাইস প্রিন্সিপাল। গায়ে সফেদ জামা, মাথায় কিশতি টুপি, মুখে পান, ঠোঁটে এক চিলতে হাসি নিয়ে তিনি যখন জামিয়ার গেইট দিয়ে ঢুকতেন তখন অজানা এক মুগ্ধতায় আচ্ছন্ন হয়ে তাঁর দিকে তাকিয়ে থাকতাম।
তিনি আসতেন, নিজের রুমে গিয়ে কিছু সময় বসতেন, কিছু সময় দফতরে কাটাতেন, আবার চলে যেতেন। দাওরা ও মিশকাত জামাতে তাঁর দুটি ক্লাস ছিল। সেই বছর আমাদের জালালাইন জামাতে কোনো ক্লাস ছিল না তাঁর কাছে। তবে মাঝে মাঝে আমাদের বিশেষ অনুরোধে সন্ধ্যার পর আসতেন; উন্মুক্ত ক্লাস হতো।
যেকোনো বিষয়ে যে কেউ প্রশ্ন করার সুযোগ পেতো সে ক্লাসে। প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর এতো গোছালো, যৌক্তিক ও সাবলীলভাবে দিতেন যে আমরা অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকতাম। একজন মানুষ এতো বহুমুখী জ্ঞানের অধিকারী কিভাবে হতে পারে তা ভেবে কূল পেতাম না।
পরের বছর মিশকাত জামাতে খান সাহেব আমাদের পড়িয়েছেন আকিদাতুত তাহাবী কিতাবটি। আকিদা একটি জটিল বিষয়। এ ব্যাপারে অনেকেই কূল-কিনারা করতে পারেন না।
সবকিছুর পরও আকিদা নিয়ে কিছু প্রশ্ন থেকেই যায়। কিন্তু খান সাহেব হুজুর আমাদের যেভাবে কিতাবটি পড়িয়েছেন আমার মনে হয় না এরচেয়ে ভালোভাবে কেউ পড়াতে পারবেন।
এই কিতাবটি উপলক্ষ মাত্র; পুরো আকিদার বিষয়গুলো তিনি এতো সুন্দরভাবে ছাত্রদের বুঝিয়ে দিতেন মনে হতো একটি কলা খোসা ছাড়িয়ে মুখে তুলে দিচ্ছেন। আমরা ঘুরিয়ে প্যাঁচিয়ে জটিল জটিল প্রশ্ন করতাম; কিন্তু হুজুর একটুও বিরক্ত না হয়ে সুন্দরভাবে উত্তর দিতেন।
আকিদাসংক্রান্ত কোনো কোনো বিষয়ে যখন অগ্রসর হওয়া সমীচীন মনে করতেন না তখন বলতেন, ‘রাখ, তোরা বেশি বুঝিছ না।’
প্রতি বুধবার বাদ মাগরিব শহীদি মসজিদে খান সাহেবের বয়ান। সারা সপ্তাহ অপেক্ষা, কবে আসবে বুধবার। ঘণ্টাখানেকের এই বয়ানে প্রতি সপ্তাহে তিনি জ্ঞান-বিজ্ঞানের নতুন নতুন দুয়ার উন্মোচন করে দিতেন শ্রোতাদের সামনে। তাঁর বয়ানের কোনো সুনির্দিষ্ট বিষয় ছিল না।
সমসাময়িক নানা বিষয়ে কথা বলতেন। কোনো সুর ছিল না; ছিল না কোনো অঙ্গভঙ্গি।
সাদামাটাভাবে তথ্য, যুক্তি ও ইতিহাসের আলোকে বয়ান করতেন। তাঁর বয়ানে এত সূক্ষ্ম বিষয় উঠে আসতো যা সচরাচর কোনো বয়ানে পাওয়া যায় না। সময়ের আলোকে ঐতিহাসিক ঘটনাগুলো তিনি এতো সুচারুভাবে উপস্থাপন করতেন মনে হতো ঘটনা যেন এখনই ঘটেছে এবং তিনি প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনা দিচ্ছেন।
খান সাহেবের প্রতি আমাদের মূল আকর্ষণের জায়গাটি ছিল তাঁর বাসার আসর। জামিয়া ইমদাদিয়া থেকে দুই তিন মিনিটের দূরত্বে তাঁর বাসা, নূর মঞ্জিল। একজন সাবেক এমপির বাসা হিসেবে যে জাঁকজমক ও চাকচিক্য থাকার কথা এর কিছুই নেই।
