আওয়ার ইসলাম: আগামী ২৫ এপ্রিল দেশে আসতে যাচ্ছে তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি)। তরল থেকে একে ফের গ্যাসে রূপান্তর করে সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে গ্রাহকের কাছে পৌঁছাতে সবমিলিয়ে ১৫ দিনের মতো সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন পেট্রোবাংলার কর্মকর্তারা।
সে হিসেবে আগামী মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের মাঝামাঝি এলএনজি ব্যবহার করতে পারবেন গ্রাহকরা। প্রথম পর্যায়ে চট্টগ্রামে এই গ্যাস সরবরাহ করা হবে।
জ্বালানি মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, জ্বালানি সংকট দূর করতে দেশে প্রথমবারের মতো এলএনজি আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়। তরল আকারের এই গ্যাস আসবে কাতার থেকে। প্রথমে প্রতিদিন ৩০০ মিলিয়ন (৩০ কোটি) ঘনফুট এলএনজি আসবে। পর্যায়ক্রমে সরবরাহ বাড়িয়ে ৫০০ মিলিয়ন (৫০ কোটি) ঘনফুট করা হবে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জি এই এলএনজি আমদানি করবে।
প্রথমবার এক্সিলারেট এনার্জি তাদের রি-গ্যাসিফিকেশন ইউনিটে এক লাখ ৩৮ হাজার ঘনমিটার এলএনজি বাংলাদেশে নিয়ে আসবে। এর আগে ২২ বা ২৩ এপ্রিল এই ইউনিট বাংলাদেশে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
এ বিষয়ে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের অধ্যাপক ম. তামিম বলেন, ‘এলএনজির আমদানি বর্তমান সরকারের একটি বড় উদ্যোগ। এতে দেশের গ্যাস ঘাটতি কিছুটা হলেও কমবে। এখন পর্যন্ত যেসব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তা বাস্তবায়ন হলে আগামী কয়েক বছরেরর মধ্যে দেশে প্রায় ২০০০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি আমদানি হবে। এতে গ্যাসের ঘাটতি যেমন পূরণ হবে, তেমনি গ্যাসের দামও সমন্বয় করতে হবে সরকারকে।
জ্বালানি মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, এক্সিলারেটের পর বাংলাদেশে পর্যায়ক্রমে এলএনজি আনবে আরও তিনটি কোম্পানি। সামিট, রিলায়েন্স, হংকং সাংহাই মানজালা। প্রত্যেকেই ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট করে গ্যাস বাংলাদেশ আনবে। এক্সিলারেটের সঙ্গে ২০১৬ সালের ১৮ জুলাই চুক্তি স্বাক্ষর করে পেট্রোবাংলা। চুক্তি অনুযায়ী, এ মাসেই তাদের এলএনাজি আমদানির কথা ছিল।
২০১৭ সালের ২০ এপ্রিল সামিটের সঙ্গে চুক্তি করে পেট্রোবাংলা। তাদেরও এ বছরের অক্টোবরে এলএনজি আনার কথা রয়েছে। এছাড়া রিলায়েন্স ও হংকং সাংহাই মানজালার সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ। এরমধ্যে রিলায়েন্স ২০১৯ সালের জুন মাসে এবং মানজালার ২০২০ সালের জুন মাসে এলএনজি আমদানির সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।
এই এলএনজি সঞ্চালনের কাজও শুরু হয়েছে। গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি অব বাংলাদেশ (জিটিসিএল) জানায়, এরইমধ্যে মহেশখালী–আনোয়ারা-১ নামের পাইপলাইন স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে। মহেশখালী থেকে আনোয়ারা (২ নম্বর সঞ্চালন লাইন), আনোয়ারা থেকে ফৌজদারহাট, চট্টগ্রাম থেকে ফেনী, ফেনী থেকে বাখরাবাদ এবং কটুম্বপুর থেকে মেঘনাঘাট সঞ্চালন লাইনগুলো নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
আরো পড়ুন- সৌদি বিমানবন্দর লক্ষ্য করে ইয়েমেনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা