মুফতি আবদুল্লাহ তামিম: আল্লাহ তায়ালা কুরআনুল কারিমে ইরশাদ করেন, তোমরা নারীদেরকে তাদের মোহর দিয়ে দাও খুশিমনে। এরপর তারা যদি স্বেচ্ছায় স্বাগ্রহে ছেড়ে দেয় কিছু অংশ তোমাদের জন্য তাহলে তা স্বচ্ছন্দে ভোগ কর। (সূরা নিসা:৪)
এই আয়াতের প্রধান কয়েকটি শিক্ষা ও বিধান হলো-
১. মোহর আদায় করা ফরয। স্বয়ং আল্লাহ তাআলা মোহর আদায়ের আদেশ করেছেন।
২. মোহর সম্পূর্ণরূপে নারীর প্রাপ্য। তার স্বতঃস্ফূর্ত সম্মতি ছাড়া অন্য কারো তাতে হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই। সুতরাং স্বামী যেমন স্ত্রীকে মোহর থেকে বঞ্চিত করতে, কিংবা পরিশোধ করার পর ফেরত নিতে পারে না তেমনি পিতা-মাতা, ভাইবোন বা অন্য কেউ নিজ কন্যার, বোনের বা আত্মীয়ার মোহর তার স্বতঃস্ফূর্ত সম্মতি ছাড়া নিতে পারে না। নিলে তা হবে কুরআনের ভাষায় ‘আক্ল বিল বাতিল’ তথা অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করা।
৩. মুমিনের কর্তব্য খুশিমনে স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে স্ত্রীর মোহর আদায় করা। কারো অনুরোধ-উপরোধ বা জোর-জবরদস্তির অপেক্ষায় থাকা কুরআনি শিক্ষার পরিপন্থী ও অতি নিন্দনীয় প্রবণতা।
৪. স্ত্রী যদি স্বতঃস্ফূর্তভাবে মোহরের কিছু অংশ ছেড়ে দেয় কিংবা গ্রহণ করার পর স্বামীকে উপহার দেয় তাহলে স্বামী তা স্বচ্ছন্দে ভোগ করতে পারবে।
৫. পূর্ণ মোহর ছেড়ে দেওয়ার বা পূর্ণ মোহর স্বামীকে উপহার দেওয়ারও অধিকার স্ত্রীর রয়েছে, তবে সাধারণ অবস্থায় পূর্ণ মোহর না দিয়ে কিছু অংশ দেওয়াই ভালো।
৬. স্বামী যদি চাপ দিয়ে বা কৌশলে পূর্ণ মোহর বা কিছু অংশ মাফ করিয়ে নেয় তাহলে আল্লাহর বিচারে তা মাফ হবে না। এমনকি এমন পরিস্থিতি যদি আসে যে স্বামী স্ত্রীকে সরসরি বলে মোহর মাপ করে দিতে আর স্ত্রী লজ্জায় সম্মত হয় তারপরও আল্লাহর দরবারে এই মোহর মাপ না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। তাই মোহর আদায় করাই উত্তম।
তথ্যসূত্র: আহকামুল কুরআন, জাসসাস ২/৫৭-৫৮; তাফসীরে ইবনে কাসির ১/৪৪২; বয়ানুল কুরআন ২/৯৩; তাফসিরে উসমানি, পৃ. ১০০।
আরো পড়ুন- দ্রুত বিয়ে করতে যে আমলটি করবেন