বাসায় ঢুকতেই রাস্তার পাশের বড় রুমটি সবার জন্য উন্মুক্ত। অনবরত এখানে আসছে বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষেরাও। খান সাহেবের জন্য একটি সোফা নির্দিষ্ট; এর বাইরে কয়েকটি সোফা ও চেয়ার এলোমেলো রাখা আছে।
বাসায় থাকলে বেশির ভাগ সময় এখানেই কাটাতেন খান সাহেব। একের পর এক আসছে মানুষজন। বিশেষ করে রাতের আসর চলতো মধ্যরাত পর্যন্ত। রাতের সেই আসরে জামিয়ার অনেক ছাত্রই যেতো। আমিও যেতাম মাঝে মাঝে।
অনেক সময় বসার জায়গা পাওয়া যেতো না। দাঁড়িয়েই ঘণ্টার পর ঘণ্টা মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনতাম খান সাহেবের কথা। রাজনীতি, সমাজ, অর্থনীতি, ধর্ম কোন বিষয়টি নেই যে সম্পর্কে জ্ঞানগর্ভ আলোচনা শুনিনি খান সাহেবের মুখে! এই আসরে একদিন যে যোগ দিয়েছে তাকে বারবার টেনে নিয়েছে।
এমনও হয়েছে খান সাহেবের কথা শুনতে শুনতে রাত একটা দেড়টা বেজে গেছে; মাদরাসার ছাত্রাবাসে আর ঢোকার সুযোগ নেই; বাইরে কোথাও থাকতে হয়েছে।
২০০১ সালের শেষ দিকে জাতীয় নির্বাচন। খান সাহেব ১৯৯১ সালে বিএনপি থেকে নির্বাচন করে সদরের এমপি হয়েছিলেন। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে তিনি ইচ্ছে করেই যাননি। মাঝে এক সেশন গ্যাপ দিয়ে আবারও তাঁর ওপর নির্বাচন করার চাপ এলো। তিনিও নির্বাচনের ব্যাপারে সম্মত হলেন। সদর আসন থেকে বিএনপি দলীয় টিকিট কে পাবেন এ নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা চলছে।
খান সাহেবের দিকেই পাল্লা ভারী। সবার মুখে মুখে এক কথা; হুজুরকে দিলে এবার সদর আসনটি বিএনপি উদ্ধার করতে পারবে। সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকায় নামও এলো খান সাহেবের।
আমরা যারা তাঁর ভক্ত-অনুরাগী ও ছাত্র তাদের প্রস্তুত থাকতে বললেন খান সাহেব। মনোনয়ন চূড়ান্ত হলে কিভাবে কাজ করতে হবে সে নির্দেশনাও দিলেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে বিজয়ী হয়েছে পেশীশক্তি; অস্ত্র আর অর্থের দাপটের কাছে খান সাহেবদের মতো জনপ্রিয়তাকে হার মানতে হয়েছে। যাকে মনোনয়ন দেয়া হলো আগে-পরে তিনি কখনও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হতে পারেননি।
দুই
স্বাধীনতার পর থেকে যে দুটি দল ভাগাভাগি করে দেশের ক্ষমতা ভোগ করেছে এর একটি থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন মাওলানা আতাউর রহমান খান। দলের টিকিট নিয়ে নির্বাচন করেছেন; বিজয়ী হয়েছেন; কিন্তু সেই দলগুলোর কোনো স্বভাব মাওলানা খানের মধ্যে জায়গা করতে পারেনি।
ক্ষমতা আর ক্যাডারভিত্তিক রাজনীতিতে তিনি ছিলেন অপাঙক্তেয়। এজন্য তাঁর মতো সৎ ও আদর্শ মানুষেরা বারবার হতাশ হয়েছেন এই রাজনীতি দেখে। ২০০১ সালের নির্বাচনে মনোনয়ন না পাওয়া খান সাহেবকে এই রাজনীতির প্রতি বিমুখ করে তোলে।
