আতাউর রহমান খসরু: এথেন্স। ইউরোপের একমাত্র শহর ও রাজধানী যা আল্লাহর ঘর বুকে ধারনের সৌভাগ্য থেকে বঞ্চিত। বিগত একশো বছর এথেন্স দুর্ভাগ্যের এ বোঝা বহন কর বেড়াচ্ছে।
১৮৩২ সালে গ্রিস তুর্কি খেলাফতের কাছ থেকে স্বাধীন হয়ে যাওয়ার পর থেকে সেখানে কোনো মসজিদ চালু রাখা বা নির্মাণের সুযোগ দেয়া হয় নি।
নাগরিক স্বাধীনতার এ যুগে এসেও এথেন্সের অর্ধ মিলিয়ন মুসলিম তাদের প্রাণকেন্দ্র মসজিদ নির্মাণের অবকাশ পায় নি। এথেন্সে বসবাসকারী মুসলিমরা বাড়ির নিচ তলায় বা খোলা স্থানে নামাজ আদায় করে। সুতরাং মসজিদ তাদের নাগরিক ও ধর্মীয় অধিকার।
মুসলিম নাগরিকদের দাবির মুখে এথেন্সে একটি মসজিদ নির্মাণের কাজ চলছে। কিন্তু সরকার নামাজের জন্য খুলে দেয়ার অনুমতি দিচ্ছে না।
আজ চার বছর আগে যখন গ্রিসের সরকার এ মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নেয় তখন স্থানীয় অতি ডানপন্থী দলগুলো তার বিরোধিতা করে। তারা শ্লোগান দিয়েছিলো, ‘মসজিদ নির্মাণ করলে সংসদ ভবনে কর।’
দ্য গোল্ডেন ডন পার্টি ঘোষণা দেয় মসজিদ নির্মাণ প্রকল্পের অবসান না হওয়া পর্যন্ত তারা এর প্রতিবাদ করে যাবে।
নির্মাণাধীন মসজিদটি সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেয়ার পথে সবচেয়ে বড় বাধা খ্রিস্টান অর্থডক্স চার্চ। চার্চের প্রধান পাদ্রি বিশপ সেরাপহিম এথেন্সের মসজিদ নির্মাণ ঠেকাতে একটি মামলাও ঠুকে দেন।
তিনি দাবি করেন, মসজিদ নির্মাণ গ্রিসের সংবিধান বিরোধী এবং গ্রিসকে ইসলামায়নের শামিল।
বিশপ সেরাপহিম বলেন, আমি বিষয়টি এভাবে উল্লেখ করতে চাই, এথেন্স ইউরোপের একমাত্র রাজধানী যা চারশো বছর ইসলামের অধীনে ছিলো এবং দুইশো বছর আগে বহু রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা লাভ করে।
উল্লেখ্য, স্বাধীনতার পর গত শতকের শুরু ভাগে গ্রিসের আলেকজেন্দ্রিয়া, ভেরোরিয়া, থিসালোনিকি, ডিডিমোটেইকো ও এভরোসে বহু সংখ্যক মসজিদ ছিলো। যা ধীরে ধীরে বন্ধ করে দেয়া হয়।
গ্রিসে তুর্কি আমলে নির্মিত বহু স্থাপনাও ধ্বংস করা হয়। সে ধারাবাহিকতা এখনও অব্যাহত রয়েছে। এমনকি সাম্প্রতিক সময়েও রোডস এন্ড কোস দ্বীপের একটি তুর্কি মসজিদ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
তবে সাম্প্রতিক গ্রিসের মুসলিমরা একটি এসোসিয়েশনের মাধ্যমে বন্ধ করে দেয়া মসজিদ খুলে দেয়ার জন্য আন্দোলন শুরু করেছে।
তারা বলছে, ক্ষতিগ্রস্থ মসজিদগুলো তারা নিজস্ব অর্থায়নে সংস্কার করবে। কিন্তু গ্রিস সরকার তার অনুমতি দিচ্ছে না।
রয়টার্স ও ডেইলি সাবাহ থেকে আতাউর রহমান খসরুর অনুবাদ
-আরআর