আওয়ার ইসলাম: মাদ্রাসায় চালু হচ্ছে কারিগরি বৃত্তিমূলক শিক্ষা। প্রাথমিকভাবে শর্ট কোর্স চালুর পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। পাইলট প্রকল্পে যুক্ত হবে জনগুরুত্বপূর্ণ এবং জনপ্রিয় ট্রেড কোর্সসমূহ। এটি চালু হলে লেখাপড়ার পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষায় দক্ষতায় শিক্ষার্থীরা উপার্জনক্ষম হবে।
ঝরে পড়ার হারও কমবে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের লেখাপড়ার ব্যয় নির্বাহের জন্য পরিবারের আয়ে নির্ভর হতে হবে না। নিম্নমাধ্যমিক বা সমমানের লেখাপড়া থেকে ঝরে গিয়েও যেন তারা উপার্জনক্ষম হয় এই লক্ষ্যে দক্ষতা তৈরির উদ্যোগ নিচ্ছে কারিগরি ও মাদ্রসা শিক্ষা বিভাগ।
নেপথ্যের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ওই বিভাগের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, আমাদের ছেলেমেয়েরা আট বছর, কেউ দশ বছরে শিক্ষাজীবন থেকে ঝরে পড়ে। দেখা গেছে, ছেলেদের ক্ষেত্রে বেশিরভাগ ঝরে যায় পরিবারের অচ্ছলতার কারণে।
তারা সামর্থ্য অনুযায়ী দৈনন্দিন রোজগারে সম্পৃক্ত হয়ে পড়ে পরিবারকে সাহায্যের জন্য; কিন্তু দক্ষতার অভাবে তারা যথাযথ উৎপাদনশীল কর্মক্ষম হতে পারে না। এই শ্রেণির আয়ের জনগোষ্ঠীর কারণে একটা বড় অংশ সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় উৎপাদনশীলতায় ঘাটতি থেকে যায়।
তারা যদি দক্ষ মানবসম্পদে রূপান্তর হতো, তাহলে জিডিপিতে আরও বেশি ভূমিকা রাখতে পারত। একজনের আয়ের ওপর একটি পরিবার, তাদের সমাজ, শেষের স্তর রাষ্ট্রীয় সূচকগুলোয় প্রভাব ফেলে।
এ প্রসঙ্গে কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (মাদ্রাসা) রওনক মাহমুদ আমাদের সময়কে জানান, মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত লেখাপড়া করেও একজন শিক্ষার্থী যাতে সাধারণ আয়ের পথ খুঁজতে পারে, সেই লক্ষ্যে কারিগরি শিক্ষা চালুর পরিকল্পনা করছে সরকার। পাইলট প্রকল্পে জনগুরুত্বপূর্ণ এবং জনপ্রিয় ট্রেড কোর্স চালু করা হবে।
জানা গেছে, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মানব উন্নয়নের সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ এখন তরুণ জনগোষ্ঠীর দেশ। এ দেশের কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা ১০ কোটি ৫৬ লাখ; যা মোট জনসংখ্যার ৬৬ শতাংশ।
সংস্থারটির মতে, জনসংখ্যাতাত্ত্বিক এ পরিস্থিতি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য অনেক বড় সুযোগ এনে দিয়েছে। নির্ভরশীল জনগোষ্ঠীর একটা শ্রেণি হলো ০-১৪ বছর বয়সী জনগোষ্ঠী, যা বর্তমানে মোট জনসংখ্যার ২৭ শতাংশ। এখন ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ট বা জনসংখ্যাতাত্ত্বিক বোনাসকালে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ। এই জনগোষ্ঠীকে জনসম্পদে রূপান্তরের জন্য কারিগরি শিক্ষাই মূলভিত্তি বলে মনে করছে সরকার।
এইচজে