শাহনাজ শারমিন
ফিচার রাইটার
খাবার, শুনলেই মনে হয় সারাদিনই শুধু খাই খাই। না সারাদিনই খাবার নয়। না জেনে সবসময় সব খাবার খাওয়া ঠিক না। খাওয়ার সময়-গময় কিন্তু আছে। আছে তালিকাও। এই ব্যাপারটি শুধু মানতে হবে। আপনার সুন্দর দিনটি শুরু করবেন সকালের নাস্তা দিয়ে। কখনোই সকালের নাস্ত ছাড়া বাইরে নয়।
আবার কোনো রকম খেয়েও দ্যেড় দিতে পারবেন না। কেননা, সাস্থ্যকর খেলেন নাকি যা তা খেলেন, সেদিকে খেয়াল করতে হবে। আসল কথা হচ্ছে, অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার চেয়ে সকালের নাস্তা পরিত্যাগ করা অনেক উত্তম। তথাপি, সঠিক মানের খাবার যা আপনার শক্তি যোগাবে এবং দিনের বাকি অংশে অতিরিক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত রাখবে।
সকালের নাস্তায় খাওয়ার মতো কতগুলো আদর্শ খাবার নিয়ে আলোচনা করা হল:
সেদ্ধ ডিম
ডিম নিঃসন্দেহতীভাবে স্বাস্থ্যকর এবং সুস্বাদু খাবার। গবেষণায় দেখা যায় যে, সকালে ডিম খাওয়া পরিপূর্ণতার অনুভূতি দেয়, ডিম রক্তে দ্রুত সুগার এবং ইনসুলিনের মাত্রা রক্ষণাবেক্ষণ করতে সাহায্য করে। ডিমে থাকে উচ্চ মাত্রায় প্রোটিন এবং বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিউট্রিশন। ডিম দেহের জন্য প্রযোজনীয় কোলেস্টেরল এর যোগান দিতে সাহায্য করে।
টক দই এবং মিক্সড ফল
টক দই এর সাথে মিক্সড ফল হতে পারে আপনার সকালের নাস্তার সেরা খাবার। কারণ, টক দই এবং মিক্সড ফল হচ্ছে মসৃণ, সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর খাবার । টক দইয়ে থাকা উচ্চ মাত্রায় প্রোটিন, ক্ষুধামন্দা এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে। ফল হচ্ছে খুবই পরিপূর্ণ এর উচ্চ মাত্রায় আঁশ এবং পানির উপস্থিতির জন্য। ফল হচ্ছে ভিটামিন, পটাশিয়াম এবং আঁশের জন্য ভালো উৎস। এতে আরো রয়েছে এন্টি-অক্সিডেন্ট যা রোগের সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়।
কফি
দিন শুরু করার জন্য কফি হচ্ছে দারুণ একটি পানীয়। এতে রয়েছে প্রচুর ক্যাফেইন, যা মেজাজ এবং মানসিক সক্ষমতা উন্নতকরণে কার্যকর ভূমিকা রাখে। এমনকি স্বল্প পরিমাণ ক্যাফেইন এসকল কার্যকারিতা অর্জন করতে সাহায্য করে। দিনের প্রথম ভাগে এক কাপ কফি হলে দারুণ হয়। এতে থাকা ক্যাফেইন মেজাজ, মানসিক সক্ষমতা এবং সজীবতা বৃদ্ধি করে।
ওটমিল
শস্যদানা প্রেমীদের জন্য ওটমিল একটি দারুণ পছন্দের নাস্তা। ওটমিল বিটা-গ্লুকান আঁশে সমৃদ্ধ, যা কোলেস্টেরল কমায় এবং তৃপ্তির অনুভূতি বাড়ায়। এতে আরো থাকে এন্টি-অক্সিডেন্ট। তাছাড়া দেহের অতিরিক্ত মেদ কমাতে ওটমিল সারাবিশ্বে জনপ্রিয় নাস্তার আইটেম।
আঙ্গুর, কলা, আপেল, কমলা
আঙ্গুর, কলা, আপেল, কমলা এগুলো খুবই সুস্বাদু এবং এন্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। এসব খাবারে থাকে প্রচুর পরিমাণে আঁশ এবং কম ক্যালরি। যা কিনা এন্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ, যা রোগের আশঙ্কা হ্রাস করে।
বাদাম
বাদাম খুবই সুস্বাদু, মজাদার । এটি হচ্ছে সকালের নাস্তার দারুণ আইটেম কারণ এগুলো তৃপ্তিদায়ক, পরিপূর্ণতাদানকারী এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে। বাদাম হচ্ছে পরিপূর্ণ নিউট্রিশন সমৃদ্ধ খাবার যা হৃদরোগের সম্ভাবনা কমাতে সাহায্য করে এবং ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
গ্রীন টি
গ্রীন টি হচ্ছে সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর পানীয়’র মধ্যে অন্যতম একটি। এতে থাকা ক্যাফেইন, যা সজীবতা এবং মেজাজ রাখে ফুরফুরে এবং হজমের হার বৃদ্ধি করে। ডায়বেটিকসের ক্ষেত্রে গ্রীন টি হতে পারে বিশেষ সাহায্যকারী। গ্রীন টি’র রয়েছে অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা। এতে রয়েছে এন্টি-অক্সিডেন্ট, যা মস্তিষ্ক এবং স্নায়ু সিস্টেমের জন্য উপকারী।
এই খাবারগুলোকে আদর্শ খাবার বলা চলে কেননা, সঠিক পুষ্টি সময়মতো ভিটামিন, শক্তি যোগায় এসব খাবার। ব্যস্ত এই শহরে কাজের তাগিদে সময় কে বাঁচাতে ইচ্ছে মতো খাবার খান। কেউ সকালে ভাত খান, কেউ খান রুটি ভাজি, কেউ আবার পাউরুটি কলা। তবে যাই খান না কেনো আদর্শ খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। শরীরকে ভালো আর সুস্থ রাখতে খাবার গ্রহণের প্রথম শর্ত হলো একবারে পেট ভরে নয়, অল্প অল্প করে বার বার খাবেন।
আরও পড়ুন : খাবার নিয়ে ৫ গুজব