আওয়ার ইসলাম: বাংলাদশে বিমানের এক কর্মকর্তা হোটেলে নিয়ে সহকর্মীকে জড়িয়ে ধরে অশ্লীল আচরণ। অতঃপর অনৈতিক প্রস্তাব। রাজী না হওয়ায় জোর করে যৌন হয়রানি।
বিভাগীয় তদন্তে প্রমাণ হলো এসব অভিযোগ। সাজা পেলেন। সাজায় স্পষ্টভাবে তাকে ‘পদাবনতি’ দেয়ার কথা উল্লেখ ছিল। কিন্তু যৌন হয়রানির সার্টিফিকেটধারী ওই কর্মকর্তা পেলেন ডাবল ‘পদোন্নতি’।
তিনি হচ্ছেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বর্তমান উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মো. নুরুজ্জামান (রঞ্জু)। তার বিরুদ্ধে বিমানের ফ্লাইট বিরতির সময় এক কেবিন ক্রু’কে (বিমানবালা) হোটেলে নিয়ে যৌন হয়রানি অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।
ওই তরুণী বলেন, নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করে বিমানের 'কেবিন ক্রু' পদে মাত্র যোগ দিয়েছি। তখনও এয়ারলাইন কী তা ভালোভাবে বুঝে উঠতে পারিনি। কাজে যোগদানের পরপরই ২০১৪ সালের আগস্ট মাসের ২৭ তারিখ বিজি-০১৫ ফ্লাইটে ঢাকা থেকে লন্ডনে যাই।
সেখানে যাত্রা বিরতিতে ফ্লাইটের ক্রু ও বিমানের সংশ্লিষ্টরাসহ হোটেল সেইন্ট গিলসে উঠি। সেখানে কেবিন ক্রু সিনহা একটি ডিনার পার্টি দিয়েছে বলে আমাকে জানিয়েছিলেন তৎকালীন চিফ পার্সার নুরুজ্জামান রঞ্জু। আমি ও আমার রুমমেট ক্রু দীপিকার সেই ডিনারে অংশগ্রহণ করার কথা ছিল। কিন্তু সে তার এক আত্মীয়ের বাসায় যাওয়ায় আমি একা হয়ে যাই।
সন্ধ্যার পর ডিনারে যাওয়ার জন্য চিফ রঞ্জু আমাকে বারবার কল করে। তারপর আমি, রঞ্জু এবং সিনহা একসঙ্গে খাবার কিনে রঞ্জুর রুমে বসি। ১৫-২০ মিনিট পর হঠাৎ টের পাই রঞ্জু আমার কাঁধে মাথা রেখে আমাকে জড়িয়ে ধরে বসে আছে। আমি তাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে জানালার সামনে গিয়ে দাঁড়াই। তখন সে আমাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে অশ্লীল আচরণ শুরু করে।
এ ঘটনায় ঢাকায় ফিরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে ওই তরুণী। দীর্ঘ ৭ মাস তদন্তের পর রঞ্জুকে দোষী সাব্যস্ত করেন বিমানের তদন্ত কর্মকর্তা। রঞ্জুর বিরুদ্ধে দেয়া প্রতিবেদনে তার ‘অশোভন, অনৈতিক আচরণ এবং আপত্তি করা সত্ত্বেও জোর করার’ বিষয়টি প্রমাণিত হয়। ২০১৫ সালের ২ জুন শাস্তিস্বরূপ তাকে ‘চিফ পার্সার’ থেকে ‘ফ্লাইট পার্সার’ পদে পদাবনতির (ডিমোশন) নির্দেশ দেয়া হয়। (সূত্র নম্বর-ঢাকজিক্স/৩১/পি-৩১৯৭৩/২০১৫/৮০)
তবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের প্রশাসন পরিদফতর ও তদন্ত শাখার এই প্রতিবেদন উপেক্ষা করে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে রঞ্জুকে বিমানের ম্যানেজার পদে পদন্নোতির দেয়ার জন্য সাক্ষাৎকার নেয়া হয়। সাক্ষাৎকারে তাকে কৃতকার্য করে ২০১৭ সালের মার্চে ম্যানেজার পদে পদোন্নতি দেয়া হয়।
আরো পড়ুন- তালাক নিয়ে ভারতীয় মুসলিম নারীদের ব্যাপারে মিডিয়া যা বলছে তা কতটা সত্য?