আওয়ার ইসলাম: বাংলাদেশের প্রত্যেকটি জেলায় জেলায় আগত রাষ্ট্রীয় অতিথি, ভিভিআইপি, ভিআইপি কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের অবস্থানের জন্য একটি করে সার্কিট হাউজ আছে।
অবিভক্ত ভারতবর্ষে তৎকালীন ব্রিটিশ সরকারের শাসনামলে বিভাগীয় কমিশনার সার্কিটকোর্ট করার জন্য জেলায় যে ভবনে অবস্থান করতেন-সেটি সার্কিট হাউজ নামে পরিচিত।
১৭৯৩ সালে লর্ড কর্নওয়ালিশ কর্তৃক চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত ব্যবস্থা প্রবর্তনের ফলে ইংরেজ সরকার রাজস্ব আদায় বিষয়ক চিন্তাভাবনা থেকে মোটামুটি মুক্ত হয়ে রাজ্যসীমা বিস্তার ও অন্যান্য প্রশাসনিক কাজে মনোযোগী হওয়ার সুযোগ পায়। তখন থেকে ১৮২৮ সাল পর্যন্ত রাজস্ব বোর্ডের একজন জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা জেলা কালেক্টরের নিযুক্তি, বদলি ও সার্বিক কার্যক্রম তদারকি করতেন।
কিন্তু লর্ড উইলিয়ম বেন্টিঙ্কের প্রশাসন লক্ষ্য করে যে, রাজস্ব বোর্ড বিচারবিভাগীয় ও প্রশাসনিক কাজে অধিক ভারাক্রান্ত। জেলায় কাজের সমন্বয় সাধন এবং তত্ত্বাবধানের ক্ষেত্রেও ব্যাপক অভাব পরিলক্ষিত হয়।
এর ফলশ্রুতিতে ১৮২৯ সালে পাশ হয় 'বেঙ্গল রেভিনিউ কমিশনারস্ রেগুলেশন'। সৃষ্টি হয় 'রেভিনিউ কমিশনার' এর পদ, কালক্রমে যাঁর এখনকার পদবী 'বিভাগীয় কমিশনার'।
আইনে বিভাগীয় কমিশনারকে জেলা কালেক্টরেটের আদেশের বিরুদ্ধে রাজস্ব এবং ফৌজদারী বিষয়ক আপিল শুনানীর ক্ষমতা প্রদান করা হয়। তাঁর জন্য প্রতিটি জেলায় তৈরি করা হয় একটি করে 'সার্কিট কোর্ট' যা বর্তমানে 'সার্কিট হাউজ' নামে বহুল পরিচিত।
জেলা পরিদর্শনকালে বিভাগীয় কমিশনারগণ কয়েকদিন যাবৎ সার্কিট হাউজে অবস্থান করে রাজস্ব ও ফৌজদারী আপিল শ্রবণ এবং রাজস্ব আদায় সংক্রান্ত বিষয়াদি দেখভাল করতেন। সেই সময় থেকে সার্কিট হাউজকে বিভাগীয় কমিশনারের ‘Extended Home’ বা বর্ধিত বাসভবন বলা হয়ে থাকে। এ কারণে একমাত্র বিভাগীয় কমিশনারকে সার্কিট হাউজে অবস্থানের জন্য অর্থ পরিশোধ করতে হয় না।
সার্কিট হাউজ বর্তমানে জেলা সফরে আগত রাষ্ট্রীয় অতিথি, ভিভিআইপি, ভিআইপি ও সরকারি উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাগণের সরফকালীন আবাসন হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
সার্কিট হাউজ ব্যবস্থাপনার সার্বিক দায়িত্ব ‘জেলা প্রশাসক’ এর উপর ন্যাস্ত। জেলা প্রশাসকের পক্ষে ‘নেজারত ডেপুটি কালেক্টর’ এ দায়িত্ব পালন করে থাকেন।
সূত্র: উইকিপিডিয়া