আবদুল্লাহ তামিম: মিশরের প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন দেশটির সাবেক জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ-আল সিসি। তিন দিনব্যাপী ভোট শেষে সোমবার চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে।
সেখানে দেখা গেছে, মিশরবাসীর ৯৭ শতাংশ ভোট স্বৈরশাসক সিসি পেয়েছেন, যেটিকে বিশ্ব রেকর্ডই বলা চলে। ফলে আরও চার বছরের জন্য ঐতিহ্যবাহী দেশটিকে শাসন করবেন আবদেল ফাত্তাহ-আল সিসি।
অবশ্য এই ভোটকে আগে থেকেই এক ব্যক্তি কেন্দ্রিক বলা হচ্ছিল। কারণ, সিসি’র একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী মধ্যপন্থী রাজনীতিবিদ মুসা মোস্তফা সেই অর্থে পরিচিত নন। ভোটের অল্পদিন আগে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আসেন। তাছাড়া তার দল গঠনে সিসিই সহায়তা করেছিলেন। বাকি যে ছয়জন নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছিলেন, তারা হয় পলাতক, না হয় কারাগারে বন্দি।
সোমবার ফলাফল ঘোষণা করে মিশরের নির্বাচন কমিশন বলেছে, এবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৪১ দশমিক ৫ শতাংশ ভোট পড়েছে। এর মধ্যে ৯৭ শতাংশ ভোট পেয়েছেন সিসি।
একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী মুসা মোস্তফা পেয়েছেন ৩ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। আর প্রায় ১০ লাখ ভোটার তাদের নষ্ট ব্যালট পেপার জমা দিয়েছেন। যদিও পরে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, কোনো ভোট নষ্ট হয়নি।
দেশটিতে ২০১৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৪৭ শতাংশ ভোট পড়েছিল। ওই নির্বাচনেও স্বৈরশাসক সিসিকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছিল।
ওয়াশিংটনভিত্তিক কার্নেগি আন্তর্জাতিক শান্তি সংঘের ফেলো সারাহ ইয়াকেস আলজাজিরাকে বলেন, ‘এই নির্বাচন সম্পূর্ণভাবে প্রভাবিত। এটি তামাশার নির্বাচন।’
তিনি বলেন, ‘মিশরের একটি মানুষও বিশ্বাস করেন না সিসি গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। অর্থনৈতিক উন্নতি, স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তার স্বার্থে গণতন্ত্রের পক্ষে দেশটির অনেক মানুষ তাদের সুখ বিসর্জন দিয়েছেন। কিন্তু, তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি।’
গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে সরিয়ে ক্ষমতা দখল করেন আবদেল ফাত্তাহ-আল সিসি। এরপর তার প্রথম শাসনামলে মিশর সন্ত্রাসবাদের মুখে পড়ে। অর্থনীতিতে ভাটা দেখা দেয়।
এখন পর্যন্ত শুধুমাত্র সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত ছাড়া গালফ অঞ্চলের কোনো দেশ তার প্রতি সেই অর্থে সমর্থন দেয়নি। এই দেশগুলো মিশরে ব্যাপকহারে বিনিয়োগ করেছে।
মিশরের বর্তমান জনসংখ্যা প্রায় ৮ কোটি ৪০ লাখ। আরব দেশগুলোর মধ্যে সর্বাধিক জনসংখ্যার এ দেশটির মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
আরো পড়ুন- ‘গণমাধ্যম নারীদের ক্রীড়নক বানিয়ে ইসলামের বদনাম করছে’