এরপর তিনি আর রাজনীতি নিয়ে তেমন আগ্রহ বোধ করতেন না। রাজনীতির নানা দিক বিশ্লেষণ করতেন; তবে নিজের ব্যাপারে কোনো আক্ষেপ ছিল না। তাঁর মনোনয়ন না পাওয়ার পেছনে মূল ভূমিকা ছিল কোনো কোনো আলেমের। এজন্য চাপা কষ্ট বুকে নিয়ে এ ব্যাপারে নির্মোহ থেকেছেন মাওলানা খান রহ.।
২০০২ সালটি ছিল খান সাহেব রহ.-এর জীবনের সবচেয়ে বড় ট্রাজেডির বছর। যে প্রতিষ্ঠানটি ঘিরে তাঁর জীবনের সবকিছু সেই প্রতিষ্ঠানটি ছাড়তে বাধ্য করা হলো তাঁকে।
দীর্ঘ বঞ্চনা আর অপমান যখন অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছে গেল তখনই তিনি মুখ খুলেছিলেন। নিজের কষ্টের কথাগুলো বলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বলতে পারেননি। এখানেও তিনি পেশীশক্তির কাছে হার মানলেন। নিজেকে তুলে ধরার দৃষ্টিকটূ প্রচেষ্টা তাঁর মধ্যে ছিল না।
চেষ্টা করলে হয়ত পাল্টা বলয় গড়ে তুলতে পারতেন; আদর্শের জায়গাটিতে ছাড় দিলে নিজের অবস্থান সুসংহত করতে পারতেন। কিন্তু তিনি নীরবেই চলে গেলেন রাজধানীতে। সেখানে একটি মাদরাসার প্রিন্সিপাল হিসেবে দ্বীনের খেদমত করে গেছেন বেশ কয়েক বছর।
জীবনের শেষ দিকে আবারও কিশোরগঞ্জে ফিরে এসেছিলেন খান সাহেব রহ.।
কিশোরগঞ্জবাসীর জন্য কিছু করার তাগিদেই তাঁর এই ফিরে আসা। প্রতিষ্ঠা করেন জামিয়া ফারুকিয়া। কিন্তু এখানেও তাঁকে প্রতি পদে পদে নানা প্রতিকূলতার মুখে পড়তে হয়। নষ্ট সমাজের ভ্রষ্ট মানুষগুলো তাঁকে এখানেও স্বস্তিতে থাকতে দেয়নি।
তবে বরাবরের মতোই ধৈর্যের অটল পাহাড় ছিলেন হযরত খান সাহেব রহ.। নীরবে সয়ে গেছেন সব কষ্ট-যন্ত্রণা; উহ-আহ করে কাউকে সেটা শুনতে দেননি।
তিন
মাওলানা আতাউর রহমান খানের বর্ণাঢ্য জীবনের ঈর্ষণীয় প্রতিটি ধাপই আমাদের জন্য অনুসরণীয়। যেদিন থেকে তাঁকে দেখেছি, যখন থেকে তাঁর সান্নিধ্যে যাবার সৌভাগ্য হয়েছে, তখন থেকেই তাঁর ব্যক্তিত্বের প্রতি আমার প্রবল দুর্বলতা ছিল।
তাঁর স্নেহঝরা-মায়ামাখা নির্দেশ, বিজ্ঞোচিত আলোচনা, অসাধারণ ব্যক্তিত্ব সবকিছুই আমাকে বারবার আন্দোলিত করেছে। জীবনের শেষ কয়েক বছর ঘনঘন তাঁর সান্নিধ্যে যাওয়ার সুযোগ হয়েছে।
ইন্তেকালের কয়েক দিন আগেও তাঁর বাসায় দীর্ঘ সময় মুগ্ধ হয়ে নানা বিষয়ের আলোচনা শুনেছি। রাজনীতির দূরাবস্থায় হতাশ হলেও শেষ জীবনে তিনি ঐক্যের জন্য ব্যাকুল ছিলেন। জাতীয় পর্যায়ে আলেমদের ঐক্যের জন্য তাঁর সুনির্দিষ্ট কিছু প্রস্তাবও ছিল। এ ব্যাপারে লিখেছেনও। জামিয়া ফারুকিয়া নিয়ে নানা স্বপ্নের কথা তিনি সেদিন শুনিয়েছিলেন।
কিন্তু অনেক স্বপ্নের জাল বুনে হঠাৎ করেই চলে গেলেন মহীরুহতুল্য এই মানুষটি। তাঁর ইন্তেকালের সংবাদে এতোটাই ব্যথা পেয়েছিলাম যা কোনো নিকটাত্মীয় মারা গেলেও পাবো কি-না সন্দেহ আছে। কারণ তাঁর সঙ্গে গতানুগতিক আত্মীয়তার কোনো বন্ধন না থাকলেও আত্মার আত্মীয়তার প্রগাঢ় বন্ধন ছিল।
