শাহনাজ শারমিন : আপনার দুই হাত কতটা কাজ করে প্রতিদিন তা কি আপনি খেয়াল করছেন ? হয়তো না। কাজের কথা এলে আগে হাত-ই প্রস্তুত হয়ে থাকে। তবে হাত ছাড়া জীবনযাপনের কথা ভাবতেই কষ্ট হয়। যার হাত নেই সেই শুধু বোঝে.. আর কেউ নয়।
কখনো কি ভেবেছেন সারাদিন আপনি কতবার হাতের ব্যবহার করেন? এটা হয়তো তেমনভাবে গুণনা করা হয় না। কিছু রোগ রয়েছে যেগুলো হাতের গতিশীলতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। যেমন আরথ্রাইটিস, ডিজেনারেটিভ জয়েন্ট ডিজিজ ইত্যাদি। হাতের জড়তা কাটাতে নিয়মিত ব্যায়াম করা প্রয়োজন।
হাতের জড়তা কাটানোর কিছু ব্যায়ামের কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট বোল্ডস্কাই।
ফিস্ট
ফিস্ট হাত ও আঙুলের জন্য একটি ভালো ব্যায়াম। এই সহজ ব্যায়ামটি আপনি যেকোনো সময়, যেকোনো জায়গায় বসে করতে পারেন। আপনার বাম হাতকে নিন। হাতকে একবার মুঠো করুন, আবার ছাড়ুন। ১০ বার এভাবে করুন। এভাবে ডান হাতেও পদ্ধতিটি অনুসরণ করুন।
ফিঙ্গার লিফট
এই ব্যায়ামটি আঙুলের নমনীয়তা ও গতিশীলতা বাড়াবে। একটি সমতল টেবিলে ডান হাত রাখুন। এবার বুড়ো আঙুলকে উঁচু করুন। এভাবে পাঁচ সেকেন্ড থাকুন। এরপর আঙুলকে নিচে নামান।
এভাবে প্রতিটি আঙুলে এই পদ্ধতি অনুসরণ করুন। আবার বাম হাতে এই পদ্ধতি অনুসরণ করুন। প্রতি হাতে ১০ থেকে ১২ বার করুন।
এই গেলো আপনার হাত কি করে গতিশীল করবেন। এবার বলবো হাতের আঙ্গুলকে ম্যাসাজের মাধ্যমে ওষুধকে বর্জন করতে পারেন। শারীরিক সমস্যার সমাধানে অনেকেই ওষুধ খাওয়ার বদলে খোঁজেন চিকিৎসার বিকল্প পদ্ধতি। সেরকমই একটি বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতি হলো রিফ্লেক্সোলজি বা অ্যাকুপ্রেসার। এই পদ্ধতি অনুসারে শরীরের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রেসার পয়েন্টকে চিহ্নিত করা হয়।
মনে করা হয়, এক একটি প্রেসার পয়েন্টের সঙ্গে জড়িত রয়েছে শরীরের আভ্যন্তরীণ নানা গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এবং এই প্রেসার পয়েন্টগুলিকে স্পর্শ বা ম্যাসাজের মাধ্যমে ওই জড়িত অঙ্গগুলির নানা রোগ সারিয়ে তোলা সম্ভব।
আসুন, জেনে নেওয়া যাক, হাতের পাঁচটি আঙুলের প্রেসার পয়েন্টগুলিকে ম্যাসাজের মাধ্যমে কীভাবে এবং কী ধরনের রোগ সারিয়ে তোলা সম্ভব।
প্রথমেই জেনে নিন কী করতে হবে -
দু’টি হাতের যে কোনও একটি হাতকে নির্বাচন করুন। সেই হাতের আঙুলগুলো মেলে ধরুন। এবার অন্য হাতের আঙুলগুলি দিয়ে এই হাতের এক একটি আঙুলের উপরে মুঠো করে চেপে ধরুন। খুব জোরে চেপে ধরবেন না। মৃদু চাপ বজায় রাখবেন।
তারপর মুঠো করা হাতটি দিয়ে আঙুলগুলোর উপর থেকে নীচের দিকে আস্তে আস্তে ম্যাসাজ করতে থাকুন। মিনিট খানেক ম্যাসাজ করুন প্রত্যেটি আঙুলকে। দিনে যতবার খুশি এইভাবে ম্যাসাজ করতে পারেন। তবে দিনে অন্তত দু’বার এইভাবে ম্যাসাজ অবশ্যই করবেন।
এবার জেনে নিন, কোন আঙুল ম্যাসাজে কী ধরনের শারীরিক উপকার পাবেন?
বুড়ো আঙুল
বুড়ো আঙুলের সঙ্গে যোগ রয়েছে ফুসফুস ও হৃদযন্ত্রের। বুড়ো আঙুলে ম্যাসাজ, ও বুড়ো আঙুল ধরে মৃদু টান হৃদস্পন্দন ও শ্বাসপ্রশ্বাসের বেগ হ্রাস করে। যারা উদ্বেগে ভোগেন তাঁরা বুড়ো আঙুল ম্যাসাজের মাধ্যমে উপকার পাবেন।
তর্জনী বা প্রথম আঙুল
তর্জনীর সঙ্গে যোগ রয়েছে অন্ত্র ও মলাশয়ের। যারা পেটের গোলমাল ও কোষ্ঠকাঠিন্যে কষ্ট পাচ্ছেন তাঁরা তর্জনী ম্যাসাজ করলে উপকার পাবেন।
মধ্যমা বা দ্বিতীয় আঙুল
যখনই ক্লান্তি, ঘুম ঘুম ভাব কিংবা বমি ভাবের কারণে অস্বস্তি বোধ করছেন তখনই মাঝের আঙুলটি ধরে আস্তে আস্তে সামনের দিকে টানতে থাকুন। মিনিট খানেকের মধ্যেই উপকার পাবেন।
অনামিকা বা চতুর্থ আঙুল
এই আঙুলের সঙ্গে যোগ রয়েছে আমাদের মন ও মেজাজের। যাঁরা অবসাদে বা মন খারাপের কারণে কষ্ট পাচ্ছেন তাঁরা যদি মিনিট খানেক অনামিকায় ম্যাসাজ করেন তাহলে উপকার পাবেন। মনে শান্তি ফিরে আসবে।
কড়ে আঙুল
এই আঙুলের সঙ্গে ঘাড় ও মাথার যোগ রয়েছে। এই আঙুলের মিনিট খানেক ম্যাসাজ আপনাকে ঘাড় ও মাথা ব্যথা থেকে মুক্তি দেবে।