আওয়ার ইসলাম: বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে বাইরে রেখেই নির্বাচন করতে চায় সরকার।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়া বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। অন্য দিকে তারেক রহমানকে মানিলন্ডারিংয়ের মামলায় সাত বছরের জেল দেয়া হয়েছে। তিনি বর্তমানে লন্ডনে অবস্থান করছেন। আগামী নির্বাচনের আগেই তাদের বিরুদ্ধে চলমান আরো একাধিক মামলার রায় হতে পারে।
এরই মধ্যে সাজা হওয়ায় আইন অনুযায়ী মা ও ছেলে উভয়েই নির্বাচনে অযোগ্য হতে পারেন। ফলে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে বাইরে রেখেই জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা হতে পারে বলে আওয়ামী লীগ ও সরকারের একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
সূত্রগুলো জানায়, কারাগারে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া খুবই অসুস্থ। সেজন্য বেশ কিছু দিন ধরে বেসরকারি হাসপাতালে তার সুচিকিৎসা দাবি করে আসছে বিএনপি। আর বিএনপির দাবি মেনে শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের আগে খালেদা জিয়াকে জামিন অথবা উন্নত চিকিৎসার জন্য প্যারোলে দেশের বাইরেও পাঠানো হতে পারে।
নির্বাচনকালের মধ্যে সুস্থ না হলে বিদেশেই থাকতে হতে পারে তাকে। অন্য দিকে তারেক রহমান দণ্ড নিয়ে বিদেশে রয়েছেন। তিনি যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছেন। সেজন্য বাংলাদেশী পাসপোর্টও জমা দিয়েছেন। বিষয়টি রাজনীতিতে উত্তাপ ছড়াচ্ছে।
তার নাগরিকত্ব নিয়ে বিতর্ক করছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। তবে এ অবস্থায় তিনি আপাতত দেশ ফিরছেন না বলেই ধরে নেয়া হচ্ছে। ফলে আগামী নির্বাচনে তাদের দুই জনের অংশগ্রহণের সুযোগ নেই বলে আওয়ামী লীগ ও সরকারের একাধিক সূত্র আভাস দিয়েছে।
আগামী নির্বাচনে খালেদা জিয়ার অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘খালেদা জিয়াকে আওয়ামী লীগ সাজা দেয়নি। সাজা দিয়েছে আদালত। তাই তিনি কবে মুক্তি পাবেন এবং আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন কিনা সেটি আদালতই সিদ্ধান্ত দেবে।’
সূত্রগুলো জানায়, সংবিধান অনুযায়ী আগামী ডিসেম্বরের নির্বাচন নিয়ে প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে এনেছে আওয়ামী লীগ। নির্বাচনে বিজয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে এরই মধ্যে নানা কৌশল নিয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের নীতিনির্ধারকেরা।
ওই কৌশলে প্রথমেই খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে বিজয়ের পথে বড় বাধা হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। সে জন্য শুরু থেকেই খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে নির্বাচন থেকে বাইরে রাখার বিষয়টি বেশ সক্রিয়ভাবে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছিল। আর আদালতে তাদের দুইজনের সাজা হওয়ায় সরকারের জন্য তা আরো সহজ হয়ে গেল।
সরকারের নীতিনির্ধারকেরা মনে করছেন, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে নির্বাচনের বাইরে রাখা গেলে বিএনপি দুর্বল হয়ে পড়বে। শুধু তাই নয়, সুষ্ঠু নির্বাচনের নিশ্চয়তা দেয়া হলেও দলের দুই শীর্ষ নেতাকে বাদ দিয়ে বিএনপি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে না-ও যেতে পারে।
এতে আওয়ামী লীগ আগের মতো একতরফা নির্বাচনে কোনো বাধা ছাড়াই আবারো ক্ষমতায় চলে আসতে পারবে। অন্য দিকে বিএনপি যদি দুই শীর্ষ নেতাকে বাদ দিয়েই নির্বাচনে আসতে রাজি হয় তবে ওই নির্বাচনে নেতাকর্মীদের আর তেমন কোনো আগ্রহ থাকবে না।
ফলে এমনিতেই আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়ে আবারো সরকার গঠন করতে পারবে। সে জন্য নির্বাচনে বিজয় নিশ্চিত করতে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে বাইরে রাখার বিষয়টি ভাবছে সরকার।
অারো পড়ুন- জাতীয় নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন মাহাথির মোহাম্মদ