মুহাম্মদ ছফিউল্লাহ হাশেমী
বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে দ্বিতীয় মেয়াদে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন রজব তাইয়্যেব এরদোগান। দেড় দশকের শাসনামলে সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়া এ নির্বাচনে বড় বিজয় পেয়েছেন এরদোগান।
রোববার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বির চেয়ে ২২ শতাংশ ভোট বেশি পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। একই দিনে অনুষ্ঠিত পার্লামেন্ট নির্বাচনেও অর্ধেকের বেশি আসন লাভ করেছে এরদোগানের দল জাস্টিজ এন্ড ডেভলপমেন্ট (একে) পার্টি।
গত ১৬ বছরে ১৪ টি নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন রজব তাইয়্যেব এরদোগান। যার প্রতিটিতেই তিনি জয় পেয়েছেন। এর মধ্যে ৬ টি পার্লামেন্ট নির্বাচন, ৩ টি গণভোট, ৩ টি স্থানীয় নির্বাচন ও দুটি প্রেসিডেন্ট নির্বাচন।
৬৪ বছর বয়সী এরদোগানের জনপ্রিয়তা বিশ্ববাসী দেখেছে ২০১৫ সালের ১৫ জুলাই সেনা অভ্যুত্থান চেষ্টার সময়। কেবলমাত্র তার একটি ভিডিওবার্তার ডাকে সাড়া দিয়ে ট্যাঙ্ক, কামানের সামনে শুয়ে পড়ে ষড়যন্ত্র রুখে দিয়েছে নিরস্ত্র জনতা।
একজন রাষ্ট্রনেতাকে কতখানি ভালোবাসলে ট্যাঙ্কের পথ রোধ করতে রাস্তায় শুয়ে পড়তে পারে মানুষ?
প্রেসিডেন্ট এরদোগানের শক্তিশালী নেতৃত্বের কারণে তুরস্ক আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অন্যতম পরাশক্তি হিসেবে আবির্ভূত হতে যাচ্ছে। এছাড়া মুসলিম দেশগুলোর নিকট এরদোগান পরিণত হয়েছেন রোল মডেলে। বিশ্ব রাজনীতিতেও এরদোগান গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম হন।
সিরিয়ার সংকট নিয়ে রাশিয়ায় রাশিয়া, সিরিয়া ও তুরস্ক যুদ্ধ বিরতি চুক্তিতে এরদোগান বিশেষ অবদান রাখেন। এছাড়া তিনি আইএস দমনে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখে চলেছেন।
মিয়ানমারের নির্যাতিত মুসলিম জনগোষ্ঠির পাশে সর্বদাই সুদৃঢ় অবস্থান ছিল এরদোগানের। পাকিস্তান সফরে এসে কাশ্মির নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন এরদোগান। ভারত-পাকিস্তানকে দ্রুত বিষয়টি সমাধান করতেও পরামর্শ দেন তিনি।
আগামী দিনে তার বলিষ্ঠ ভূমিকা মুসলিম বিশ্বের শান্তি ও ঐক্য প্রক্রিয়াকে যে আরো সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে- এটা প্রত্যাশা করা যেতেই পারে।
লেখক: প্রাবন্ধিক ও কলেজ শিক্ষক