ডাঃ মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ
এন্ডোমেট্রাইসি বা তলপেটে সাধারণত মাসিকের সময় অসহনীয় ব্যথা।কি যাতনা বিষে বুঝিবে সে কিসে দংশেনি যারে।ব্যথার জ্বালা না দেখান যায় না বোঝান যায়।মহিলারা চাপা স্বভাবের হওয়ায় শরীরের সমস্যা লুকিয়ে রাখতে চেষ্টা করে এবং ঔষধও খেতে চায় না।
এমনও মহিলা আছে যে,নিজের সমস্যার কথা মনের মানুষ তথা স্বামীকে পর্যন্ত বলতে চায় না। মহিলাদের অনেকে তলপেটে ব্যথা এবং শ্রোণী দেশের ব্যথায় ভোগেন। বিশেষ করে মাসিক হওয়ার আগে তলপেটে প্রচন্ড ব্যথা শুরু হয়।মাসিক হওয়ার সময় ব্যথা খুব বেড়ে যায় এবং মাসিক শেষে ব্যথা কমে যায়।এই ব্যথার সাতে কিশোরি বয়সের মাসিকের সূচনার মিল থাকে না।
যৌন মিলনের সময় বা পরে তলপেটে প্রচন্ড যন্তণা হয়। জুরায়ুর ভিতরে যে লাইনিং থাকে অর্থাৎ যাকে প্রাচীর বলা যায় লাইনিং তথা জুরায়ুর ভিতরকার ঝিল্লী জুরায়ুর বাইরে যোনি দেশের বিভিন্ন অংশে ঢুকে যায়।ওভারী বা ডিম্বাসয়েওপেরিটোনিয়মে ঢুকতে পারে।
আবারওবৃহদনতের গায়ে লেগে যেতে পারে।যার ফলে মাসিক ঋতুচক্র জরায়ুর বাইরেও হতে পারে।কিন্ত সেই রক্তস্রাব বাহিরে বেড়োনের পথ না পেয়ে সেখানে রক্ত জমাট বাঁধতে থাকে বা সিস্ট তথা ছোট ছোট রক্তপূর্ণ থলির মতো হয়ে যায়।পরর্বতীকালে রক্ত থেকে জলীয় অংশ শোষিত হয়ে যায়।
সেই জমা রক্তের রং চকলেটের মত গাঢ় হয়।তাই একে চিকিৎসকরা চকলেট সিস্ট বলে।এই সিস্ট শরীরের যে কোন জায়গাতে হতে পারে।তবে অধিকাংশ ক্ষেএে এই সিস্ট হয় ডিম্বাশয়ের জুরায়ুর পিছনে দিকে এবং জুরায়ুর ধারে।এই রোগের ক্ষেএ ওভারি,ফ্যালোপিয়ান টিউব।
পেরিটোনিয়াম আক্রান্ত হলে এটি জট পাকিয়ে সন্তান ধারণের সম্ভাবনাকে নষ্ট করে দেয়।সাধারণত সন্তান জন্ম দেওয়ার বয়সের(১৮-৪৫)বছর পর্যন্ত এন্ডোমেট্রাইসি দেখা যায়।মনে রাখতে হবে জুরায়ুর অন্তর বেষ্টকের প্রদাহ এন্ডোমেট্রাইসির মূল সমস্যা হলে ব্যথা।
এন্ডোমেট্রাইসির লক্ষণ:
১.অনিয়মিত মাসিক২.মাসিকের সময় তীব্র যন্তণাদায়ক ব্যথা ৩.বেদনায় সহবাসের সময় স্পর্শ পর্যন্ত করতে দেয় না। ৪.মল-মূএ ত্যাগ কালে যৌনি দিয়ে রক্ত বের ও ব্যথা হয়। ৫. হাত,পা,শরীরে আগুনে পোড়ার মত জ্বালা করে। ৬. প্রস্রাবের সময়ওপরে তীব্র যন্তণাদায়ক বেদনা।৭. জুরায়ুর গ্রীবা ফোলা ও শক্ত থাকে। ৮. জন্ম নিয়ন্তণ বড়ি সেবনও কপাটি ব্যবহার করার কারণে এন্ডোমেট্রাইসি হতে পারে।তলপেট,কোমরের নিচে ব্যথা হয় এবং সে ব্যথা লাগাতার চলতে থাকে।
মূএথলি এবং পায়ুদার লাগোয় এলাকাতেওব্যথা হয়। এ সময় জীবনে ক্লান্তি,হতাশা,বিষন্নতার যেন স্বাস্হ্য ভেঙে পড়তে থাকে এবং মানসিক অবসাদ কুরে অপারেশন হয়েছে সেই কাটা এলাকা থেকেওকারো কারো এন্ডোমেট্রাইসি হয়।
