সাখাওয়াত উল্লাহ : আমাদের সবার জীবনের কোন না কোন সময় একটি কঠিন মুহূর্তের মধ্য দিয়ে পার হতে হয়। এই সময়ে আমাদের কিছু কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয় যা ভবিষ্যৎকে প্রভাবিত করে।
স্বাভাবিকভাবেই আমরা এরকম সময়ে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পরি এবং এই পরিস্থিতি থেকে বের হওয়ার জন্য বিভিন্ন উপায় খুঁজতে থাকি। কেউ কেউ ধৈর্য ধরে থাকে, অন্যদিকে কেউ অন্যান্য মাধ্যমে এই পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার চেষ্টা করে।
মনে রাখতে হবে, আমাদের পরীক্ষা করার জন্য আল্লাহ নিজেই এই কঠিন সময় দিয়ে থাকেন। এসময়ে আমাদের আতঙ্কগ্রস্ত হলে চলবে না। বরং আমাদের তিনটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে -
১. তাকওয়া অবলম্বন করতে হবে : যেকোনো সমস্যার জটিলতা একেক মানুষের জন্য একেক রকম হলেও এর থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার পদ্ধতি একটাই- আল্লাহর ওপর তাকওয়া অবলম্বন করা।
আমাদেরকে আল্লাহর নির্দেশিত পথে চলতে হবে এবং নিষিদ্ধ সবকিছু থেকেই নিজেদের রক্ষা করতে হবে।
কুরআনে আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, হে সাক্ষীরা, আল্লাহর জন্য সঠিকভাবে সাক্ষ দাও। যারা আল্লাহ ও আখেরাতের দিনের প্রতি ঈমান পোষণ করে তাদের জন্য উপদেশ হিসেবে এসব কথা বলা। যে ব্যক্তিই আল্লাহকে ভয় করে চলবে আল্লাহ তার জন্য কঠিন অবস্থা থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় সৃষ্টি করে দেবেন। (৬৫:২)
এছাড়াও কুরআনে আল্লাহপাক আরো ইরশাদ করেছেন, ‘ যদি জনপদের লোকেরা ঈমান আনতো এবং তাকওয়ার নীতি অবলম্বন করতো, তাহলে আমি তাদের জন্য আকাশ ও পৃথিবীর রবকতসমূহের দুয়ার খুলে দিতাম। কিন্তু তারা তো প্রত্যাখ্যান করেছে৷ কাজেই তারা যে অসৎকাজ করে যাচ্ছিলো তার জন্যে আমি তাদের পাকড়াও করেছি।’ (৭:৯৬)
২. ইস্তিগফার করা : নিজেদের কর্মের দিকে তাকিয়ে বুঝতে হবে যে আমাদের কর্মের কারণেই আমরা এই কঠিন সময় পার করছি, এবং এজন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।
মনে রাখতে হবে, আল্লাহ নিজের বান্দাদের সঠিক পথে আনার জন্যই এরকম কঠিন পরিস্থিতি তৈরি করে থাকেন।
কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি বলেছি তোমরা নিজেদের প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা চাও ৷ নিঃসন্দেহে তিনি অতিশয় ক্ষমাশীল। তিনি আকাশ থেকে তোমাদের ওপর প্রচুর বৃষ্টি বর্ষাবেন। সম্পদ ও সন্তান-সন্তুষ্টি দিয়ে সাহায্য করবেন, তোমাদের জন্য বাগান সৃষ্টি করবেন আর নদী-নালা প্রবাহিত করে দিবেন।’ (৭১:১০-১২)
এছাড়া কুরআনে আল্লাহপাক আরো ইরশাদ করেছেন, ‘আর হে আমার কওমের লোকেরা! মাফ চাও তোমাদের রবের কাছে তারপর তাঁর দিকেই ফিরে এসো। তিনি তোমাদের জন্য আকাশের মুখ খুলে দেবেন এবং তোমাদের বর্তমান শক্তির ওপর আরো শক্তি বৃদ্ধি করবেন। অপরাধীদের মতো মুখ ফিরিয়ে নিয়ো না।’ (১১:৫২)
৩. নিজের গুনাহগুলো বুঝতে হবে এবং এগুলো এড়িয়ে চলতে হবে : এজন্য আমরা একজন উলামার কাছে হালাল এবং হারাম সম্পর্কে জানার চেষ্টা করতে পারি।
আমাদের মনে রাখতে হবে, আল্লাহ এবং নবী সা. এর কথার খিলাফ হয়ে যেকোনো কাজ করলে সেই কাজে কোন বরকত থাকে না, এবং সেই কাজে যতই লাভ থাকুক না কেন, ধীরে ধীরে এই লাভ ক্ষতিতে পরিণত হবে।
নবী সা. বলেছেন, ‘চলে যাওয়ার আগ পর্যন্ত যেকোনো ক্রেতা অথবা বিক্রেতাদের নিজের সামগ্রী কেনা অথবা বেচার অধিকার রয়েছে।
তবে তারা যদি এই সামগ্রী সম্পর্কে একে অপরকে সত্য কথা বলে থাকে তাহলে দুজনের এই লেনদেনে আল্লাহ বরকত দান করবেন, আর যদি সত্য কথা না বলা হয় তাহলে এই লেনদেনে লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশী হবে।’ বুখারি
সূত্র : মুসলিম ভিলেজ ডটকম