হাওলাদার জহিরুল ইসলাম: জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের সভাপতি মাওলানা সাইয়িদ আরশাদ মাদানি বলেছেন, ‘ধর্মের নামে কোনো ধরনের উগ্রবাদ মেনে নেয়া যায় না। ধর্ম তো মানবতা, ভ্রাতৃত্ব, ভালোবাসা ও পারস্পরিক ঐক্যের শিক্ষা দেয়। সুতরাং যারা ধর্মের নামে ঘৃণা ও কট্টরপন্থা ছড়ায় তারা ধর্মের প্রকৃত শিক্ষা থেকে দূরে সরে আছে। তারা নিজ ধর্মকে বুঝতে পারে নি। আমাদের উচিত সর্বস্থানে এমন লোকদের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো।’
‘আমাদের উচিত ধর্মের উপরে উঠে শুধু মানবতার ভিত্তিতে পৃথিবীব্যাপী অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো। এটাই হবে মানবাতার শান্তির পয়গাম।’
‘দেশের নেতাগণ কেবল সুন্দর সুন্দর বক্তৃতা করেন কিন্তু তারা নিজেদের কথা অনুযায়ী পরে আর কোনো কাজ করেন না। বর্তমান বিশ্বের অধিকাংশ দেশ নিরাপত্তাহীনতা, বিশৃঙ্খলা ও কট্টরবাদিতার শিকার। কোথাও বংশীয় সাম্প্রদায়িকতা, কোথাও ভাষাগত বিভাজন। আবার কোথাও ধর্মের নামে বিভাজন ও সাম্প্রদায়িকাত সৃষ্টি করা হচ্ছে।
এসবের পেছনে বড় একটি কারণ হলো ক্ষমতার দ্বন্দ্ব ও লোভ। জনগণকে ক্ষমতা লাভের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সারা দুনিয়ার একই অবস্থা। ক্ষমতার মোহে সাধারণ মানুষের জীবনকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেয়া হচ্ছে।
কিন্তু বাস্তবতা হলো, ভয় ভীতি দেখিয়ে কিংবা অত্যাচার করে রাজত্ব করা যায় না। বরং মানবতা, ন্যায়পরায়ণতা ও ভালোবাসা দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে হয়।’
অস্ট্রিয়ার রাজধানীতে আন্তর্জাতিক আন্তধর্মীয় কনফারেন্স থেকে ফিরে বিভিন্ন চ্যানেলের সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে উপরোক্ত কথা বলেন, ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দের সিনিয়র মুহাদ্দিস ও জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের সভাপতি মাওলানা সাইয়িদ আরশাদ মাদানি।
সিরিয়া প্রসঙ্গে মাওলানা মাদানি বলেন, বর্তমানে সিরিয়ায় যা চলছে তা কোনভাবেই এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। ক্ষমতার লোভের লড়াইয়ের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হচ্ছে নিরপরাধ সাধারণ মুসলমান! আর পুরো বিশ্ব নিরবভাবে তামাশা দেখে চলছে।
সিরিয়া বিষয়ে এখনো পর্যন্ত জাতিসংঘের ভূমিকা খুবই দুখজনক। জাতিসংঘ যদি শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ না করতে পারে তাহলে তার গঠন নিয়ে প্রশ্ন তোলা যায়।
সিরিয়া বিষয়ে বিশ্বনেতাদের বিশেষত মুসলিমদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে এগিয়ে আসতে হবে। সিরিয়ায় যেভাবে মানবতা ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে এখনই তা বন্ধে উদ্যোগ না নিলে বিশ্ববাসীকে চরম মূল্য দিতে হবে।
সূত্র: মিল্লাত টাইমস
সিরিয়া নিয়ে জর্ডান বাদশাহর কাছে দিল্লির খতিবের প্রশ্ন