এন্ডোমেট্রাই কেন হয়
আমরা সোজাভাবে বলে থাকি,মাসিকের সময় জরায়ুর এন্ডোমেট্রিয়াম তথা জরায়ুর ভিতরকার ঝিল্লি পর্দা পুরু হয়ে যায়।শুক্রাণু বা ডিম্বানু যাতে জরায়ুর দেওয়ালে গেঁথে যেতে পারে সেজন্যই এই প্রাচীর পুরু হয়ে থাকে।
কিন্ত গর্ভযোগ না ঘটলে অর্থাৎ ডিম্ব না তৈরি হলে পুরু হয়ে যাওয়া এই প্রাচীর খসে পড়ে। কারণ এই সব জরায়ুর অন্তর বেষ্টকে প্রদাহ কোষ ফ্যালোপিয়ান টিউব দিয়ে পেটের মধো ঢুকে গেল এই এন্ডোমেট্রিয়াল কোষ সেখানে বাড়তে থাকে এবং পরবর্তীকালে মাসিকের সময সেখান থেকে পেটের ভিতরে রক্তস্রাব হয়।সেই রক্তস্রাব জমে জমে এন্ডোমেট্রাইসি হয়।
যারা অনেকদিন ধরে গর্ভরোধ করে থাকেন তাদেরই এই রোগে বেশি আক্রান্ত হতে দেখা যায়।এই রোগে আক্রান্তরা অনেকেই পায়খানা করার সসয় ব্যথা টের টান।কারো কারো শরীরে জ্বর জ্বর ভাবওদেখা যায়।বারবার প্রস্রাব হয়,প্রস্রাবের সস্গে রক্ত পড়ে।
জরায়ুর বা ওভারি অপারেশনের পর পেটের কাটা জায়গায় বা নাভিমূলে এই রোগ নীল রঙের পিন্ড তথা সিস্ট থেকে রক্তস্রাব হওয়ার ফলে সে জায়গায় ফুলে ওঠেও চামড়ার ওপর থেকে তা ণীলবর্ণ দেখতে হয়।সিজারিয়ান সেকশন,টিউবেকটামির অস্ত পাচারের দাগ।
এপিসিয়েটমির দাগ থেকেওএন্ডোমেট্রাইসি হয়।কিছু মহিলার শরীরে জ্বিনগত কারণেওএন্ডোমেট্রাইসি হয়।ডিম্বাশয়( ওভারি) যদি আক্রান্ত হয় তাহলে ডিম্বাণুর প্রবাহ ব্যাহত হবে।ভুরণ তৈরি হবে না।জরায়ুতে এন্ডোমেট্রাইসি হলে সেখানে ভু্রণ হতে পারে না।
রোগ বাড়তে থাকলে ফ্যালোপিয়ান টিউব এবং ওভারী জট পাকিয়ে ফ্যালোপিয়ান টিউব অবরুদ্ধহয়ে যায়।ডিম্বানু প্রবেশ ও নির্গমন বন্ধ হয়ে যায়।কখনো ফ্যালোপিয়ান টিউবও ওভারি জট পাকিয়ে যায়।বড় সিস্ট হলে অন্তনালী,পায়ু,মলাশয় সব জট পাকিয়ে যেতে পারে চিকিৎসক ভিতরটা পরীক্ষা করে সিস্টের অবস্হান অনুভব করতে পারেন।রোগ নির্ণয়ে পরিক্ষা আল্ট্রাসোনোগ্রফি,সিটিস্ক্যান,এম. আর. আই স্ক্যানের মাধ্যমে এন্ডোমেট্রাইসি শনাক্ত করা যায়।
হোমিওপ্রতিবিধান রোগ নয় রোগীকে চিকিৎসা করা হয় এই জন্য এক জন অভিজ্ঞ হোমিওচিকিৎসকে রোগীর পুরা লক্ষন মিলিয়ে চিকিৎসা দিতে পারলে তাহলে এন্ডোমেট্রাইসি বা তলপেট ব্যথার রোগীর চিকিৎসা দেয়া আল্লাহ রহমতে সম্ভব।
লেখক
ইসলামী হোমিও রিসার্চ সেন্টার
বি,এম এ রেল গেইট ভাটিয়ারী সীতাকুন্ড চ্ট্টগ্রাম
ডাঃ মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন (মাজেদ)
কো-চেয়ারম্যান, হোমিওবিজ্ঞান গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র
[email protected]
01822869389
আরো পড়ুন- এ গরমে জন্ডিস থেকে সাবধান