তিনি শুধু আমারই নন, কিশোরগঞ্জের মাটি ও মানুষের অতি আপনজন ছিলেন। এর প্রমাণ তাঁর বিশাল জানাজা। এশিয়া মহাদেশের সর্ববৃহৎ ঈদগাহ ঐতিহাসিক শোলাকিয়ার মাঠে জানাজাপূর্ব যে দৃশ্যটি সেদিন দেখেছিলাম তা আজও চোখে ভাসে।
মানুষ তাঁর ব্যক্তিত্বের বিভায় এবং বহুমুখী কীর্তির দ্বারা মানুষের হৃদয়ের গভীরে এভাবে স্থান করে নিতে পারে- এটা আগে আমার জানা ছিল না। আমার মতো খান সাহেব হুজুরের অসংখ্য রূহানী সন্তানের হাজির হওয়া এবং চোখের পানি ফেলা তো স্বাভাবিক ব্যাপার।
কিন্তু জানাজায় হাজির হওয়া প্রতিটি মানুষের অশ্রুসজল চোখ এবং ব্যথায় বিগলিত হৃদয় কোনো সাধারণ বিষয় নয়।
কিশোরগঞ্জ শহর সেদিন শোকে ছিল মুহ্যমান। প্রতিটি মানুষের চোখে মুখে আমি স্বজনহারা অভিব্যক্তি লক্ষ্য করেছি। দলমত নির্বিশেষে শোলাকিয়া মাঠের দিকে মানুষের যে ঢল নেমেছিল, ইতঃপূর্বে এর কোনো নজির আছে কিনা জানি না।
আমার জানা মতে, কিশোরগঞ্জে এর চেয়ে বড় কোনো জানাজা অনুষ্ঠিত হয়নি। শুধু কিশোরগঞ্জই নয়, আশেপাশের জেলা এবং রাজধানী ঢাকা থেকে মানুষের যে স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণ লক্ষ্য করা গেছে তা সত্যিই না দেখলে বিশ্বাস করার মতো নয়। প্রায় দেড় লাখ লোকের সমাগম ঘটেছিল সেদিন।
জানাজায় আগত সবার ভেতর থেকে চাপা বেদনার অস্ফুট একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসতে দেখা গেছে। একান্ত আপনজন হারালেও মানুষের মধ্যে এ ধরনের প্রতিক্রিয়া সাধারণত লক্ষ্য করা যায় না।
কিশোরগঞ্জের মাঠি ও মানুষের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক কত গভীরে প্রোথিত ছিল সেটা কিছুটা আঁচ করা গেছে সেদিন। জানাজাপূর্ব সে দৃশ্যটি যারা দেখেননি তাদের কাছে এর সঠিক বিবরণ তুলে ধরা হয়ত সহজ হবে না, শুধু সেদিন যারা স্বশরীরে হাজির হয়েছিলেন তারাই অনুধাবন করতে পারবেন প্রকৃত বিষয়টি।
মাওলানা আতাউর রহমান খান রহ. প্রকৃত অর্থেই ওয়ারিসে নবীর একজন বাস্তব প্রতিচ্ছবি ছিলেন। তাঁর মহান ব্যক্তিত্বের বিভা, গুণাবলীর সৌরভ, বৈশিষ্ট্যের স্ফূরণ, আদর্শের গভীরতা ও অবদানের ব্যাপ্তি অনুমান করা বা ছুঁয়ে দেখা আমাদের পক্ষে সম্ভব হবে না।
তবে তিনি চলে গেলেও রয়ে গেছে তাঁর সুবিশাল কর্মময় জীবনের দ্যুতিময় চিত্র। সে চিত্রগুলো আমাদেরকে অন্ধকারে আলোকদিশা দেবে। সাফল্যের পথে জীবনের গতিধারা প্রবাহিত করতে যুগপৎ আন্দোলিত ও অনুপ্রাণিত করবে। আল্লাহ তাআলা তাঁকে জান্নাতের উঁচু মাকাম দান করুন- এটাই আমাদের একান্ত দুআ ও মুনাজাত।
[২০০৮ সালের ৩১ জুলাই মাওলানা আতাউর রহমান খান রহ. ইন্তেকাল করেন। তাঁর চলে যাওয়ার ১০ বছর পূর্তিতে লেখাটি প্রকাশিত]
লেখক: সভাপতি, বাংলাদেশ ইসলামী লেখক ফোরাম
তারুণ্যের বুকে জোয়ার এনেছিলেন মাওলানা আতাউর রহমান খান রহ. : মুুহিব খান
-আরআর